পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ (নিউ এজ ২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3) $ልህ” রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ এখন গবৰ্ণমেণ্ট হাউসের সম্মুখস্থ ময়দানে বিদ্যমান রহিয়াছে। এই বক্তৃতা এরূপ ওজস্বিনী হইয়াছিল যে, পরদিন ইংরাজদিগেব। মুখপাত্র স্বরূপ প্ৰধান সংবাদপত্রে লিখিল-“ভারতবর্ষে একজন ডিমস্থিনিস দেখা দিয়াছে, একজন বাঙ্গালি যুবক তিনজন সুদক্ষ ইংরাজ বারিষ্টারকে ধরাশায়ী করিয়াছে।” ১৮৫১ সালে যখন বৰ্ত্তমান ব্রিটিশ ইণ্ডিযান এসোসিয়েশন স্থাপিত হয় তখন তিনি ইহাব কমিটীভুক্ত হন। ১৮৫৩ সালে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির সনন্দ পুনগ্রহণের সময় এক মহাসভা হয়, তাহাতে রামগোপাল এক বক্তৃতা করেন। ইহাতে যেমন ওজস্বিতা, তেমনি সাহসের পরিচয় দিয়াছিলেন। পরবর্তী সময়ের লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণব হেলিডে ( Sir Frederick; Haliday) মহোদয এদেশীয়দিগের বিরুদ্ধে তৎপুর্বে পার্লামেন্টের নিযুক্ত কমিটীর নিকট সাক্ষ্য দিয়াছিলেন। রামগোপাল এই বক্তৃতাতে সেই সাক্ষ্যকে সুতীক্ষ বিচার ছুরিকার দ্বারা খণ্ড খণ্ড করিয়া ফেলেন। তাহাতে তাহার প্রতিভার খ্যাতি বহুগুণ বাডিয়া গিয়াছিল। তৎপাবে ১৮৫৮ সালে ভারতেশ্বৰী ভিক্টোরিয়া স্বয়ং রাজ্যভার গ্ৰহণ করিলে আনন্দসূচক এক সভা হইয়াছিল, তাহাতে রামগোপাল বাগিতার দ্বারা সকলকে চমৎকৃত করিয়াছিলেন। তৎপরে হিন্দুপেটীয়টের হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের স্মবাণার্থ সভাতে, লর্ড ক্যানিং-এর সম্বৰ্দ্ধনাৰ্থ সভাতে, তিনি যে সকল বক্তৃতা কবেন তাহাও স্মরণযোগ্য। কিন্তু তাহার যে বক্তৃত। কলিকাতাবাসী হিন্দুগণের স্মৃতিতে চিরদিন জাগকক থাকিবে, যে জন্য র্তাহাবা চিবদিন কৃতজ্ঞ থাকিবেন, তাহা নিমতলার শ্মশানঘাট সম্বন্ধীয় বক্তৃত । ১৮৬৪ সালে কলিকাতার মিউনিসিপালিটী নিমতলার বর্তমান শ্মশানঘাটিকে গঙ্গাতীব হইতে স্থানান্তরিত করিবার সংকল্প করেন। এই সময়ে রামগোপাল সমগ্ৰ কলিকাতাবাসী হিন্দুগণের পক্ষ হইয়া উখিত হইয়াছিলেন, এবং প্রধানতঃ তঁহারই অগ্নিময় বক্তৃতার গুণে ঐ প্ৰস্তাব স্থগিত হয়। রামগোপাল যে কেবল বক্তৃতার দ্বারাই রাজনীতির আন্দোলনে সহায়তা করিতেন তাহা নহে। সময়ে সময়ে লেখনী ধারণাও করিতেন । ১৮৪৯-৫০ সালে গবৰ্ণর জেনেরালের ব্যবস্থাপক সভাতে কয়েকখানি আইনের পাণ্ডুলিপি উপস্থিত হয়। ভারতবাসী ইংরাজদিগকে এদেশীয়দিগের সহিত বিরোধস্থলে কোম্পানির ফৌজদারী আদালতেরও দণ্ডবিধির অধীন করাই ঐ সকল পাণ্ডুলিপির উদ্দেশ্য ছিল। এদেশীয়দিগকে ইংরাজিদিগের অত্যাচার হইতে রক্ষা করা ঐ আইনের লক্ষ্য ছিল। ইহাতে কলিকাতাবাসী ইংরাজগণ ঐ সকল পাণ্ডুলিপির “কালা আইন” (Black Acts) নাম দিয়া তদ্বিরুদ্ধে ঘোর আন্দোলন করেন। কয়েক বৎসর পুর্বে এদেশে ইলবার্ট বিলের যে আন্দোলন উঠিয়াছিল, ইহা যেন কতকটা তাহার অনুরূপ। ইংরাজগণ গবর্ণমেণ্টের প্রতি গালাগালি বর্ষণ আরম্ভ করিলেন। তখন দেশের এমনি