পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/২৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৪
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ।

বাবু উমেশচন্দ্র দত্ত—(রামবাগান)।
বাবু কৃষ্ণকিশোর ঘোষ।
বাবু জগদানন্দ মুখোপাধ্যায়।
বাবু প্যারীচাঁদ মিত্র।
বাবু শম্ভুনাথ পণ্ডিত।
বাবু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর—সম্পাদক।
বাবু দিগম্বর মিত্র—সহ সম্পাদক।

 ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ান এসোসিএশনের প্রতিষ্ঠা এই যুগের একটা প্রধান ঘটনা। সভাটী স্থাপিত হইবামাত্র ইহার শক্তি সকলেই অনুভব করিতে লাগিলেন। ইংরাজ রাজপুরুষগণ দেথলেন দেশীয় সমাজের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিগণ আপনাদের অভাব গবর্ণমেণ্টের গোচর করিবার জন্য এবং দেশীয়গণের স্বত্ব ও অধিকার রক্ষা করিবার জন্য বদ্ধ-পরিকর হইয়াছেন। এদেশীয়দিগের প্রতি তাঁহাদের যে উপেক্ষার ভাব ছিল তাহা তিরোহিত হইতে লাগিল। দেশের লোকেও জানিল, তাঁহাদের হইয়া বলিবার জন্য লোক দাঁড়াইয়াছে। সুতরাং সকল শ্রেণীর লোকের দৃষ্টি এই নব-প্রতিষ্ঠিত সভার দিকে আকৃষ্ট হইল। লোকে আশার নয়নে ইহাকে দেখিতে লাগিল। এ কথা এখানে মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিতে হইবে যে ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ান এসোসিএশন সে সময়ে সে আশা প্রচুর পরিমাণে পূর্ণ করিয়াছেন। যখন দেশের লোকের হইয়া বলিবার কেহই ছিল না, তখন তাঁহারাই একমাত্র মুখমাত্র ছিলেন। লোকের হইয়া বলিবার ও তাহাদিগকে সর্ব্ববিধ রাজকীয় অত্যাচার হইতে রক্ষা করিবার জন্য তাঁহারাই একমাত্র শক্তি ছিলেন। সুতরাং এই সভার প্রতিষ্ঠা সর্ব্বশ্রেণীর মনে হর্ষ ও আশার সঞ্চার করিল।

 ১৮৫১ সালের এপ্রিল মাসে লাহিড়ী মহাশয় বর্দ্ধমানে গেলেন বটে, কিন্তু সেখানেও বহুদিন সুস্থির হইয়া থাকিতে পারিলেন না। কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁহার উপবীত পরিত্যাগের গোলোযোগ উপস্থিত হইল। তাঁহার উপবীত পরিত্যাগ সম্বন্ধে দুই প্রকার কিম্বদন্তী প্রচলিত আছে। প্রথম,— তিনি কৃষ্ণনগরের বাটীতে তাঁহার জননীর সাম্বৎসরিক শ্রাদ্ধ ক্রিয়া সম্পন্ন করিতেছিলেন, এমন সময় একটা বালক দূরে দাঁড়াইয়া বলিতেছিল,— “এদিকে ত বলা হয় কিছু মানি না, ওদিকে শ্রাদ্ধ কর্ত্তে বসা হয়েছে, পৈতাটী বেশ ঝুলচে, বামনাই দেখান হচ্ছে।” এই বাক্যগুলি লাহিড়ী