হয়। তাহার ক্যা, কুমারী হাউ, দক্ষিণারঞ্জনের প্ররোচনাতে লাহিড়ী মহাশয়কে এক গ্লাস শেরি পান করিতে দিলেন। দক্ষিণারঞ্জন আসিয়া কাণে কাণে বলিলেন, “ইংরাজ সমাজের এই নিয়ম যে ভদ্রমহিলারা কিছু আহার বা পান করিতে দিলে, তাহা আহার বা পান না করা অসভ্যতা, অতএব পান না কর, একধার ওষ্ঠাধরে স্পর্শ করা ও ”। লাহিড়ী মহাশয় অনিচ্ছাসত্ত্বে তাহাই করিলেন। এইরূপে কালেজের ছাত্ৰগণের মধ্যে সুরাপানের দ্বার উন্মুক্ত হইয়াছিল।
কিরূপে প্রথম ইংরাজী-শিক্ষিত দলে সুরাপান প্রবেশ করিয়াছিল তাহার একটু ইতিবৃত্ত আছে। সে সময়ে মুরাপান করাকুসংস্কার ভঞ্জনের একটা প্রধান উপায়স্বরূপ ছিল। যিনি শাস্ত্র ও লোকাচারের বাধা অতিক্ৰম পূৰ্বক। প্রকাষ্ঠভাবে সুরাপান করিতে পারিতেন, তিনি সংস্কারকদলের মধ্যে অগ্রগণ্য ব্যক্তি বলিরা পরিগণিত হইতেন। স্বরং রাজা রামমোহন রায় পরোক্ষভাবে সুরাপান শিক্ষা বিষয়ে সহায়তা করিয়াছিলেন। তাহার এই নিম্নম ছিল যে তিনি রাত্রিকালে বন্ধুগণ সমভিব্যাহারে টেবিলে বসিয়া ইংরাজী রীতিতে থানা খাইতেন। ইহা হইতে এদেশীয় কোন কোনও ধনী পরিবারে রাত্রিকালে থানা খাইবার রীতি প্রবর্তিত হইয়াছিল। রাত্রিতে ভোজন করিবার সময় রামমোহন রায়ের। পরিমিতরূপে সুরাপান করিবার নিয়ম ছিল। তাহাকে কেহ কখনও পরিমিত সীমাকে লজঘন করিতে দেখে নাই। এ বিষয়ে তাহার প্রখর দৃষ্টি ছিল। এরূপ শোনা যায় একবার একজন শিষ্য কৌতুক দেখিবার নিমিত্ত প্রবঞ্চনা পূৰ্ব্বক প্তাহাকে একগ্লাস অধিক সুরা পান করাইয়াছিলেন বলিয়া তিনি ছয়মাস কাল তাহার মুথ দৰ্শন করেন নাই।
রাজা বোধ হয় এ কথাটা চিন্ত! করিয়া দেখেন নাই যে, যাহা তাহার পক্ষে পরিমিত সীমার মধ্যে রক্ষা করা মুসাধ্য ছিল, তাহা অপরের পক্ষে সর্বনাশের কারণ হইতে পারে। পরবর্তী সময়ে ইহার ঘথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। এই সুরাপান নিবন্ধন আমরা অনেক ভাল ভাল লোক অকালে হারাইয়াছি। যাহা হউক, যে সময়ের কথা বলিতেছি সে সময়ে মুরাপান করা মুসংস্কারহীন সংস্কারকদিগের একটা প্রধান লক্ষণ হুইয়া, দাড়াইয়াছিল। ভক্তিভাজন রাজনারায়ণ বস্তু মহাশয়েয় মুখে শুনিরছি, যখন তিনি হিন্দুকালেজে। পাঠ করেন এবং তাহার বয়ঃক্রম ১৬১৭ বৎসরের অধিক হইবে না, তথনি তিনি।