পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৭৬
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

সেখানে বাস করিয়া নানা স্থানে ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম প্রচার করেন। ভারতেশ্বরী মহারাণী ভিক্টোরিয়া হইতে সামান্ত ধৰ্ম্মাচাৰ্য্য পৰ্য্যস্ত সকলে তাহার প্রতি সন্মান প্রদর্শন করিতে ক্ৰটি করেন নাই।

 স্বদেশে ফিরিয়াই তিনি দেশের সর্ববিধ সংস্কার-কার্য্যে নিযুক্ত হন; এবং “ভারত সংস্কার সভা” নামে, একটি সভা স্থাপন করিয়া, তাহার অধীনে সুলতসাহিত্য, নৈশবিদ্যালয়, স্ত্রীশিক্ষা, শিক্ষাবিস্তার, সুরাপান নিবারণ প্রভৃতি ৰহুবিধ দেশহিতকয় কার্য্যের স্বত্রপাত করেন। কয়েক বৎসরের মধ্যে এই সভা, ও ইহার অনুষ্ঠিত সমুদর কার্য্য উঠিয়া গিয়াছে। এখন এলবার্ট কলেজ ভিন্ন অন্ত কোনও স্মৃতি-চিকু নাই।

 ১৮৭১ সালে ব্রাহ্মবিবাহ বিধিবদ্ধ করিবার আন্দোলন প্রবলরাপে উপস্থিত হয়। ব্ৰাহ্মদিগের নামে বিবাহ সম্বন্ধীয় কোনও স্লাজবিধি প্রণীত হয়, আদিসমাজ ইহার বিরোধী হওয়াতে, ব্ৰাহ্মবিবাহবিধি এই নাম ত্যাগ করিয়া, ১৮৭২ সালেয় তিন আইন নাম দিয়া একটা সিভিল বিবাহ বিধি প্রচারিত হয়। তদবধি তদনুসারেই উন্নতিশীল ব্ৰাহ্মদিগের বিবাহদি হইয়া আসিতেছে।

 এই সময়েই কেশবচন্দ্র কতকগুলি ব্ৰাহ্মপরিবারকে একসঙ্গে রাখিয়া, দৈনিক উপাসনা, পাঠ, সৎ প্রসঙ্গ, সময়ে আহার, সময়ে বিশ্রাম প্রভৃতির নিয়ম শিক্ষা দিয়া, ব্রান্ধপরিবারের আদর্শ প্রদর্শনেয় উদ্দেশে “ভারতাশ্রম” নামে একটা আশ্রম প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রচারকদিগের অনেকে এবং অপর ব্রাহ্মদিগের ৪ কেহ কেহ সপরিবারে সেই আশ্রমে বাস করিতেন। কেশবচন্দ্র প্রতিদিন উপাসনাকাৰ্য্য সম্পাদন করিতেন; এবং সকলে নিজ নিজ ব্যয় দিয়া, একত্র আহারাদি করিয়া, এক পরিবারভুক্ত হইয়া থাকিতেন। আশ্রম ভবনেই বয়স্থ মহিলাদের জন্ত একটা বিদ্যালয় ছিল। সেখানে আমরা কয়েকজন শিক্ষকতা করিতাম; এবং আশ্রমবাসীদের ও বাহিরের ব্রাহ্মদিগের পত্নী, ভগিনী ও কস্তাগণ পাঠ করিতেন।

 ১৮৭২ সালে উন্নতিশীল ব্ৰাহ্মদলে স্ত্রীস্বাধীনতায় আন্দোলন উপস্থিত হইল। এ আন্দোলন কালে থামিল বটে, কিন্তু ত্বরার আর এক প্রতিবাদের রোল উঠিল। আশ্রমের অধক্ষের সহিত আঁশ্রমবাসীকোনও ব্রান্ধের বিবাদ উপস্থিত হইয়া, সেই বিবাদের প্রতিধ্বনি বাহিরের সংবাদ পত্রে বাহির হইয়া, তাহ হইত হাইকোর্টে এক মোকদম উঠিল। কেশবচন্দ্র, স্বয়ং বাদী হইয়া ঐ মোকদম উপস্থিত করিলেন। প্রতিবাদিগণ ক্ষমা প্রার্থনা করাতে মোকদম