পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ R & ] কি সৎ কার্য্যে, ধনের সংশ্ৰব থাকিলে বিশুদ্ধ সুখ কখন হইতে পারে না । যে বস্তুর দ্বারা দুঃখ জন্মে, তাহাকে রজোগুণ কহ যায়। সত্ত্ব গুণ সুখ প্রদানের একমাত্র হেতুস্বরূপ । ইহার দ্বারা ছয় প্রকারে সুখী হওয়া যায়। ১ম— প্রসন্নতা, ২য়—সস্তোষ, ৩য়—প্রতি, ৪ৰ্থ –নিঃসংশয় বা নিশ্চিৎ জ্ঞান, ৫ম—ধতি অর্থাৎ ধারণা, ৬ষ্ঠ–স্থতি অর্থাৎ অনুভূত বিষয় জ্ঞান। যে ছয় প্রকার লক্ষণ কথিত হইল, তাহা বিচার করিয়া দেখিলে মনের উপরে সত্ত্ব গুণের কার্য্য লক্ষিত হইতেছে । যদিও তমো এবং রজো গুণের কার্য্যও মনের দ্বারা সাধিত হয়, কিন্তু তাহাকে প্রকৃত মানসিক কার্য্য বলা যায় না । তমো রজোগুণে ইন্দ্রিয়াদি এবং শারীরিক কাৰ্য্য কলাপ লইয়া মনকে সৰ্ব্বদা ব্যতিব্যস্ত থাকিতে দেখা যায় । কিন্তু সত্ত্বগুণে সেরূপ নহে। বাহ্যিক শারীরিক স্বচ্ছন্দ হইতে মনের স্বতন্ত্র ভাব হওয়া সত্ত্ব গুণের অভিপ্রায় । বাহ সম্বন্ধ ষে পরিমাণে কমিয়া যায়, মনের শক্তি সেই পরিমাণে বৃদ্ধি পাইয়। থাকে। মনের শক্তি বদ্ধিত হইলে উল্লিখিত ষড়গুণ প্রকাশ পাইবার প্রকৃত অবস্থ। প্রাপ্ত হয় । সত্ত্বের যে কতিপয় ধৰ্ম্ম উল্লিখিত হইল, তাহ। তমো এবং রজে গুণে প্রকাশিত হইতে পারে না । কারণ তমঃপ্রস্থত বস্তুতে ভ্রম এবং নিয়ত অজ্ঞানত জন্মায় বলিয়া আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয় না, সুতরাং সন্তোষাদি ভাব একেবারে আসিতে পারে না । স্বার্থযুক্ত থাকিলে প্রসন্নতা পাইতে পারে না। যাহার মনে স্বার্থপরতা অবিচ্ছেদে বিহার করে, সে মন প্রসন্ন হইবে কি রূপে ? ভিখারী ভিক্ষ চাহিলে যিনি ভিক্ষা দেন, অথবা কেহ কোন প্রকার অনুগ্রহের কার্য্যপ্রার্থী হইলে যিনি অনুগ্রহ করেন, তিনি নিশ্চয় স্বার্থহীন ব্যক্তি বলিয়া পরিচিত হইয়া থাকেন। যাহার যতদুর স্বার্থহীন ভাব জন্মায়, তাহার ততদুর প্রসন্নতা শক্তি বৰ্দ্ধিত হয় ।