পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ (নিউ এজ ২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ চিত্তে জ্ঞানস্পৃহা উদ্দীপ্ত হইল। অপর দিকে মাইকেল মধুসুদন দত্ত, প্যারীচরণ সবকবি, জ্ঞানেন্দ্রমোহন ঠাকুর, ভূদেব মুখোপাধ্যায়, আনন্দকৃষ্ণ বসু, জগদীশ নাথ রায়, ঈশ্বরচন্দ্ৰ মিত্ৰ প্ৰভৃতি পরবর্তীকালপ্ৰসিদ্ধ ব্যক্তিদিগকে সহাধ্যায়ী রূপে পাইয়া তাহার আত্মোন্নতির বাসনা প্ৰবল হইল। তাহার ফলস্বরূপ তিনি কলেজের ভাল ভাল পারিতোষিক ও ছাত্রবৃত্তি প্ৰভৃতি পাইতে व्ां८िब्जन । হিন্দুকলেজে পাচ বৎসর পাঠ করিয়া তিনি ১৮৪৪ সালে উত্তীর্ণ হইলেন। পর বৎসর তাহার পিতার দেহান্ত হইল। ১৮৪৬ সালে তিনি দেবেন্দ্ৰনাথ ঠাকুব মহাশয়ের দ্বারা আরুষ্ট হইযা ব্ৰাহ্মসমাজে যোগ দিলেন , এবং উপনিষদের ইংরাজী অনুবাদ করিয়া তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা সম্পাদন বিষয়ে অক্ষয়কুমার দত্ত মহাশয়ের সহায়তা করিতে প্ৰবৃত্ত হইলেন। ১৮৪৮ সাল পৰ্য্যন্ত ঐ কাৰ্য্য করিয়াছিলেন । তৎপবে ইংলণ্ডে দ্বারকানাথ ঠাকুর মহাশয়ের মৃত্যুর পর দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুব মহাশয়েব বৈষয়িক অবস্থা মন্দ হইলে উপনিষদ অনুবাদকেব৷ পদ উঠিয়া যাওয়াতে তাহারও কৰ্ম্ম গেল । তিনি প্ৰায় দেড বৎসর কাল বসিয়া রহিলেন । পরে ১৮৪৯ সালে তিনি কলিকাতা সংস্কৃত কলেজের দ্বিতীয় ইংবাজী শিক্ষকের পদে নিযুক্ত হইলেন। এই সমযকার স্মরণীয বিষয় একটি আছে। সংস্কৃত কলেজে যে তিনি কেবল ক্লাসেব ছাত্ৰাদিগকে ইংরাজী পডাইতেন তাহা নহে, কিন্তু ঈশ্ববচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর, দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ, মদনমোহন তর্কালঙ্কাব, বামগতি ন্যাযবত্ব প্ৰভৃতি পরবত্তী সময-প্ৰসিদ্ধ ব্যক্তিগণও তাহার নিকট ইংবাজী পড়িতেন । এই সুত্রে রাজনারায়ণ বাবুর সঙ্গে উহাদের আত্মীয়তা জন্মে। ১৮৪৮ হইতে ১৮৫০ এই কালের মধ্যে ব্ৰাহ্মসমাজের অবলম্বিত ধৰ্ম্ম বিশ্বাসে একটি সুমহৎ পরিবর্তন ঘটে ; তাহাতে রাজনারাষণ বাবুব একটু হাত ছিল বলিয়া তাহার উল্লেখ করা যাইতেছে —সে পবিবৰ্ত্তনটি এই । তৎপুর্বে ব্ৰাহ্মসমাজের সভ্যগণ বেদকে আপনাদের ধৰ্ম্মবিশ্বাসের অভ্ৰান্ত ভিত্তি বলিয়া প্রচার করিয়া আসিতেছিলেন। রাজনারায়ণ বাবুও সেইরূপ বিশ্বাস কবিতেন ; এবং প্রচার করিতেন । কিন্তু ডাক্তার ডফ প্ৰভৃতি খ্ৰীষ্টীয় প্রচারকগণের সহিত এই বিষয়ে বিচাবি উপস্থিত হইয়া তাহার ফল স্বরূপ ব্ৰাহ্মসমাজ মধ্যেও বিচার উপস্থিত হইল। কাশী হইতে চারিজন বেদজ্ঞ ছাত্র ফিরিয়া আসিলে এই বিচােব আরও পাকিয়া উঠিল। রাজনাবায়ণ বাবু যখন বেদে অভ্রান্ততাবাদ রক্ষা করা কঠিন বলিয়া অনুভব করিলেন, তখন অক্ষয়কুমার দত্ত মহাশয়ের সঙ্গে মিলিত হইয়া দেবেন্দ্ৰনাথ ঠাকুরের সহিত বিচার উপস্থিত করিলেন । তাহার ফল স্বরূপ বেদের অভ্ৰান্ততাবাদ ব্ৰাহ্মসমাজের অবলম্বিত মত হইতে পরিত্যক্ত হইল ; এবং মানবের ধৰ্ম্ম বিশ্বাসের ভিত্তি আত্ম-প্ৰত্যয়ের উপরে निश्डि श्ल । )