পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বয়োদশ পরিচ্চ্ছেদ।
৩৩৫

 এই সংকল্প প্রকাশ পাইলে তাহার আত্মীয় স্বজন অস্থির হইয়া উঠিলেন। তাহার বিমাতাকে’কৌশলে চুরী করিয়া কাশীধামে প্রেরণ করা হইল; এবং দুর্গামোহনের প্রতি কটুক্তি অত্যাচার নির্যাতন চলিতে লাগিল।, তিনি সমুদয় সহিয়া রছিলেন। কিন্তু বিমাতা হাতছাড়া হওয়াতে তাহার সংকল্প সাধন অসম্ভব জানিয়া সে বিষয়ে এক প্রকার নিরাশ হইলেন। কিন্তু তাহার ঐ বন্ধুর প্রতি তার বিমাতার অনুরাগ পূর্বেই অর্পিত হইয়াছিল। সুতরাং তিনি বন্দীদশাতে কাশীতে থাকিয়াকোনও কৌশলে দুর্গামোহন বাবুকে র্তাহার মনোগত ভাব জানাইলেন। তখন চোরের উপর বাটপাড়ি করিবার পরামর্শ স্থির হইল। অনেক ব্যয় ও অনেক কৌশলে বিমাতাকে কাশী হইতে চুরি করিয়া আনিয়া, বিখ্যাসাগর মহাশয়ের সাহায্যে, বিবাহ দেওয়া হইল। ও দিকে বরিশাল। ও সমস্ত বঙ্গদেশ তোল পাড় হইয়া যাইতে লাগিল। দাস মহাঁশল্পের মুথে গুনিয়াছি যে তখন তিনি আদালতে যাইবার জষ্ঠ্য বাহির হইলেই রাস্তার লোকে। বাপাত্ত করিয়া গালি দিত; এবং গাত্রে ধূলি নিক্ষেপ করিত। কিছু দিনের জন্য তাহার পসার একেবারে নষ্ট হইয়া গেল। এমন কি ছয় মাস কাল গবৰ্ণমেন্টের মোকদ্দমা ভিন্ন একটৗও বাহিরের মোকদ্দমা পান নাই। এ সকল কষ্ট তিনি হাসিয়া সহ করিতেন; একটীও কটক্তির দ্বিরুক্তি করিতেন না; বরং সময়ে অসময়ে তাহার বিরোধিগণের সাহাধ্যার্থ মুক্তহস্ত ছিলেন। এই সময়ে তাহার পত্নী ব্ৰহ্মমরী সকল নির্যাতনের মধ্যে তাহার সহায় হইলেন। নির্যাতনের তীব্রতা তাহাকে যত সহিতে হইত, দুর্গামোহন বাবুকে বরং ততটা সহিতে হইত না। কারণ দুর্গামোহন বাবু আদালনে যাইতেন; বন্ধুদের সঙ্গে মিশিতেন; লিপিতেন, পড়িতেন, বাহিরের ভাল চচ্চাতে থাকিতেন; কিন্তু ব্ৰহ্মামন্ত্রী রীত্রিদিন গৃহ পরিবারে আবদ্ধ থাকিতেন; পাড়ার লোকের সমালোচনা শুনিতেন; এবং আত্মীয়া মহিলাগণের গজনা সহ্য করিতেন। তথাপি একদিনও তাহার মুথ বিষৰ পদখা। বাইত’ না। এই সমরে তাহার স্থিরচিত্ততা দেখিয়া সকলে বিস্ময়াবিষ্ট হইত। তিনি সর্বদ। স্বীয় পতিকে তাহার সভীষ্ট পথে চলিতে উৎসাহিত করিতেন; এবং সর্ববিধ দেশহিতকয় কার্য্যে তাঁহার সঙ্গিনী হইতেন। ইহায়া কি ভাবে বিরোধিগণের অত্যাচার সহ করিতেন; এবং সকল সহিয়া তাহাদের সাহায্যাৰ্থ কিরূপ প্রস্তুত থাকিতেন, তাহার নিদর্শন স্বরূপ এই সময়কার একটিী ঘটনার। উল্লেখ কর৷ যইেতেছে। এই নির্যাতনের সময়ে হর্গামোহন বাবুর একটী সন্তান