পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা [ ১৯২০ সনের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত ] যজ্ঞ—অগ্ন্যাধান ও অগ্নিহোত্র যজ্ঞের কথা বলিতে চাহি ; আপনারা অবধান করুন । আমাদের যে সমাজের চলিত নাম হিন্দু-সমাজ, আমি সেই সমাজকে বেদপন্থী সমাজ বলিব । এই সমাজ বেদের শাসন মানে এবং বেদের আনুগত্য স্বীকার করে। বেদপন্থী সমাজের প্রধান অঙ্গুষ্ঠানই যজ্ঞানুষ্ঠান। এই যজ্ঞাহুষ্ঠানেই বেদপন্থী সমাজ প্রতিষ্ঠিত বলিলে অত্যুক্তি হইবে না। এই যজ্ঞানুষ্ঠানের তাৎপৰ্য্য না বুঝিলে বেদপন্থী সমাজের ইতিহাসের যাহা বিশিষ্টতা, তাহা বুঝা যাইবে না। আমি কয়েকটি প্রবন্ধে সেই তাৎপৰ্য্য বুঝিবার চেষ্টা করিব। এই বেদপন্থী সমাজে একটু সঙ্কীর্ণত আছে। গোড়ায় সেটুকু মানিয়া লইব । পণ্ডিতেরা অনুমান করেন, আর্য্যজাতির এক শাখা ভারতবর্যে প্রবেশ করিয়া একট। নূতন বিশিষ্ট সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করিয়াছিল। সেই সমাজতন্ত্রের নিজস্ব সাহিত্যই ছিল বেদ । সেই সমাজের ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম এবং যাবতীয় অনুষ্ঠান বেদের বিধি-নিষেধ অনুসারেই সম্পাদিত হইত। ভারতবর্ষের যে সকল আদিম অনার্য্য অধিবাসী ছিল, তাহার সকলে এই সমাজের অন্তভুক্ত হইতে পায় নাই। কেহ কেহ আনুগত্য স্বীকার করিয়াছিল। পণ্ডিতেরা অনুমান করেন, খাটি বেদপন্থী আর্য্যেরাই আপনাদিগকে দ্বিজ বলিয়। পরিচয় দিতেন ; আর যে সকল অনার্য্য র্তাহাদের আশ্রয় লইয়াছিল, তাহাদিগকে শূদ্র বলা হইত। ফলে, শূদ্রের বেদপন্থী সমাজের আশ্রিত হইলেও ঐ সমাজের সকল অধিকার পায় নাই । খাটি বেদপন্থী দ্বিজাতি-সমাজ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশু, এই তিন বর্ণে বিভক্ত হয় । আচারভেদে এবং বৃত্তিভেদে এই বিভাগের কল্পনা হইয়াছিল। আমি এটাকে একটা থিয়োরি মাত্র মনে করি। বস্তুতই যে এই তিনটা বর্ণের মধ্যে স্বনিদিষ্ট রেখা টানা ছিল, এরূপ মনে করিলেও চলিতে পারে } বৃত্তিভেদ এবং আচারভেদ এখনও যেমন নানারূপ আছে, তখনও হয়ত নানারূপ ছিল। তবে থিয়োরির খাতিরে দ্বিজাতি-সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তিকে একটানা একটা বর্ণের কোঠায় ফেলা হইত। পরবর্তী কালে যে সকল ধৰ্ম্মশাস্ত্র প্রচারিত হইয়াছিল, তাহাতে ঐ তিনটি মূল বর্ণকে পরস্পর মিশাইয়া নানা সঙ্কর বর্ণের উৎপত্তি বুঝাইবার একটা উৎকট চেষ্টা দেখা যায়। এই চেষ্টাও আমার অনুমান কতকট সমর্থন করিতে পারে । সে যাহাই - হউক, বেদপন্থী সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তি আপনাকে দ্বিজ বলিয়া পরিচয় দিতেন এবং এই দ্বিজত্ব পরিচয়ে শূদ্র হইতে এবং অনাৰ্য্য মেচ্ছাদি হইতে আপনার রা. (২)—১