পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

1 سرات ] মুহুমুহু নানা ভাবের ধূম ও সুরাপান করিয়া হরিনাম সংকীৰ্ত্তন করিলে কি বাস্তবিক কোন ফল ফলিবে ? শাস্ত্রে উল্লিখিত আছে যে, যিনি হরিনাম বলেন, র্যাহার। তাহ। শ্রবণ করেন এবং যে স্থানে তাহ। উচ্চারিত হয়, এই ত্রিলোক পবিত্র হইয়া থাকে ; কিন্তু যখন বক্ত। হরিনাম বিক্রয় করেন, যাহারা সখের জন্য তাহা শ্রবণ করেন এবং যে স্থানে হরিনামের ব্যবসা হয়, তখন এই ত্রিবিধাবস্থায় কখন নামের প্রকৃত ফল ফলিতে পারে না। তাহা হইলে শাস্ত্র ভুল হয়, যুগধৰ্ম্ম ভুল হয়, এবং কালের সাধন বিলুপ্ত হইয়া যায়। সাধন চাই, সাধন। ব্যতীত কখন ভগবান লাভ হয় না, হয় নাই, হইবার নহে। কলির নাম সম্বন্ধীয় সাধনা আছে কি না, দেখাইবার জন্য শ্ৰীকৃষ্ণচন্দ্র গৌরাঙ্গ রূপে অবতীর্ণ হইয়া নিজে তাহ দেখাইয়। গিয়াছেন । যদ্যপি রজঃ তমোভাবে দিন যাপন করিয়া,অবসর ক্রমে, রহস্যচ্ছলে, অর্থোপার্জনের জন্য, লোকের মন ভুলাইবার নিমিত্ত নাম সংকীৰ্ত্তন করিলে যথেষ্ঠ হইত, তাহা হইলে তিনি সন্ন্যাসী হইতেন না , যদ্যপি গুরু নিম্প্রয়োজন হইত, তাহ হইলে তিনি কেশব ভারতীর নিকটে দীক্ষিত হইতেন না ; যদ্যপি কেশ বিন্যাস ও মনোহর বসন ভূষণের শোভায় পরিত্রাণ হওয়া যাইত, তাহ হইলে তিনি কেশ মুণ্ডন ও কৌপিন ধারণ করিতেন না। কামিনীর কমনীয় ভুজাশয়ে যদ্যপি ভগবান লাভ হইত এবং কলিকালে তাহাই সাধন হইত, তাহা হইলে তিনি বিষ্ণুপ্রিয়াকে পরিত্যাগ করিয়া যাইতেন না । যদ্যপি আত্মীয় আত্মীয়া কুটুম্বাদির মন তুষ্ট করিলে সাধনার চূড়ান্ত হইত, তাহা হইলে তিনি স্বদেশ পরিত্যাগ করিয়া তীর্থস্থানে বেড়াইতেন না। নাম সংকীৰ্ত্তন সাধন কিরূপে করিতে হয়, ইহাই প্রচার করিতে, জীব শিক্ষা দিতে, তিনি লীলারূপে মনুষ্যাকারে মানবসমাজে শুভাগমন করিয়াছিলেন ।