পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাষণ্ডপীড়ন 8S বিবেচনা করিবেন। এবং । প্ৰাপ্য পুণ্যকৃতাং লোকানুষিত্ব শাশ্বতীঃ সমাঃ । শুচীনাং শ্ৰীমতাং গেহে যোগভ্ৰষ্টেভিজায়তে। অর্থাৎ অপ্রতিষ্ঠিত যোগী যোগভ্ৰষ্ট হইলেও পুণ্যকারী লোকদিগের লোকে বহুকাল বাস করিয়া পশ্চাৎ শুচি অথচ শ্ৰীমান যে মনুষ্য, তাহার গৃহে জন্মোন, ভাক্ততত্ত্বজ্ঞানী মহাশয়ের লিখিত এই ভগবদগীতার শ্লোকে যোগ শব্দে তাহার অভিপ্ৰেত কোন যোগ, জ্ঞানযোগ, কি কৰ্ম্মযোগ, কি সাংখ্যযোগ, যদ্যপি জ্ঞানযোগ তাহার অভিপ্রেত হয়, তথাপি এক্ষণে কহিতে লজ্জিত হইবেন, যেহেতু, তাহাতে পরমেশ্বরকে সাক্ষী করিয়া নিস্তার পাওয়া ভার, ৫২ পৃষ্ঠে ৪ পঙক্তিতে পূর্বেই তাহার বিস্তার করিয়াছি, কিন্তু কৰ্ম্মযোগ কহিতে সাহস করিতে পারেন, যেহেতু তাহারা অনাসক্ত হইয়া বৃথাকেশচ্ছেদন, সুরা[ ৯১ ]পান, যবনীগমন, অবৈধ হিংসা ও শৈববিবাহ, ইত্যাদি অনেক সৎকৰ্ম্ম করিতেছেন, এবং যেমন সাংখ্যদর্শনে যম, নিয়ম, আসন, প্ৰাণায়াম, প্ৰত্যাহার, ধ্যান, ধারণা ও সমাধি, এই অষ্টাঙ্গ যোগ লিখিয়াছেন, তেমন যদি কলির জ্ঞানীদিগের নিগুঢ় সাংখ্যদর্শনে মিথ্যাবচন, পরনিন্দ, বৈধ কৰ্ম্মত্যাগ, স্বস্ত্রীতে জলাঞ্জলি, অবৈধ হিংসা, বৃথাকেশচ্ছেদন, সুরাপান ও যবনীগমন, এই অষ্টাঙ্গ যোগ লিখিত থাকে, তবে সাংখ্যযোগ কহিতেও সাহস করিতে পারেন, কিন্তু তাহার ফল অপুণ্যকারী ব্যক্তিদিগের লোকে বহুকাল বাস করিয়া পশ্চাৎ মনুষ্যলোকে অশুচি অথচ অশ্ৰীমান যে লোক, তাহার গৃহে জন্ম হইবে কি না ? বস্তুতঃ ভাক্ততত্ত্বজ্ঞানী মহাশয়ের লিখিত ভগবদগীতার ঐ শ্লোকে যোগ শব্দের অর্থ আত্মসংযমযোগ, অথবা ধ্যানযোগ, যেহেতু ভগবদগীতার যষ্ঠাধ্যায়ের সে শ্লোক, ষষ্ঠাধ্যায়ের নাম আত্মসংযমযোগ, অথবা ধ্যানযোগ, সেই [৯২] আত্মসংযমযোগ দুঃসাধ্য, বিষয়ান্তরসঞ্চারের লেশসত্ত্বেও তাহ সম্ভব হয় না, ভগবদগীতার আত্মসংযমযোগ দৃষ্টি করিলেই শিরঃকম্পন ও বাক্যরোধ হইবেক, অতএব যদি তাহারা আপনারদিগের সেই আত্মসংযমযোগও স্বীকার করিতে সাহস করেন, তবে তঁাহারাদিগকে সাহসিক, অত্যন্ত প্ৰতারক, লজ্জালেশশূন্য, ছিন্ননাসিক ও ছিন্নকৰ্ণ কে না কহিবেন। এবং সকল ধৰ্ম্মের মধ্যে আত্মতত্ত্বজ্ঞান শ্রেষ্ঠ হয়, এই বিষয়ে পণ্ডিতাভিমানী মহাশয় যেমন এক মনুবচন প্ৰকাশ করেন, তেমন কলিযুগে কেবল দানের শ্রেষ্ঠত্ববোধক মনুর অন্য বচনও দৃষ্ট হইতেছে। যথা । তপ: পরং কৃতযুগে ত্রেতায়াং জ্ঞানমুচ্যতে। দ্বাপরে যজ্ঞমেবাহুর্দানমেকং কলেী যুগে ৷ অৰ্থাৎ সত্যযুগে তপস্যামাত্ৰ, ত্রেতাযুগে জ্ঞানমাত্র, দ্বাপরে যজ্ঞমাত্র, এবং কলিযুগে কেবল দান শ্রেষ্ঠ হয়। এবং যেমন পণ্ডিতাভিমানী মহাশয়ের লিখিত মনুবচনে জ্ঞানের [৯৩] মোক্ষসাধনত্ব বোধ হইতেছে, তেমন ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজক্ষীর পূর্বলিখিত ভগবদগীতাদির অনেক শ্লোকেই কৰ্ম্মেরও মোক্ষসাধনত্ব জ্ঞান হইতেছে। ভাক্ততত্ত্বজ্ঞানীর উত্তর।-অন্যের সংসৰ্গাধীন জ্ঞানাবলম্বনের নিমিত্তে যত্ন করিলে তাহাকে গডরিকাবলিকার ন্যায় লিখিয়াছেন। অতএব,-“এ দুয়ের বিবেচনা বিজ্ঞ ব্যক্তিরা कविन । ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাঙক্ষীর প্রত্যুত্তর।--ভাক্ততত্ত্বজ্ঞানী মহাশয়ের তাৎপৰ্য্য এই যে, যদি কোন ব্যক্তি শাস্ত্র ও যুক্তির অনুসারে জ্ঞানপথ অবলম্বন করেন, অন্য২ ব্যক্তিও সেইং