পাতা:রাধারাণী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় খণ্ড ১ সপ্তম পরিচ্ছেদ 8X আমি বলিলাম, “আমি যাহার হাত হইতে তোমাকে মুক্ত করিয়াছিলাম, সে কি সেই ?” “সে সেই ।” আমি রজনীকে কলিকাতায় আনিয়া, তাহার কথিত স্থানে অন্বেষণ করিয়া, রাজচন্দ্র দাসের বাড়ী পাইলাম । সেইখানে রজনীকে লইয়া গেলাম । , রাজচন্দ্র কন্যা পাইয়। বিশেষ আনন্দ প্রকাশ করিল। তাহার স্ত্রী অনেক রোদন করিল। উহারা আমার কাছে রজনীর বৃত্তান্ত সবিশেষ শুনিয়া বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিল। পরে রাজচন্দ্রকে আমি নিভৃতে লইয়া গিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “তোমার কন্যা গৃহত্যাগ করিয়া গিয়াছিল কেন জান ?” রাজচন্দ্র বলিল, “না। আমি তাহ সৰ্ব্বদাই ভাবি, কিন্তু কিছুই ঠিকানা করিতে পারি নাই ।” আমি বলিলাম, রজনী জলে ডুবিয়া মরিচ্ছে গিয়াছিল কি ছুঃখে জান ? রাজচন্দ্র বিস্মিত হইল। বলিল, “রজনীর এমন কি দুঃখ, কিছুই ত ভাবিয়া পাই না। সে অন্ধ, এটি বড় দুঃখ বটে, কিন্তু তার জন্য এত দিনের পর ডুবিয়া মরিতে যাইবে কেন ? তবে, এত বড় মেয়ে, আজিও তাহার বিবাহ হয় নাই । কিন্তু তাহার জন্তও নয় । তাহার ত সম্বন্ধ করিয়া বিবাহ দিতেছিলাম। বিবাহের আগে । রাত্রেই পলাইয়াছিল।” আমি নূতন কথা পাইলাম। জিজ্ঞাসা করিলাম, “সে পলাইয়াছিল ?” রাজ। হঁ। . আমি। তোমাদিগকে না বলিয়া ? রাজ। কাহাকেও না বলিয়া । আমি । কাহার সহিত সম্বন্ধ করিয়াছিলে ? রাজ। গোপালবাবুর সঙ্গে । আমি। কে গোপালবাৰু? চাপার স্বামী ? রাজ। আপনি সবই ত জানেন । সেই বটে। আমি একটু আলো দেখিলাম। তবে চাপা সপত্নীযন্ত্রণাভয়ে রজনীকে প্রবঞ্চন করিয়া ভ্রাতৃসঙ্গে হুগলী পাঠাইয়াছিল। বোধ হয়, তাহারই পরামর্শে হীরালাল উহার বিনাশে উদ্যোগ পাইয়াছিল। જી