পাতা:রাধারাণী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ খণ্ড : সপ্তম পরিচ্ছেদ পরিপূর্ণ হইতেছে। কিন্তু বাহাই দেখি নী—সকলের মধ্যস্থলে—রজনীর সেই প্রস্তরময়ী মূৰ্ত্তি দেখিতে পাইতাম। হায় রজনি। পাথরে এত আগুন । 。 機 ধীরে, রজনি, ধীরে ধীরে, ধীরে, রজনি, ঐ অন্ধ ময়ন উন্মীলিত কর। দেখ, আমায় দেখ, আমি তোমায় দেখি। ঐ দেখিতেছি—তোমার নয়নপদ্ম ক্রমে প্রফুটিত হইতেছে— ক্রমে, ক্রমে, ক্রমে, ধীরে, ধীরে, ধীরে, ধীরে, নয়নরাজীব ফুটিতেছে । এ সংসারে কাহার না নয়ন আছে ? গো, মেষ, কুকুর, মার্জায়, ইহাদিগেরও নয়ন আছে—তোমার নাই ? নাই, নাই, তবে আমারও নাই ! আমিও আর চক্ষু চাহিব না। ’ সপ্তম পরিচ্ছেদ লবঙ্গলতার কথা আমি জানিতাম, শচীন্দ্র একটা কাণ্ড করিবে—ছেলে বয়সে অত ভাবিতে আছে ? দিদি ত একবার ফিরে চেয়েও দেখেন না—আমি বলিলে বিমাতা বলিয়া আমার কথা গ্রান্থ করে না । ও সব ছেলেকে আঁটিয়া উঠা ভার । এখন দায় দেখিতেছি আমার । ডাক্তার বৈদ্য কিছু করিতে পারিল না—পরিবেও না। তারা রোগই নির্ণয় করিতে জানে না। রোগ হলো মনে—হাত দেখিলে, চোখ দেখিলে, জিব দেখিলে তারা কি বুঝিবে ? যদি তারা আমার মত আড়ালে লুকাইয়া বসিয়া আড়ি পেতে ছেলের কাও দেখত, তবে একদিন রোগের ঠিকানা করিলে করিতে পারিত । কথাটা কি ? “ধীরে, রজনি !” ছেলে ত কেলা থাকিলেই এই কথাই বলে। সন্ন্যাসী ঠাকুরের ঔষধে কি এই ফল ফলিল ? আমার মাথা খাইতে কেন আমি এমন কাজ করিলাম ? ভাল, রজনীকে একবার রোগীর কাছে বসাইয়া রাখিলে হয় না ? কই, আমি রজনীর বাড়ী গিয়াছিলাম, সে ত সেই অবধি আমার বাড়ী একবারও আসে নাই ! ডাকিয়৷ পাঠাইলে না আসিয়া থাকিতে পরিবে না। এই ভাবিয়া আমি রজনীর গৃহে লোক পাঠাইলাম—বলিয়া পাঠাইলাম যে, আমার বিশেষ প্রয়োজন আছে, একবার আসিতে বলিও । - • মনে করিলাম, আগে একবার শচীত্রের কাছে রজনীর কথা পাড়িয়া দেখি । তাহা হইলে বুঝিতে পারিব, রজনীর সঙ্গে শচীন্দ্রের পীড়ার কোন সম্বন্ধ আছে কি না ? :