৪০
দারোগার দপ্তর, ৮১ম সংখ্যা।
আমার জুতা সহিত রামজীলালের বক্ষে সবলে এক পদাঘাত করিলাম। আমার লাথি খাইয়া হতভাগ্য রামজীলাল চতুর্দ্দিক অন্ধকার দেখিল, এবং সেই স্থানেই পড়িয়া গেল। পড়িবামাত্রই আমি দ্রুতগতি তাহার বুকের উপর উঠিয়া বল-পূর্ব্বক তাহাকে ধরিলাম।
“আমি তখন কি করিলাম? আপনারা যাহা কখনও স্বপ্নেও ভাবেন নাই, আজ আমি তাহাই করিলাম। কেবলমাত্র একজন স্ত্রীলোকের সাহায্যে যে কার্য্য কখনও হইতে পারে বলিয়া আপনারা একবারও মনে স্থান দেন নাই, আজ আমি তাহাই করিলাম। দস্যু বা তস্করেরাও যে কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিতে মনে মনে ঘৃণা বোধ করে, আজ আমি তাহাই করিলাম। রাক্ষস বা পিশাচগণও যে কার্য্যের কথা শুনিলে আপনাপন কর্ণে অঙ্গুলি প্রদান করে, আমি আজ তাহাই করিলাম। উঃ! যে কথা বলিতে এখন আমার কণ্ঠরোধ হইয়া আসিতেছে, যে কথা বলিতে এখন আমার হৃদয় বিদীর্ণ হইয়া যাইতেছে, যে কথা বলিতে কোনরূপেই এখন আমি আমার চক্ষুজল সম্বরণ করিতে পারিতেছি না, সেই সময় আমি তাহাই কার্য্যে পরিণত করিয়াছিলাম। যে মহাপাপের আদি নাই, অন্ত নাই, যে মহাপাপের কথা শুনিলেও মহাপাপ জন্মে আমি সেই সময় সেই মহাপাপে লিপ্ত হইতে কোনরূপেই পরাঙ্মুখ হইলাম না। বিনা-কারণে ও বিনা-দোষে সেই নিরীহ, নিঃসহায় ব্যক্তির উপর সবলে পা দিয়া দাঁড়াইলাম, যে পর্য্যন্ত তাহার প্রাণবায়ু একবারে শেষ না হইয়া গেল, সেই পর্য্যন্ত আর পা উঠাইলাম না। ত্রৈলোক্যও বল-পূর্ব্বক তাঁহার পা দুইখানি চাপিয়া ধরিয়া আমার এই মহাপাপের