পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : ইক্ট্রিবাগ ও পশুযাগ sa কাঠের হাতার দরকার। একখানির নাম ধ্রুবা। বেদির উপর স্থিরভাবে থাকে বলিয়া উহার নাম ধ্রুবা। আজ্যস্থালীর আজ্য ধ্রুবাতে ঢালিতে হয় এবং যাগের সময়ে সেই ধ্রুব হইতেই আজ্য লওয়া হয়। ধ্রুব হইতে আহুতির জন্য আজ্য গ্রহণের একথানি ছোট হাত থাকে ; সেখানির নাম শ্রুব। আর একখানি বড় হাত থাকে, সেইখানি জুহ্ব। জুহর নাম আগেই উল্লেখ করিয়াছি । আহুতির সময় অধ্বযু ছোট ক্রবের দ্বারা ধ্রুব হইতে আজ্য তুলিয়া লন এবং জুহতে ঢালিয়া দেন। চতুর্থ হাতার নাম উপতৃৎ ; ইহা জুহর চেয়ে ছোট। যাগের সময় অধ্বষু ভানি হাতে জুত্ব এবং বাম হাতে উপতৃৎ গ্রহণ করেন। উপতৃৎখানি জুহুর নীচে থাকে। উদেখা যে, জুহ্বস্থিত আহুতি-দ্রব্য যেন ভূমিতে না পড়ে ; দৈবাৎ পডিলে যেন উপভৃতেই পড়ে। ( 4 ) পুরোডাশ প্রস্তুত করিবার জন্য কতকগুলি সরঞ্জাম আবশ্বক। যথা (ক) অগ্নিহোত্রহবনী—ইহার কথা অগ্নিহোত্র প্রসঙ্গে বলিয়াছি ; ইষ্ট্যাগে সেই অগ্নিহোত্রহবনী পুরোডাশার্থ যব বা ধান আনিবার জন্য ব্যবহৃত হয়। (খ ) উদূখল মুষল—সেই যব বা ধান উখুলে রাখিয়া মূষল প্রয়োগে কাড়া যায়। (গ) স্থপ বা কুলা,—ধান ঝাডিয়া তুষ পৃথক করিবার জন্য আবশ্যক। (ঘ) দৃষৎ ও উপল অর্থাৎ শিল ও নোডা, চাউল বাটিবার জন্য আবশ্যক । ( চ ) শম্যা, একখানা কাঠ ; চাউল বাটিবার সময় নীচে এই কাঠখানা পাতিলে শিলখানা ঢালু হয় ও চাউল বঁাটার সুবিধা হয় । (ছ) কুষ্ণাজিন অর্থাৎ কাল হরিণের চামড়া ; চাউল কঁাড়িবার সময় উদূখলের নীচে ও বঁাটিবার সময় শিলের নীচে পাতা থাকে। অধ্বষু বেদির উপর কুশ বিছাইয়া ঐ সকল সরঞ্জাম সাজাইয়া ফেলেন। তার পর যাগের জন্য আহবনীয় অগ্নি ভাল করিয়া জালিতে হয়—ইহাই অগ্নি-সমিন্ধন ; ইহার কথা পূর্বেই বলিয়াছি। হোতা এক একটি সামিধেনী ঋক্ পাঠ করেন, আর অধ্বযুf এক একখানি সমিৎ আহবনীয়ে ফেলিয়া দেন ; আহবনীয় অগ্নি জলিয়া উঠে। যজ্ঞের সরঞ্জাম সাজান হইয়াছে ; পুরোডাশ প্রস্তুত করিয়া বেদির উপরে যথাস্থানে রাখা হইয়াছে ; আহবনীয় অগ্নি জালান হইয়াছে ; এখন যাগের জন্য দেবতাদিগকে আহবান করিতে হইবে । দেবতাদের আহবান হোতার কাজ । কিন্তু হোতা সামান্য মানুষ ; তাহার ডাকে দেবতারা আসিবেন কেন ? অাগেই বলিয়াছি, অগ্নি স্বয়ং দেবগণের হোতা। অগ্নি স্বয়ং ডাকিলে তবে দেবতারা আসিবেন ; অগ্নিকে সেই কৰ্ম্মে নিযুক্ত করিতে হইবে। কিন্তু অগ্নিকেই বা ডাকিবে কে ? অধ্বষু ডাকিবেন ; হোতীও ডাকিবেন। তাহাদের আহবানই বা অগ্নি শুনিবেন কেন ? প্রাচীন ঋষিগণ মন্ত্র দ্রষ্টা ছিলেন ; অলৌকিক ক্ষমতাবলে মন্ত্র লাভ করিয়া সেই মন্ত্রে তাহারা অগ্নিকে ডাকিতেন ; র্তাহাদের ডাক অগ্নি শুনিতেন। ষজমান যে গোত্রে জন্মিয়াছেন, সেই গোত্রে পূর্বকালে যে কয় জন মন্ত্র দ্রষ্টা ঋষি ছিলেন, তাহারা নিশ্চয়ই আপন আপন মস্ত্রে আপন আপন অগ্নিকে ডাকিতেন । অগ্নি নিশ্চয়ই র্তাহাদের ডাক শুনিতেন। সেই ঋষিগণের অগ্নির নাম আর্ষেয় অগ্নি বা ঋষিসম্বন্ধীয় অগ্নি ; নামাস্তর প্রবর অগ্নি। দেবতা আহবানের জন্য তৎপূৰ্ব্বে হোতাকে বরণের নাম প্র-বরণ। যজমানের নিযুক্ত হোতা মানুষ হোত মাত্র ; কিন্তু অগ্নি দেবহোতা । মানুষ হোতাকে যেমন পূৰ্ব্বে বরণ অথবা প্রবরণ