পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ (নিউ এজ ২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পৰিচ্ছেদ 岛● এইরূপে কেশবচন্দ্রের অবিশ্ৰান্ত যত্ন ও পরিশ্রমেব গুণে নবাগত সহোদরের শিক্ষা এক প্রকার চলিল। কিন্তু তাহা কেশবের মনঃপূত হইত না। কারণ দিবসের অধিকাংশ ভাগ তাহাকে কৰ্ম্মস্থানে থাকিতে হুইত, তখন বালক বামতনু বাসায় ভূত্য বা দাসীর হন্তেই থাকিতেন। চেতলার দাস দাসীগণকে এখনও যেৰূপ বিরুত দেখা যায়, তখন তাহাবা যে কিরূপ ছিল তাহা বলিতে পারি না । সর্বত্রই দেখিতেছি তীর্থস্থানেব। সন্নিকটে সামাজিক নীতিব অবস্থা অতি জঘন্য । বহুসংখ্যক অস্থাষী, গতিশীল নবনারী এই সকল স্থানে সর্বদাই আসিতেছে ও যাইতেছে। ইহাদের মধ্যে অনেকে অজ্ঞ ও অশিক্ষিত, তাহাদিগকে প্ৰবঞ্চনা কবিয বা পাপে লিপ্ত করিয়া কিছু উপার্জন করিবার মানসে অনেক স্বার্থপর, ধৰ্ম্মজ্ঞানশূন্য লোক এই সকল তীর্থস্থানের চাবিদিকে বাস কবে । দুশ্চরিত্রা নারীদিগেব গৃহে এই সকল স্থান পুর্ণ হইয়া যায়। যাত্রীদিগকে বাসা লইতে হইলে অনেক সমযে এই সকল নাবীদের ভবনেই বাসা লইতে হয়। তাহারা দিনে যাত্রীদিগকে বাসা দিয়া ও রাত্রে বারাঙ্গনাবৃত্তি করিযী দুই প্ৰকাবে উপাৰ্জন করিতে থাকে। যখন রূপ ও যৌবন গত হয় তখন ইহাদেব অনেকে ভদ্ৰগৃহস্থাদিগের গৃহে দাসীবৃত্তি অবলম্বন কবে। চেতলা তখন এই শ্রেণীর পুরুষ ও নাবীতে পুর্ণ ছিল। বৰ্ত্তমান সময়ের ন্যায় তখনও চেতলা বাণিজ্যোব একটা প্ৰধান স্থান ছিল। বর্ষে বর্ষে ইংলেণ্ডে যে সকল চাউলেব রপ্তানী তইত চেতলা সে সকল চাউলের সর্বপ্ৰধান হাট ছিল । এতদৰ্থে সুন্দুব বাখবগঞ্জ প্ৰভৃতি স্থান হইতে এবং দক্ষিণ মগবাহাট, কুলপী প্ৰভৃতি স্থান হষ্টতে শত শত চাউলের নৌকা ও শালতী আসিযা কালীঘাটের সন্নিকটবৰ্ত্তী টালিব নালা নামক খালকে পুর্ণ করিয রাখিত। সুতরাং পুর্ববঙ্গনিবাসী চাউলেব গোলাদাব, আডতদার ও বাঙ্গাল মাঝী প্ৰভৃতিতে চেতলা পবিপূর্ণ ছিল। এরূপ প্ৰবাসাবাসী বণিক দলেব। আবাসস্থানে কিরূপ লোকোব সমাগম হত্য সকলেই তাহা অবগত আছেন। সকলেই অনুমান কবিতে পাবেন কিৰূপ সামাজিক জলবায়ুব মধ্যে ও কিরূপ সংসর্গে বালক রামতনু চেতলাতে থাকিতেন। সৌভাগ্যের বিষয় এরূপ স্থলে ও এরূপ সংসর্গে অধিক দিন থাকিতে হয নাই । কেশবচন্দ্ৰ একম্প স্থানে ও একপ সংসর্গে ভ্ৰাতাকে বাখিয়া সুস্থিব থাকিতে পাবিতেন না । কিকাপে তাহাকে সরাইতে পাবেন সর্বদা সেই চিন্তা করিতেন। অবশেষে এক সুযোগ উপস্থিত হইল। একদিন কালীশঙ্কর মৈত্র নামক নদীয়া জেলা নিবাসী একজন ভদ্রলোক কৰ্ম্মপ্ৰাখী হইয়া কেশবচন্দ্রের সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিলেন। তখন গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কার নামে কালীশঙ্কবের একজন আত্মীয় ব্যক্তি মহাত্মা ডেভিড হেয়ারের প্রতিষ্ঠিত কোনও বিদ্যালয়ে পণ্ডিতী করিতেন এবং হেয়ারের প্ৰিয়পাত্র ছিলেন”। এই গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কার সংস্কৃত কলেজের সুপ্ৰসিদ্ধ পণ্ডিত জয়গোপাল