পাতা:রাজা রামমোহন - দেবেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য্য.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম পরিচ্ছেদ 8S আঁর্তাহার পরম আদর অভ্যর্থনা করিয়া একত্রে আহার করিলেন। এ মহা সন্মান অদ্যাবধি আর কোন বাঙ্গালীর ভাগ্যে ঘটে নাই। এইখানে ফরাসী মহাকবি টমাস মুরে'র সঙ্গে তঁহার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হইল। কবিবর আপনার ডায়েরীতে রাজা রামমোহনের অশেষ পাণ্ডিত্য, শক্তি, প্ৰতিভা এবং গুণগ্রামের বিষয় লিখিলেন। সেখান হইতে আবার বিলাতে ফিরিয়া আসিয়া রাজা হেয়ার সাহেবের বাড়ীতে রহিলেন । সেই সময়ে বিলাতের খৃষ্টীয় ধৰ্ম্ম-সমাজে একটা ভ্ৰান্ত সংস্কার ছিল যে, মানুষ মাত্রেই পাপ লইয়া জন্মগ্রহণ করে। রাজা তঁহার অদ্ভুত প্ৰতিভার বলে, বিদেশী ধৰ্ম্ম-সমাজের সেই মত খণ্ডন করিয়া দিলেন, তাহাতে বিখ্যাত বিখ্যাত পাদরীগণ র্তাহার একান্ত অনুরক্ত হইয়া পড়িলেন। তঁহাদের মধ্যে "রেভারেণ্ড ডেভিডসনে’র সঙ্গে রাজার এমন বন্ধুত্ব হইল, পাদরী সাহেব তঁাহাকে এমন ভক্তি ও শ্রদ্ধার চক্ষে দেখিলেন, যে তঁহার পুত্রের নামকরণ”-উৎসবের সময়ে রাজাকে নিমন্ত্ৰণ করিলেন এবং সর্বসমক্ষে আপন পুত্রের নাম রাখিলেন-“রামমোহন’ । বিলাতে থাকিবার কালে বিস্তর সন্ত্রান্ত ধনী বংশের সহিত রাজার প্রগাঢ় বন্ধুত্ব হইয়াছিল। ব্রিষ্টলের ‘ক্যাসেল” বংশের সহিতও র্তাহার সেইরূপ বন্ধুত্ব হয় । ‘ক্যাসেল” মস্ত ধনী সদাগর ছিলেন--তিনি বিস্তর ধন-সম্পত্তি, অট্টালিকা এবং কুমারী কন্যা রাখিয়া মারা গেলেন। কুমারী ক্যাসেলের এবং ডাক্তার কার্পেণ্টারের অনুরোধে কিছুদিনের জন্য বিশ্রাম লাভের কারণে তিনি ব্রিষ্টলে-কুমারী ক্যাসেলের বাড়ীতে গিয়া রহিলেন । “ব্ৰিষ্টল’ লণ্ডনের প্রাস্তবত্তী মনোহর পল্লীগ্রাম-সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য বড়ই সুন্দর। রাজা রামমোহন সেখানে গিয়া যেন নবজীবন লাভ করিলেন । সেখানেও তঁহার বিস্তর বন্ধু মিলিল ।