পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ १> ] বলিয়া মানিব যে, আমার দ্বারা তোমার সাধনার পথ পরিষ্কার হইল ; ইহ অপেক্ষা সুখের বিষয় কি আছে ? সকলেই বলেন যে, স্ত্রী পুরুষদিগের পতনের হেতুবিশেষ। যদ্যপি আমায় ত্যাগ করিলে তোমার উন্নতি হয়, সে কার্য্যে আমার পূর্ণ যোগ আছে। আমি জানি স্বামীর ঐশ্বর্য্যে যেমন স্ত্রী অধিকারিণী, স্বামীর সুখে যেমন স্ত্রী অধিকারিণী, তেমনি স্বামীর ধৰ্ম্মেও অধিকারিণী । তুমি ধৰ্ম্মোপার্জন করিবে, আমি গুহে বসিয়া তাহার অৰ্দ্ধেক অংশ পাইব, এমন কার্য্যে আমি প্রতিবন্ধক জন্মাইব কেন ? কিন্তু তোমার উদ্দেশ্যের কিয়দংশ শুনিয়া আমি দুঃখিত হইয়াছি। তুমি দেশ পরিভ্রমণ করিবে, লোকালয়ে অবস্থিতি করিবে, তাহাতে কি লাভ হইবে, আমি কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। আমার মনে হইতেছে যে, এখন তুমি একঘরে আছে, এই একঘর ত্যাগ করিয়া ঘরে ঘরে বেড়াইবে, দেশে দেশে বেড়াইবে । স্বামী ! তাহাতে কি ধৰ্ম্ম লাভ হইবে ? আমি বলি, তুমি এঘর ত্যাগ করিয়া এমন ঘরে যাও, যে ঘরে লাইলে আর ঘরে ঘরে বেড়াইতে হইবে না । স্ত্রীর এই কথা শ্রবণ করিয়া সেই ব্যক্তির তখন ভ্রম বিদূরিত হইল। তখন তাহার মনে হইল যে, আমার স্ত্রী সত্য কথাই বলিয়াছে, এদেশেও যাহা, অন্য দেশেও তাহা, এই গৃহে এই স্ত্রীও যাহা, অন্য গৃহে অন্য স্ত্রী ও তাহা । ঘর দেখিলে এই ঘর স্মৃষ্টি পাইবে, স্ত্রী দেখিলে এই স্ত্রীর কথা মনে হইবে, সে মনে ভগবানের স্মৃষ্টি হইবে কিরূপে ? আহা স্ত্রী কি শিক্ষাই দিলে যে, বিষয়াসক্ত মনই সংসারে ঘুরিয়া বেড়ায়, যেহেতু তাহার প্রয়োজন সংসারে। যে মনে সংসার ভাব থাকিবে, তাহাকে সংসারেই অবস্থিতি করিতে হইবে। এখনও সংসারে, পরেও সংসারে, জন্মান্তরেও সংসার ব্যতীত আর কোন স্থানে স্থান হইবে না। সুতরাং সন্ন্যাসী হওয়ায় ঘর ঘর অর্থাৎ বার বার জন্মগ্রহণ নিমিত্ত সাংসারিক ক্লেশ হইতে