পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఆల, মহারাণী শরৎস্বন্দরীর জীবন-চরিত। হইবা মাত্র, মুমূর্ষ সিংহ, ব্যাধির সেই অসহ যাতনা এবং মৃত্যুর বিভীষিকা বিস্মৃত হইলেন। দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও মহত্বের প্রতিভায় সেই দুৰ্ব্বল শরীরে যেন, মত্তহস্তীর বল সঞ্চয় হইল। তিনি সবলে গাত্রাবরণ খানি দূরে নিক্ষেপ করিয়া অকস্মাৎ উঠিয়া বসিলেন। অস্থি চৰ্ম্মাবশেষ দেহের শিরায়ু শিরায় অতি তীব্রবেগে রক্তস্রোত বহিতে লাগিল । নিস্তেজ চক্ষু, বিকট ঘৃণাব্যঞ্জকতেজে উজ্জল হইয়া উঠিল । অবশেষে তিনি বন্ধুর হাত দৃঢ়মুষ্টিতে ধরিয়া কাপিতে কঁাপিতে কহিলেন— “ভাই! তুমিত এই কথা বলিতেছ? তুমি বন্ধু হইয়া আমার আসন্ন কালে কাপুরুষের মত উপদেশ দিয়া আমার মুমূর্ষ হৃদয়ে বিষম আঘাত প্রদান করিলে। যোগেন্দ্রনারায়ণ মৃত্যুভয়ে অত্যাচারীর পদানত হইবে, একথা মনেও স্থান দিও না । যে মুহূৰ্ত্তে আমার প্রাণের অংশ স্বরূপ প্রজার দুর্দশ দেখিয়াছি, সেই মুহূর্বেই শপথ করিয়াছি যে, দেশ হইতে নীলের দৌরাত্ম্য দূর করিব। নিজের জীৰন এবং পৈতৃক সমস্ত সম্পত্তি এই সৎকার্য্যে অতি সন্তোষের সহিত বিসর্জন দিব । সেই প্রতিজ্ঞাপালন করিতেই আমার এই চরম দশা উপস্থিত । তথাপি এ মরণে য়ে আমার কত মুখ, তাহা বলিয়া শেষ করিতে পারি না । কেননা আমার পৈতৃক ভূমিতে নীলের আবাদ প্রায় বন্ধ হইয়াছে ; কুষ্ঠীর ভীষণ যাতনাদায়ক কারাগার শূন্ত হইয়াছে। নিরক্ষর দুৰ্ব্বল প্রজার অত্যাচারীর অত্যাচার নিবারণের পথ দেখিতে পাইয়াছে। ইহা অপেক্ষ। আমার জীবনে শাস্তি, হৃদয়ে কৃতকাৰ্য্যতার আনন্দ আর কি হইতে পারে। ইহার পরও যদি জীবিত থাকি, তবে এই ব্রতেই জীবন অতিবাহিত করিব। এই কার্য্যে সমস্ত সম্পত্তি যায়, তাহাতেও আমার বিন্দুমাত্র কষ্ট নাই। আমি ব্রাহ্মণের সন্তান, দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিয়া দিনপাত করিব। তথাপি পৈতৃক সম্পত্তির এক বিন্দু ভূমি