পাতা:রাধারাণী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম খণ্ড : সপ্তম পরিচ্ছেদ బీ হীরালাল বলিল, “ত মন্দ নয়।” আমি । তোমার হাতে কিসের লাঠি ? হীরা। তালের । অামি । ভাঙ্গিতে পার ? হীরা। সাধ্য কি ? অামি । আমার হাতে দাও দেখি । হীরালাল আমার হাতে লাঠি দিল। আমি তাহা ভাঙ্গিয়া দ্বিখণ্ড করিলাম। হীরালাল আমার বল দেখিয়া বিস্মিত হইল। আমি আধখানা তাহাকে দিয়া, আধখানা আপনি রাখিলাম। তাহার লাঠি ভাঙ্গিয়া দিলাম দেখিয়া হীরালাল রাগ করিল। আমি বলিলাম—“আমি এখন নিশ্চিস্ত হইলাম—রাগ করিও না । তুমি আমার বল দেখিলে— আমার হাতে এই আধখানা লাঠি দেখিলে—তোমার ইচ্ছা থাকিলেও তুমি আমার উপর কোন অত্যাচার করিতে সাহস করিবে না ।” হীরালাল চুপ করিয়া রহিল। সপ্তম পরিচ্ছেদ হীরালাল, জগন্নাথের ঘাটে গিয়া নৌকা করিল। রাত্রিকালে দক্ষিণ বাতাসে পাল দিল । সে বলিল, তাহাদের পিত্ৰালয় হুগলী । আমি তাহ জিজ্ঞাসা করিতে ভুলিয়৷ গিয়াছিলাম । পথে হীরালাল বলিল, “গোপালের সঙ্গে তোমার বিবাহ ত হইবে না—আমায় বিবাহ কর ।” আমি বলিলাম, “না।” হীরালাল বিচার আরম্ভ করিল। তাহার যত্ন যে, বিচারের দ্বারা প্রতিপন্ন করে যে, তাহার স্থায় সৎপাত্র পৃথিবীতে দুর্লভ ; আমার স্যায় কুপাত্রীও পৃথিবীতে দুর্লভ। আমি উভয়ই স্বীকার করিলাম—তথাপি বলিলাম যে, “না, তোমাকে বিবাহ করিব না ।” তখন হীরালাল বড় ক্রুদ্ধ হইল। বলিল, “কাণাকে কে বিবাহ করিতে চাহে।” এই বলিয়া নীরব হইল। উভয়ে নীরবে রছিলাম—এইরূপে রাত্রি কাটিতে লাগিল।

  • তাহার পরে, শেষ রাত্রে, হীরালাল অকস্মাৎ মাঝিদিগকে বলিল, “এইখানে ভিড়ে।” মাঝিরা নৌকা লাগাইল—নৌকাতলে ভূমি স্পর্শের শব্দ শুনিলাম। হীরালাল