-> রাধারাণী ५ चककत्र-१५ কর্দমময়, পিচ্ছিল—কিছুই দেখা যায় না । তাহাতে মুসলধারে o শ্রাবণের ধারা বধিতেছিল। মাতার অন্নাভাব মনে করিয়া তদপেক্ষাও রাধারাণীর চক্ষুঃ বারি বর্ষণ করিতেছিল। রাধারাণী কাদিতে কঁাদিতে আছাড় খাইতেছিল—কাদিতে কঁাদিতে উঠিতেছিল। আবার কাদিতে কঁাদিতে আছাড় খাইতেছিল। দুই গণ্ডবিলম্বী ঘন কৃষ্ণ অলকাবলী বহিয়া, কবরী বহিয়া, বৃষ্টির জল পড়িয়া ভাসিয়া যাইতেছিল। তথাপি রাধারাণী সেই এক পয়সার বনফুলের মালা বুকে করিয়া রাখিয়াছিল—ফেলে নাই। এমত সময় অন্ধকারে, অকস্মাৎ কে আসিয়া রাধারাণীর ঘাড়ের উপর 'পড়িল । রাধারাণী এতক্ষশ্ব উচ্চৈঃস্বরে ডাকিয়া কাদে নাই—এক্ষণে উচ্চৈঃস্বরে কাদিল । যে ঘাড়ের উপর আসিয়া পড়িয়াছিল, সে বলিল, “কে গা তুমি কঁাদ ?” পুরুষ মানুষের গলা—কিন্তু কণ্ঠস্বর শুনিয়া রাধারাণীর রোদন বন্ধ হইল। রাধারাণীর চেনা লোক নহে–কিন্তু বড় দয়ালু লোকের কথা—রাধারাণীর ক্ষুদ্র বুদ্ধিটুকুতে ইহা বুঝিতে পারিল । রাধারাণী রোদন বন্ধ করিয়া বলিল, “আমি দুঃখিলোকের মেয়ে । আমার কেহ
- নাই—কেবল মা আছে।”
সে পুরুষ বলিল, “তুমি কোথা গিয়াছিলে ?” - রাধা । আমি রথ দেখিতে গিয়াছিলাম। বাড়ী যাইব । অন্ধকারে, বৃষ্টিতে পথ পাইতেছি না। • পুরুষ বলিল, “তোমার বাড়ী কোথায় ?” রাধারাণী বলিল, “শ্রীরামপুর ” * সে ব্যক্তি বলিল, “আমার সঙ্গে আইস—আমিও খ্রীরামপুর যাইব । চল, কোন পাড়ায় তোমার বাড়ী—তাহ আমাকে বলিয়া দিও—আমি তোমাকে বাড়ী রাখিয়া আসিতেছি। বড় পিছল, তুমি আমার হাত ধর, নহিলে পড়িয়া যাইবে ।” এইরূপে সে ব্যক্তি রাধারাণীকে লইয়া চলিল। অন্ধকারে সে রাধারাণীর বয়স অনুমান করিতে পারে নাই, কিন্তু কথার স্বরে বুঝিয়াছিল যে, রাধারাণী বড় বালিকা । এখন রাধারাণী তাহার হাত ধরায় হস্তস্পর্শে জানিল, রাধারাণী বড় বালিকা। তখন সে জিজ্ঞাসা করিল যে, “তোমার বয়স কত ?” রাধা । দশ এগার বছর— “তোমার নাম কি ?” রাধ। রাধারাণী । ●