অসি । פאר" পারিলেই বুঝিয়া লইবে । একদিন তিনি পাচক ব্রাহ্মণকে আহবান করিয়া বলিয়া দিলেন, “দেখ, অর্জুনকে তুমি কখনও অনালোক স্থানে অন্ন প্রদান করিও না।” পাচক আজ্ঞা প্রাপ্ত হইয়া সৰ্ব্বদা সাবধানে অন্ন পরিবেশন করে। একদিন অর্জুন আহার করিতেছেন, এমন সময় প্রবল বায়ু উখিত হইয়া, তত্রস্থ জীপ নিৰ্ব্বাপিত করিল। অর্জুন দীপ প্রজালনের অথবা দীপান্তর আনয়নের প্রতীক্ষা না করিয়াই আহার করিতে লাগিলেন । অন্ধকারে আহার করিতেছেন, আর ভাবিতেছেন, একি ? আমার হস্ত যে ঠিক্ মুখেই যাইতেছে ? এবং প্রত্যেক ব্যঞ্জনাদি দ্রব্যের দিকেও ধাইতেছ ? ইহার কারণ বোধ হয় অভ্যাস। অভ্যাস হইলে, বোধ হয় তখন আর দেখিবার আবগুক হয় না। অদৃষ্ট লক্ষ্যকেও বিদ্ধ করা যায় । ইহা ভাবিয়া তিনি সমধিক আনন্দিত হইলেন এবং তদবধি প্রতিদিন রাত্রে উঠিয়া নিশীথ কালের অন্ধকারে লক্ষ্যাভ্যাস করিতে লাগিলেন এবং ক্রমে তিনি অন্ধকারে লক্ষ্য ভেদ করিতে শিথিয়াছিলেন। অর্জুনের অন্ধকারে লক্ষ্য ভেদ শিক্ষা আর শব্দভেদ শিক্ষা প্রায় তুল্য কাৰ্য্যকারী জানিবে এবং অভ্যাসের দ্বারা না হয় এমন কাৰ্য্যই নাই, ইহাও জানিতে হইবে। অসি । এই অস্ত্ৰটী সৰ্ব্বদেশ-সাধারণ এবং ইহার প্রচার ও ব্যবহার অদ্যপি সমভাবে বৰ্ত্তমান আছে। প্রাচীন জনশ্রুতি ও ধনুৰ্ব্বেদের লিপি পর্য্যালোচনা করিলে বোধ হয় যে, পুৰ্ব্বকালে যেরূপ তীক্ষ্ণধার অসি উৎপন্ন হইত—এখন আর সেরূপ শক্তিসম্পন্ন তীক্ষ্ণ অসি কোন শিল্পীই প্রস্তুত করিতে পারেন না । শুনা গিয়াছে এবং ধমুৰ্ব্বেদেও লিখিত আছে যে, অসির আঘাতে প্রস্তর-স্তম্ভও কম্ভূিত হয়। পাথরে আঘাত করিলেও ধার থাকে, ভাঙ্গিয়া যায় না, এরূপ অলি আর এখন নাই। কেন নাই ? তাহ জানি না । এক্ষণকার অসি যেরূপ হয় হউক, পরস্তু পূৰ্ব্বকালে কত প্রকার অসি ছিল, কিরূপ লোহয় কোন প্রদেশে প্রস্তুত হইত, কিরূপ পায়ন অর্থাৎ পা’ন দিয়া তাহার ধার বাধা হইত এবং কিরূপ কৌশলেই বা তাহ ব্যবহৃত হইত ; অদ্য আমরা এই সকল বৃত্তাস্ত বিবিধ সংস্কৃত গ্রন্থ হইতে সঙ্কলিত করিয়া পাঠকগণের অক্ষিসমক্ষে অর্পণ করিব। - যদিও এইরূপ প্রস্তাবে কিছু শিক্ষিতব্য থাকে না—তথাপি ইহার দ্বারা কুতূহল বৃদ্ধি ও পূৰ্ব্বপুরুষদিগের মহিমা অনুভূত হইতে পারে; তৎপক্ষে কোন সন্দেহ নাই।
- @