পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রম্বন্দর রচনাসমগ্র "ק 2 ক্রব। একখানি বড় হাতা, তাহার নাম অগ্নিহোত্রহবনী । মালসার দুধ শ্রুব দ্বারা চারি বারে অথচ পাচ বারে লইয়া অগ্নিহোত্রহবনীতে ঢালিতে হয় এবং সেই অগ্নিহোত্রহবনীর দুধ অগ্নিতে আহুতি দিতে হয়। অনুষ্ঠানের পূৰ্ব্বে পত্নীর সহিত গৃহস্থ অগ্নিশালায় প্রবেশ করিয়া গাহঁপত্য হইতে জলন্ত অগ্নি লইয়া আহবনীয় অগ্নি এবং দক্ষিণাগ্নি জালাইয়া দেন। পরে গার্হপত্যের আগুনে দুধ জাল দিয়া সে দুধ যথাবিধি শ্রুব দ্বারা অগ্নিহোত্রহবনীতে গ্রহণ করেন। তার পর আহবনীয় অগ্নিতে একখানি সমিং বা কাঠ ফেলিয়া দেন। সে কাঠ জলিয়া উঠিলে অগ্নিহোত্রহবনীর দুধ আহবনীয় অগ্নিতে দুই বার আহুতি দেন। প্রথম আহুতি অগ্নির উদ্দিষ্ট । উহার মন্ত্র ভূভুব: স্বঃ ওঁ অগ্নিজ্যোতিঃ জ্যোতিরগ্নিঃ স্বাহা । দ্বিতীয় আহুতির দেবতা প্রজাপতি । প্রজাপতিকে ধ্যান করিয়া বিনা মন্ত্রে আহুতি দিতে হয়। সমস্ত দুধ আহুতি দিতে নাই। একটু হবিঃশেষরূপে থাকে। আহুতিদাতা তাহা ভক্ষণ করেন। আহবনীয়ে আহুতি হইলে গাহপত্যে দক্ষিণাগ্নিতে আহুতি দিতে হয়। এবার অগ্নিহোত্রহবনীর দরকার হয় না। ছোট হাতাখানি দিয়া মালসা হইতে কিঞ্চিৎ দুধ লইয়া জলন্ত অগ্নিতে ফেলতে হয়। গাহপত্যে প্রথম আহুতির দেবতা অগ্নি গৃহপতি ; দ্বিতীয় আহুতির দেবতা প্রজাপতি। দক্ষিণাগ্নিতে প্রথমাহুতির দেবতা অগ্নি অন্নপতি । দ্বিতীয় আহুতির দেবতা প্রজাপতি । প্রত্যেক আহুতি জলন্ত সমিধের উপর অর্পণ করিতে হয় । আহুতিদানের পর হবিঃশেষ ভক্ষণ করিয়া প্রত্যেক অগ্নিতে তিন তিনটি সমিৎ ফেলিয়া এবং তিন অগ্নির উপস্থান করিয়া গৃহস্থ অগ্নিশালা হইতে বাহির হইয়া আসেন। এই হইল সায়ংকালের অগ্নিহোত্র। প্রাতঃকালের অগ্নিহোত্রের বিধি সায়ংকালেরক্ট মত ; কেবল দেবতা অগ্নির বদলে স্থয্য । আহুতির মন্ত্র ভূভূবঃ স্বঃ ওঁ স্থৰ্য্যো জ্যোতি: জ্যোতিঃ স্বৰ্য্য: স্বাহা । সন্ধ্যার অনুষ্ঠান স্থৰ্য্য অস্ত গেলে অমৃষ্ঠেয় । প্রাতঃকালের অনুষ্ঠান কাহারও মতে সুৰ্য্যোদয়ের পর, কাহারও মতে সূর্য্যোদয়ের পূৰ্ব্বে কৰ্ত্তব্য । ঐতরেয় ব্রাহ্মণ অনেক বিতণ্ডার পর সূর্য্যোদয়ের পরেই অগ্নিহোত্রের সমর্থন করিয়াছিলেন । অগ্নিহোত্র নিত্যকৰ্ম্ম । ইহা না করিলেই নয়। গৃহস্থ প্রবাসে থাকিলেও তাহার প্রতিনিধি ইহা সম্পাদন করিবেন। এমন কি, বিপত্নীক গৃহস্থেরও অগ্নিহোত্র করিতে হইবে কি না, তাহ লইয়া তর্ক আছে। ঐতরেয় ব্রাহ্মণ এই প্রশ্ন তুলিয়াছেন। পত্নীর মৃত্যুর পর অগ্নিহোত্র নষ্ট হয়। সেখানে অগ্নিহোত্রের কি ব্যবস্থা হইবে, এই প্রশ্ন ঐতরেয় ব্রাহ্মণ তুলিয়াছেন। উত্তরে বলিতেছেন, গৃহস্থ যদি পুনরায় বিবাহ না করেন, তাহা হইলে তিনি পুত্র, পৌত্র বা দৌহিত্রকে অনুমতি দিতে পারেন; সে অনুমতি পাইয়া তাহারাই অগ্নিহোত্র চালাইবেন । ঐতরেয় ব্রাহ্মণ আর এক স্থলে প্রশ্ন করিতেছেন, বিপত্নীক ব্যক্তি অগ্নিহোত্র আহরণ করিবে, কি করিবে না ? উত্তরে বলিতেছেন, আহরণ করিবে। কেন না, ঋণ পরিহারের জন্য যাগ করিবে, এই শ্রতি বচন রহিয়াছে। আপনারাও সেই শ্রুতিবাক্য শুনিয়া থাকিবেন । জায়মানো বৈ ব্রাহ্মণ: ত্রিভিঃ ঋণবান জায়তে। " ব্রহ্মচর্ষ্যেণ ঋষিভ্যো যজ্ঞেন দেবেভ্য: প্রজয়া পিতৃভ্য: এষ বা অনুণে৷ য: পুত্ৰী ষজ ব্রহ্মচারী। অর্থাৎ, ব্রাহ্মণ জন্ম মাত্রই তিনটা ঋণে আবদ্ধ হন। ঋষিগণের ঋণ ব্রহ্মচৰ্য্য অর্থাং বেদাধ্যয়নের দ্বারা, দেবগণের ঋণ যজ্ঞের দ্বারা, পিতৃগণের ঋণ