পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ (নিউ এজ ২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SVO রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ প্ৰভৃতির গুণে একাদিক্ৰমে লাইব্রেরিযান, সেক্রেটারি ও কিউরেটারের পদে উন্নীত হইয়াছিলেন এবং ঐ পদেই চিরদিন প্ৰতিষ্ঠিত ছিলেন । অন্য লোক হইলে কেবলমাত্র অর্থে পার্জনের জন্য এ পদকে ব্যবহার কবিতা, কিন্তু প্যারীচঁাদ লাইব্রেরিটি হাতে পাইযা আপনার জ্ঞানভাণ্ডার পুর্ণ কবিতে প্ৰবৃত্ত হইলেন ; এবং নানা বিষয়ে গবেষণা আবিস্তম্ভ করিলেন। বালক কাল হইতেই তঁাহাব যেমন জ্ঞানলাভ-স্পৃহা ছিল, তেমনি জ্ঞানবিতরণ-সম্পৃহাও ছিল, ইহা পুর্বেই প্ৰদৰ্শিত হইয়াছে। তাতার সেই জ্ঞান-বিতৰণ-স্পৃেহা এখনও বলবতী দুষ্ট হইল। তিনি একদিকে যেমন জ্ঞান-সঞ্চয় করিতে লাগিলেন, অপরদিকে সংবাদপত্ৰাদিতে লিখিয। সেই জ্ঞান বিতরণ কবিতে লাগিলেন । প্ৰথমে তিনি তাহাব বন্ধু বাসিককৃষ্ণ মল্লিকের সহিত মিলিয়া “জ্ঞানান্বেষণ" পত্রিকা সম্পাদন কবিতেন। তৎপবে বামগোপাল ঘোষ প্ৰভৃতি একত্ৰ হইষা যখন ‘বেঙ্গল স্পেক্টেটাব” নামে এক সংবাদপত্র বাহির কবেন, সে সময়ে তিনি তাহাব একজন নিয়মিত লেখক ছিলেন । এতদ্ভিন্ন বেঙ্গল হরক বা, ইংলিসম্যান, কলিকাতা বিভিউ প্ৰভৃতিতে সর্বদা লিখিতেন। কিন্তু একটি বিশেষ কাৰ্য্যেবা জন্য বঙ্গসাহিত্যে তিনি চিবস্মবাণীব্য হইয রহিষাছেন। একদিকে পণ্ডিতলব ঈশ্ববচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগব, অপবদিকে খ্যাতনামা অক্ষয্যকুমাব দত্ত, এই উভয যুগপ্ৰবৰ্ত্তক মহাপুরুষেবা প্ৰভাবে বঙ্গভাষা যখন নবজীবন লাভ কবিল, তখন তাহা সংস্কৃত-বহুল হইযা দাডাইল । বিদ্যাসাগব মহাশয় ও অক্ষযবাবু উভযে সংস্কৃত-ভাষাভিজ্ঞ ও সংস্কৃত-ভাষানুস্বাগী লোক ছিলেন , সুতরাং তঁাহাবা বাঙ্গালাকে যে পরিচ্ছন্দ পাবাইলেন তাহা সংস্কৃতেব অলঙ্কাবে পবিপুর্ণ হইল। অনেকে একপ ভাষাতে প্রীতিলাভ কবিলেন বটে, কিন্তু অধিকাংশ লোকোব নিকট, বিশেষতঃ সংস্কৃতানভিজ্ঞ শিক্ষিত ব্যক্তিদিগের নিকট, ইহা অস্বাভাবিক, কঠিন ও দুৰ্বোধি বলিয়া বোধ হইতে লাগিল। সে সমযে পাঁচজন ইংবা জীশিক্ষিত লোক কলিকাতাব কোনও বৈঠকখানাতে একত্ৰ বসিলেই এই সংস্কৃত-বহুল ভাষা লইযা অনেক হাসাহাসি হইত। ঈশ্বরচন্দ্ৰ গুপ্তেব সংবাদ প্ৰভাকরে ব’ ন্যায় পত্রেও সেই উপহাস বিদ্রেরূপ প্ৰকাশিত হইত। অক্ষয়বাবু যখন সংস্কৃতকে আশ্ৰয কবিয়া, ‘জিগীষা” “জিজীবিষ”, প্ৰভৃতি শব্দ প্ৰণয়ন কবিলেন, তখন আমবা কলিকাতাব যে কোনও শিক্ষিত লোকোব বাটীতে যাইতাম, শুনিতে পাইতাম “জিগীষা” “জিজীবিষা” প্রভৃতি শব্দেব সঠিত ‘চিচুটীমিষা’ শব্দ যোগ করিষা হাসাঁহাসি হইতেছে। যখন বিদ্যাসাগব মহাশয ও অক্ষয়বাবুব সংস্কৃত-বহুল বাঙ্গালাব ভার দুৰ্বহ বোধ হইতে লাগিল, তখন ১৮৫৭ কি ৫৮ সালে, “মাসিক পত্রিকা’ নামে এক ক্ষুদ্রকাষ পত্রিকা দেখা দিল। প্যারীচঁাদ মিত্র ও রাধানাথ শিকদার এই পত্র সম্পাদনা করিতেন। ইহা লোকপ্ৰচলিত সহজ বাঙ্গালাতে লিখিত হইত। স্ত্রীলোকে বালকে যেন বুঝিতে পারে