পাতা:রামদাস গ্রন্থাবলী দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

净争象 ভারত-রহস্ত । বলি যে, সমস্ত অধ্যাত্ম শাস্ত্রেই ঐ শব্দ বিরাজ করিতেছে। বৈদিক অরণ্যক, উপনিষদ ও মহাভারতাদি গ্রন্থের প্রত্যেক রহস্তবিজ্ঞান অংশে ঐ শব্দের উল্লেখ দেখা যায় । যথা— “বেথ দেবযানস্ত বা পথঃ প্রতিপদং পিতৃষানস্ত বা যৎ কৃত্ব দেবযানং ব পন্থানং প্রতিপদ্যন্তে পিতৃযানং বা । ! আরণ্যকোপনিষদ । বেথ পথোদে বধানস্ত পিতৃযানস্ত বা ব্যাবৰ্ত্তন ইতি। ছান্দেগ্যোপনিষদ । ভারতবর্ষে যখন অধ্যাত্ম বিজ্ঞানের অত্যধিক উন্নতি হইয়াছিল, যে সময়ে শ্বেতকেতু, যাজ্ঞবল্ক্য, ব্যাস এবং অন্তান্ত জন্মসিদ্ধ যোগিগণ জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, দেবযান কি ? তাহা সেই সময়ের মহাত্মারাই জানতেন । তাহদের অর্ষ-বিজ্ঞানের নিকট কিছুই দুজ্ঞেয় ছিল না । মরণের উত্তরকাল, জীবের ভবিষ্যৎগতি, আত্মার নিৰ্ম্মোক্ষ, সমস্তই তাহারা তৃতীয় চক্ষুর দ্বারা ( ইহার নামান্তর যোগজ প্রজ্ঞ বা দিব্যচক্ষু ) দেখিতে পাইতেন। তাছার বলিয়াছেন যে মরণের পর, বা স্থূলদেহ পরিত্যাগের পর, যাহারা উংকৃষ্ট জীব তাহদের উদ্ধগতি হয় এবং যাহার নিকৃষ্ট প্রাণী তাহার এই পৃথিবীতেই থাকে, তাহদের আর উৰ্দ্ধগতি হয় না, প্রত্যুত ক্রমেই তাহদের অধোগতি হইতে থাকে ধৰ্ম্মকৰ্ম্মপরায়ণ শুদ্ধাত্মগণের উদ্ধ লোকে যাইবার দুইটী পথ আছে । তাহার একটা পথের নাম দেবযান এবং অন্ততর পথের নাম পিতৃষান । র্যাহারা অত্যন্ত শুদ্ধাত্মা, তাহারাই সেই উৎকৃষ্টতম দেবযান পথে গমন করেন ; এবং র্যাহারা অপেক্ষাকৃত কিঞ্চিৎ মলিন, তাহার পিতৃযানে আরূঢ় হন। দেবযান পথে গতি হইলে আর এ পৃথিবীতে ফিরিয়া আসিতে হয় না, অর্থাৎ মুক্তি হইয়া যায় ; কিন্তু পিতৃযান পথে গতি হইলে, ক্রমে নানাবিধ স্বৰ্গলোক ভোগ করিয়া অবশেষে পুনৰ্ব্বার এই পৃথিবীতে আসিয়া জরা ও মরণাদি ভোগ করিতে হয় । যাহার অত্যন্ত পাপী, অত্যস্ত মলিন, তাহার এবং যাহার ক্ষুদ্র প্রাণী তাহারা, উক্ত উভয় পথের কোন পথেই যাইতে সমর্থ হয় না । কেননা তাহদের উদ্ধ-গতি-শক্তি নাই, সুতরাং তাহার এই স্থানেই জন্মিয় মরণের পর পুনরায় এই স্থানেই বৃক্ষাঙ্কুরের স্তায় উৎপন্ন হইয়া ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। অন্ত কোন লোকে তাহদের গতি হয় না। সেই জন্যই ঋষিরা এই পৃথিবীকে দেবযান ও পিতৃ্যান ভিন্ন স্বতন্ত্র একস্থান অর্থাৎ তৃতীয় স্থান বলিয়া কীৰ্ত্তন করিয়াছেন ।