পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞকথা : পুরুষ-যজ্ঞ >ግ যজমান হইয়া প্রজাপতির সহিত একযোগে যজ্ঞ করিয়াছিলেন। সেই যজ্ঞে তাহাদের চিত্তি ক্ৰকৃ হইয়াছিল, চিত্ত আজ্য হইয়াছিল, বাক্য বেদি হইয়াছিল, ধ্যান বহিঃ বা কুশ হইয়াছিল, জ্ঞান অগ্নি হইয়াছিল, বিজ্ঞান অগ্নীত হইয়াছিল,প্রাণ হব্য হইয়াছিল, সাম অধ্বযু হইয়াছিল, বাচস্পতি হোতী হইয়াছিলেন, মন মৈত্রাবরুণ হইয়াছিল। অধিক কি বলিব, এই বিশ্বস্বষ্টিরূপ ব্যাপারই একটা যজ্ঞ । স্বয়ং বিরাট পুরুষ স্বেচ্ছায় এই যজ্ঞ করিয়াছেন । মনে রাখিবেন, যাজ্ঞিকের পরিভাষা মতে কোন দেবতার উদ্দেশ্যে কোন দ্রব্য ত্যাগের নাম যজ্ঞ । এই জগৎস্থষ্টি ব্যাপারে বিরাট পুরুষ আপনাকেই ত্যাগ করিয়াছিলেন, আপনাকেই আহুতি দিয়াছিলেন। কোন দেবতার উদ্দেশে আহুতি দিয়াছিলেন ? যজ্ঞদেবতার উদ্দেশেই অস্থিতি দিয়াছিলেন। প্রজাপতি নিজেই যজ্ঞপুরুষ—যজ্ঞদেবতা, ইহা পুনঃ পুনঃ উক্ত হইয়াছে। বিশ্বস্বষ্টি ব্যাপারে তাহার কোন ইষ্টলাভ থাকিতে পারে না , তিনি স্থষ্টির জন্য স্ব৪ি করিয়াছিলেন—ত্যাগের জন্যই ত্যাগ স্বীকার করিয়াছিলেন । ইহা লীলাকৈবল্য। আপনারা বিখ্যাত পুরুষস্থক্তের কথা শুনিয়াছেন—সেই পুরুষস্থক্তে স্বষ্টিকৰ্ত্তার অনুষ্ঠিত এই আদিম যজ্ঞের— এই পুরুষ-যজ্ঞের সবিশেষ বিবরণ আছে। স্বষ্টিকৰ্ত্তা এক জন পুরুষ—এক জন Person, র্যাহার সঙ্কল্প মাত্রে, কামনা মাত্রে, তপস্যা মাত্রে এই বিশ্বের স্বষ্টি হইয়াছে। এই যে পুরুষ, তাহার সহস্র শীর্ষ, সহস্ৰ অক্ষি, সহস্ৰ পদ । বিশ্বভুবন ব্যাপিয়া তিনি আছেন এবং তাহার উপরেও আরও দশ অঙ্গুলি ব্যাপিয়া আছেন। সমস্ত বিশ্বভূত তাহার এক পদ মাত্র, তাহার অন্য তিন পদ বিশ্বভূত অতিক্রম করিয়া বৰ্ত্তমান । যাহা কিছু আছে, যাহা ছিল বা হইবে, তাহা লইয়াই এই পুরুষ। অথচ এই সমস্তই তাহার এক পদ মাত্র, তাহার আর তিন পদ এ সমস্তকে অতিক্রম করিয়! উদ্ধে অবস্থিত । তিনি বিরাটুকপে জন্মিয়৷ আত্মপ্রকাশ করিলেন , এবং জাত হইয়াই সম্মুখে এবং পশ্চাতে সমস্তকে আক্রমণ করিলেন, এবং অতিক্রম করিয়৷ রহিলেন । তিনিই অগ্রজন্ম। পুরুষ , তখন কোথাও কোন দেবতা ছিল না, ঋষি ছিল ন, মনুষ্য ছিল না, অথচ সেই ভাবী পুরুষের কোথা হইতে আসিয়া সেই অগ্রজন্ম বিরাটু পুরুষকে লইয়াই যজ্ঞ আরম্ভ করিলেন ? ইহাতে চমকাইবেন না , স্বষ্টিঘটনা কালতিগ ঘটনা , এখানে অতীত ও ভবিষ্যৎ বৰ্ত্তমানের সহিত মিশিয়া থাকে। যজ্ঞে পশু আবশ্বক , সেই পুরুষকেই তাহারা পশু করিলেন । “তং যজ্ঞং বহিযি প্রেীক্ষন পুরুষং জাতমগ্রত:, তেন দেব। অযজন্ত সাধ্যা ঋষয়শ্চ যে”—ঋষিগণ, সাধ্যগণ, দেবগণ সেই অগ্রে জাত পুরুষকেই পশুকপে প্রোক্ষিত করিয়া যজ্ঞ আরম্ভ করিলেন। “দেবী ষদ যজ্ঞং তম্বান অবধুন পুরুষং পশুম”—দেবগণ যজ্ঞ আরম্ভ করিয়া সেই পুরুষকেই পশুৰূপে বন্ধন করিলেন। সেই যজ্ঞ সৰ্ব্বহুত যজ্ঞ । যাহা কিছু আছে, তৎসমস্তই সেই পুরুষ , সেই সৰ্ব্বরূপ পুরুষকেই যজ্ঞে আহুতি দেওয়া হইল , সেই পশুকেই খণ্ড খণ্ড করিয়া আহুতি দেওয়া হইল। তাহার নাভি হইতে অস্তরিক্ষ, মস্তক হইতে দ্যুলৈাক, পদ হইতে ভূমি, কর্ণ হইতে দিকসকল উৎপন্ন হইল। তাহার মন হইতে চন্দ্র, চক্ষু হইতে স্বৰ্য্য মুখ হইতে ইন্দ্রাগ্নি, প্রাণ হইতে বায়ু জন্মিল। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈহু, শূত্র, ङित्र ङिन्न রা. (২)—৭