পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবন-চরিত। > R(t মর্তে প্রদান করিতেন, এবং তিনিও তাহা গ্রহণ করিতেন, অথচ এক দিনের জন্তও ঔষধ সেবন করিতেন না । তিনি, কাশীযাত্রার ইচ্ছা প্রকাশ করিলে কুমারও তাহার সঙ্গে যাইতে আগ্রহ প্রকাশ করিলেন । অবশেষে তিনি কুমারকে নানা মিষ্ট

  • মহারাণীর গৃহ চিকিৎসক পণ্ডিতবর রাধিকাধর কবিরাজ মহাশয়, লেখকের নিকট এই সম্বন্ধে একটী গল্প করিয়াছিলেন । তিনি, বলিয়াছিলেন যে—“মহারাণীর নানা পীড়ার স্বত্রপাত হইতেই আমি চিকিৎসা করিতাম। প্রাঙ্কে দরবার গৃহে যাইয়। চিকের বাহিরে থাকিয়া নাড়ী পরীক্ষা করিতাম। কিন্তু, দীর্ঘকালেও ব্যাধির উপশম কিম্বা নাড়ীর পরিবর্তন না দেখিয়া অকৃতকার্যাতায় চিত্তে বড়ই ধিক্কার বোধ হইত। হৃদয়ে সৰ্ব্বদাই দুশ্চিন্ত ভোগ করিতাম। একদিন সাড়ে তিন আ.7র (মহারাণীর অন্ততর অংশী ) বাড়ীতে চিকিৎসা উপলক্ষে গিয়া বৈঠকখানায় পদচালন করিতেছি। সাড়ে তিন আনীর বাড়ীর নিকটেই মহারাণীর থাকবার গৃহের পশ্চাৎ দিকের অংশ সংলগ্ন, সুতরাং মহারাণীর বাসগৃহের আবর্জনাদি যাহা পশ্চাৎ দিকের জানাল হইতে নিক্ষিপ্ত হইত, সাড়ে তিন আনীর বাড়ী হইতে তাহা উত্তমরূপে দেখ। যায় । আমি ভ্রমণ করিতে করিতে দেখিলাম যে, ঐ আবর্জন রাশির মধ্যে অনেকগুলি কলাপাতের পূটুলী স্থূপীকৃত রহিয়াছে। ঐ পুটুলিগুলি দেখিয় তাহার রহস্ত ভেদ জন্ত আমি বড়ই উতলা হইয়। একজন লোক দ্বারা তাহার কতকগুলি নিকটে আনাইলাম । পরে তাহ পুলিয়া দেখিয়াই হতবুদ্ধি হইলাম। দেখি যে, আমি প্রত্যহ যে সকল পাচন মহারাণীর নিমিত্ত অতি যত্নে পাঠাইয়া দিতাম, সেইগুলি যথাবত্ পুটুলিবদ্ধে আবর্জন রাশির মধ্যে পড়িয়া আছে । আমি তখন বুঝিলাম, যে মহারাণী আমার ব্যবস্থামতPএকটী ঔযধও গলাধঃকরণ করেন নাই । কিন্তু আশ্চর্যোর বিযয় এই যে, তিনি আত্মীয়, অনাত্মীয়া, বৃত্তিভোগিনী, পরিচারিক মণ্ডলীর মধ্যে দিবারাত্রি বাস করিতেন, অথচ তিনি যে ঔষধ পাচন সেবন করেন না, একটী লোকেও তাহার তত্ত্ব রাখিত কি ন? সন্দেহ । বরং দাসীরা আমাকে প্রত্যহই বলিত যে, মহারাণী নিয়মমত ঔষধ সেবন করিতেছেন। এখন আমি বুঝিলাম যে তাহার। আমার পরিতোষ জন্য মিথা কথা বলিত। আমি পর দিন মহারাণীর নিকটে ঐ কথা নিবেদন করায় তিনি প্রথমে কোনও উত্তরই করিলেন না । তখন, আমি বলিলাম যে, আপনি যখন ঔষধ ব্যবহার করেন না, তখন আমাকে এত টাকা বেতন দিয়া রাথ। অষ্ঠায়, আর আমারও থাক কৰ্ত্তব্য নহে। তখন দাসীর দ্বারা বলিলেন যে, এখন আমি অনেক ভাল আছি, কাশীতে যাইয়া নিশ্চিন্ত হইয়া ঔষধ খাইব । কিন্তু পরে কাশীতে যাইয়াও ঔষধ

বাধহার করিতেন না ।