পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

し8" মহারাণী শরংমুন্দরীর জীবন-চরিত। নির্দিষ্ট স্থান কি আসন ছিল না । আহারের জন্ত সকলে উপবেশন করিলে তিনি হাতে একখানা কদলীপত্র লইয়া তাহার এক পাশ্বে দরিদ্রার মত উপবেশন করিয়া, কদলীপত্রে যৎসামান্য আহারীয় লইয়া সংযতভাবে ভোজন করিতেন । এইরূপে আহারান্তে বসিয়া নানা স্থানের সমাগত পত্রগুলি স্বয়ং পাঠ করিতেন। দৈনিক আয় ব্যয়ের হিসাব দেখিবার পর, সাময়িক ংবাদ পত্র, ও ধৰ্ম্মপুস্তক পাঠ করিতেন । ইহার মধ্যে অনাথাদিগের প্রার্থনা শুনিয়া তাহার ব্যবস্থাও করিতেন। তিনি এইভাবে সেই বহু স্ত্রীলোকের হাটের মধ্যে স্বকাৰ্য্য শেষ করিয়া সায়াহ্ন কৃত্য করিতেন। জপ আদি করিতে রাত্রি দশটা অতীত হইত ; তাহার পরে শয়ন করিতেন। শয়নেও তাহার নির্দিষ্ট স্থান ছিল না। একটী দৌড় ঘরের মধ্যে দুই সারি শয্যাপ্রস্তুত হইত, তাহাতে অন্তান্ত অনাথাগণ শয়ন করিত ; তিনিও তাহাদের মধ্যে এক পাশ্বে, অতি সামান্ত ভাবে কুশাসন কিম্বা কম্বলে ভূমি শয্যায় শয়ন করিতেন। দাসীরা, তাহার শরীরের কোন পরিচর্য্যা করিতে পারিত না । তিনি সকলের মধ্যে এইরূপ ভাবে থাকিতেন যে, আহারে, উপবেশনে, শয়নে, কেহই র্তাহ অপেক্ষা সুখে ভিন্ন দুঃখে থাকিত না । সেই, রাজ অন্তঃপুরীমধ্যে সকলেই সমান অধিকারিণী ; যেন তাহার কোনই স্বাতন্ত্র্য নাই । কেহ যেন, কোনও বিশেষ ব্যবহারে মনে ব্যথা না পায়, ইহাই তাহার সৰ্ব্বথা চেষ্টা ছিল । সংসারে কলহপ্রিয়া, হিংসাপরায়ণা স্ত্রীলোকের অভাব নাই। কলহকালে তাহারা, স্থান, মর্য্যাদা কিম্বা আপনার অবস্থা অনেক সময়ে ভূলিয়া থাকে। বিশেষতঃ কাহারই স্বেচ্ছাচারে শরৎমুন্দরী অণুমাত্রও বাধা দিতেন না বলিয়া, তাহাকে বিস্তর উপদ্রব সহ করিতে হইত ।