পঞ্চম খণ্ড : তৃতীয় পরিচ্ছেদ երգ: করিবেন,—আমি বিচারের কে ? এখন সে অস্থতাপ আমার-কিন্তু সে সকল কথা না বলাই ভাল। তুমি আমার সে অপরাধ ক্ষমা করিবে ।" . . আমি। তুমি না বলিতেই আমি ক্ষমা করিয়াছি। ক্ষমাই বা কি ? উচিত দণ্ড , করিয়াছিলে-তোমার অপরাধ নাই। আমি আর জাসিব না-জার কখন তোমার সঙ্গে । সাক্ষাৎ হইবে না। কিন্তু যদি তুমি কখন ইহার পরে শোন যে, অমরনাথ কুচরিত্র মন্থে, ভৰে । তুমি আমার প্রতি একটু—অণুমাত্ৰ—স্নেহ করিবে ? : ল। তোমাকে স্নেহ করিলে আমি ধৰ্ম্মে পতিত হইব । -- * আমি না আমি লেমেহের ভিনার আর নাই। তোমার এই সমুদ্রতুল হয়ে কি আমার জন্য এতটুকু স্থান নাই ? ল। না—যে আমার স্বামী না হইয়া একবার আমার প্রণয়াকাঙ্ক্ষী হইয়াছিল, তিনি স্বয়ং মহাদেব হইলেও তাহার জন্ত আমার হৃদয়ে এতটুকু স্থান নাই। লোকে পাখী পুষিলে যে স্নেহ করে, ইহলোকে তোমার প্রতি আমার সে স্নেহও কখন হইবে না। আবার “ইহলোকে।” যাক—আমি লবঙ্গের কথা বুঝিলাম কি না, বলিতে পারি না ; কিন্তু লবঙ্গ আমার কথা বুঝিল না। কিন্তু দেখিলাম, লবঙ্গ ঈষৎ কঁদিতেছে। আমি বলিলাম, “আমার যাহা বলিবার অবশিষ্ট আছে, তাহ বলিয়া যাই । আমার কিছু ভূসম্পত্তি আছে, আমার তাহাতে প্রয়োজন নাই। তাহা আমি দান করিয়া যাইতেছি ।” ল। কাহাকে ? আমি । যে রজনীকে বিবাহ করিবে, তাহাকে। ল। তোমার সমুদায় স্থাবর সম্পত্তি ? # আমি। হঁ। তুমি এই দানপত্র এক্ষণে তোমার কাছে অতি গোপনে রাখিবে। যতদিন না রজনীর বিবাহ হয়, ততদিন ইহার কথা প্রকাশ করিও না। বিবাহ হইয়া গেলে, রজনীর স্বামীকে দানপত্র দিও। এই কথা বলিয়া, ললিতলবঙ্গলতার উত্তরের অপেক্ষা না করিয়া, দানপত্র আমি তাহার নিকট ফেলিয়া দিয়া চলিয়া গেলাম। আমি সকল বন্দোবস্ত ঠিক করিয়া আসিয়াছিলাম— আমি আর বাড়ী গেলাম না। একবারে ষ্টেসনে গিয়া বাষ্পীয় শকটারোহণে কাশ্মীর যাত্রা করিলাম । দোকানপাঠ উঠিল ।
পাতা:রাধারাণী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।