পাতা:রাধারাণী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম পরিচ্ছেদ ३* আমাকে আবৃত করিয়া লজ্জার আবরণ কাড়িয়া লও। তোমার কৃপায় যেন আমি এক দণ্ডের জন্য মুখর হই ।” সপ্তম পরিচ্ছেদ ভগবান বুঝি, সে কথাও শুনিলেন। বিশুদ্ধচিত্তে যাহা বলিবে, তাহাই বুঝি তিনি শুনেন। রাধারাণী মৃদু হাসি হাসিতে হাসিতে, গজেন্দ্রগমনে রুক্মিণীকুমারের নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন । , রুক্মিণীকুমার তখন বলিলেন, “আপনি আমাকে বিদায় দিয়াও যান নাই, আমি যে কথা জানিবার জন্য আসিয়াছি, তাহাও জানিতে পারি নাই । তাই এখনও যাই নাই।” রাধা। আপনি রাধারণীর জন্য আসিয়াছেন, তাহ আমারও মনে আছে। এ বাড়ীতে একজন রাধারাণী আছে, সত্য বটে। সে আপনার নিকট পরিচিত হইবে কি না, সেই কথাটা ঠিক করিতে গিয়াছিলাম । রু । তার পর ? রাধারাণী তখন অল্প একটু হাসিয়া, একবার আপনার পার দিকে চাহিয়া, আপনার হাতের অলঙ্কার খুটিয়া, সেই ঘরে বসান একটা প্রস্তরনিৰ্ম্মিত Niobe প্রতিকৃতি পানে চাহিয়া রুক্মিণীকুমারের পানে না চাহিয়া, বলিল—“আপনি বলিয়াছেন, রুক্মিণীকুমার আপনার যথার্থ নাম নহে। রাধারাণীর যে আরাধ্য দেবতা, তাহার নাম পৰ্য্যন্ত এখনও সে শুনিতে পায় নাই ।” রুক্মিণীকুমার বলিলেন, “আরাধ্য দেবতা ! কে বলিল ?” রাধারাণী কথাটা অনবধানে বলিয়। ফেলিয়াছিলেন, এখন সামলাইতে গিয়া বলিয়া ফেলিলেন, “নাম ঐরূপে জিজ্ঞাসা করিতে হয়।” কি বোকা মেয়ে । রুক্মিণীকুমার বলিলেন, “আমার নাম দেবেন্দ্রনারায়ণ রায় ।” রাধারাণী গুপ্তভাবে দুই হাত যুক্ত করিয়া মনে মনে ডাকিল, “জয় জগদীশ্বর। তোমার কৃপা অনন্ত ” প্রকাশ্বে বলিল, “রাজ দেবেন্দ্রনারায়ণের নাম শুনিয়াছি।” • দেবেন্দ্রনারায়ণ বলিলেন, “অমন সকলেই রাজা কলায়। আমাকে যে কুমার বলে, সে যথেষ্ট সম্মান করে।”