পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথ্য প্ৰদান సిసి “কেবল কৰ্ত্তার ভয়প্রদর্শন মাত্র”। তবে ধৰ্ম্মসংহারকের ব্যবস্থানুসারে “কেবল” ও “মাত্র” এই দুই অন্য নিবারক পদের প্রয়োগ দ্বারা ঐ সকল কৰ্ম্মকরণে ভয় প্রদর্শনেই তাৎপৰ্য্য হয় বস্তুত কিঞ্চিৎও পাপ জন্মে না, কিন্তু ঋষিবাক্য ইহার বিপরীত দেখিতেছি ( নিন্দিতস্য চ সেবনাৎ ) অর্থাৎ নিন্দিত কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করিলে নরকে গমন হয়। এখন পণ্ডিত লোক বিবেচনা করিবেন যে এ ব্যবস্থা ধৰ্ম্মশাস্ত্রসম্মত কি ধৰ্ম্ম লোপের কারণ হয় ; বরঞ্চ প্ৰত্যুত্তরের পূর্বাপর আলোচনা করিলে দেখিবেন যে র্তাহারি পূর্বাপর বাক্যের সহিত এ ব্যবস্থা সৰ্ব্বথা বিরুদ্ধ হইতেছে। পরে ইহার বিপরীত উদাহরণের আলোচনা করা যাইতেছে অর্থাৎ পাপবিশেষ কিম্বা প্ৰায়শ্চিত্তবিশেষ কিম্বা নরকাবিশেষ ইহার উল্লেখ থাকিলে সে যথার্থবাদ হইবেক যেমন ( পৃতিক ব্ৰহ্মঘাতিকা) ইহাতে পাপবিশেষের উল্লেখ আছে অতএব নিন্দার্থবাদ না হইয়া ওই ব্যবস্থানুসারে যথার্থবিদ হইতে পারে। ক্রিয়াযোগসার (স্নানকালে পুষ্করিণ্যাং যঃ কুৰ্য্যাদন্তধাবনং। তাবৎ জ্ঞেয়ঃ স চণ্ডালো যাবদগঙ্গাং ন পশ্যতি ) অর্থাৎ স্নানকালে পুষ্করিণীতে দন্তধাবন করিলে সে ব্যক্তি যে পৰ্য্যন্ত গঙ্গা দৰ্শন না করে তাবৎ চণ্ডাল থাকে। এ বচনে প্ৰায়শ্চিত্তবিশেষের শ্রবণ আছে। অতএব ধৰ্ম্মসংহারকের মতে যথার্থবাদ হইয়া গঙ্গার দূরস্থ অনেক ব্যক্তিরা ভুরি কাল চণ্ডালত্ব হইতে মুক্ত হইতে পারেন না। পরে ৪২ পৃষ্ঠে ১০ পংক্তিতে লিখেন যে “যে২ বচন কৰ্ত্তার নরক, প্ৰায়শ্চিত্তবিশেষ ও ত্যাগাদির প্রতিপাদক সেই২ বচন যথার্থবাদ হয় যথা (স্ত্রীতৈলমাংসসম্ভোগী পর্বম্বেতেষু বৈ পুমান। বিস্মৃত্রিভোজনং নাম প্রয়াতি নরকং মৃত: ) অর্থাৎ এই পঞ্চ পর্বে স্ত্রীসঙ্গী, তৈল্যাভ্যঙ্গী ও মাংসভোজী পুরুষ বিষ্ঠামূত্রভোজন নামক নরকে গমন করে”। উত্তর। প্ৰথমত জিজ্ঞাস্য এই যে তিনি যদি আপন বাক্যকে ঋষিবাক্য না জানেন তবে এই ব্যবস্থার প্রমাণ্যের নিমিত্ত প্ৰাচীন কিম্বা নবীন কোনো স্মাৰ্ত্তের বাক্যকে প্ৰমাণ দিতেন, দ্বিতীয়ত জিজ্ঞাস্য এই যে এইরূপ কৰ্ত্তার প্রায়শ্চিত্ত এবং নরকপ্রতিপাদক ভুরি বচন দেখিতেছি যেমন পূর্বোক্ত পদ্মপুরাণীয় বচন, সেইরূপ স্কন্দপুরাণে (বিত্ত্বং বা তুলসীং দৃষ্টা ন নমেদযো নরাধমঃ। স যাতি নরকং ঘোরং মহারোগেণ পীড্যতে ) বিন্ধ কিম্বা তুলসী দৃষ্ট হইলে যে ব্যক্তি নমস্কার না। করে সে নরাধম ঘোরতর নরকে যায় ও মহারোগে পীড়িত হয়। এ বচনেও ঘোর নরক এবং মহারোগ শ্ৰবণ আছে যাহার প্রায়শ্চিত্তের কৰ্ত্তব্যতা হয়। অতএব ওই ব্যবস্থানুসারে যথার্থবাদ হইবেক, সুতরাং যাহারা এই দুই বৃক্ষকে দেখিয়া নমস্কার না করেন তাহদের প্রতি ঘোর নরক এবং মহারোগের অবশ্য ভবিতব্যতা স্বীকার