পাতা:রাজা সাহেব (১ম অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজা সাহেব।

পালনে পরাঙ্মুখ না হইলেও, সেই সংক্রামক রোগ তাঁহাকে পরিত্যাগ করিতে পারে নাই।

 পাঠকগণ! এই সংক্রামক রোগ যে কি, তাহা বুঝিতে পারিয়াছেন কি? ইহা আয়ুর্বেদান্তর্গত কোন প্রকার রোগ নহে, এ রোগের নাম “ঋণ” রোগ। আজ তাঁহার রাজত্বের ভিতর লাটসাহেবের শুভাগমন হইয়াছে, তাহাকে সম্মানিত করিবার নিমিত্ত-তাহার অনুচরবর্গের সেবার নিমিত্ত দশ সহস্র মুদ্রার আবশ্যক; রাজকোষে অর্থ নাই, কাজেই ঋণ করিতে হইবে। আজ গবর্ণমেণ্ট রাজার উপর সন্তুষ্ট হইয়া তাহাকে মহারাজা উপাধি প্রদান করিয়াছেন। সুতরাং কিছু অর্থের প্রয়োজন—একটী দরবারের আবশ্যক। কিন্তু রাজকোষ শূন্য, কাজেই ঋণের আবশ্যক। এইরূপ নানাকারণে আজকাল রাজা ও জমীদারগণের যেরূপ দুর্দশা ঘটিয়া আসিতেছে, বর্তমান মহারাজেরও আজ সেই দুর্দশা। তিনি সেই সংক্রামক রোগের ভয়ানক যন্ত্রণায় অস্থির হইয়া নিতান্ত কষ্টভোগ করিতেছেন।

 সমস্ত দিবস রাজকার্য পর্য্যালোচনা করিয়া, একদিবস সন্ধ্যার পর তাহার প্রধান মন্ত্রীর সহিত নির্জনে বসিয়া মহারাজ বৈষয়িক গুপ্ত পরামর্শে নিযুক্ত হইলেন। তাহারা যে যে বিষয় সম্বন্ধে পরামর্শ করিলেন, তাহার সমস্ত কথার উল্লেখ করা এই পুস্তকের উদ্দেশ্য নহে। এই নিমিত্ত সে সমস্ত বিষয় পরিত্যাগ করিয়া, কেবলমাত্র যে সূত্র অবলম্বনে একটা ভয়ানক জুয়াচুরির দ্বার উদঘাটিত হইয়াছিল, তাহারই দুই চারিটা কথা এইস্থানে বর্ণিত হইল মাত্র।