পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ઝ রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র ভক্ষণের তাৎপৰ্য্য না বুঝিলে যজ্ঞের তাৎপৰ্য্য বুঝ হইবে না। এই ইড়ারই আবার একটি অংশ হোতা পৃথকৃ ভাবে ভক্ষণ করেন । এই অংশের নাম অবাস্তর ইড়া । এই হবিঃশেষ-ভক্ষণ অনুষ্ঠান স্বিষ্টকুৎ যাগের পরে এবং অতুযাজ ঘাগের পূর্বেই সম্পন্ন হইয়া যায়। কেবল ব্ৰহ্মা ও যজমানের ভাগ যজ্ঞসমাপ্তির জন্য রক্ষিত থাকে। অনুযাজ যাগের সহিত পূর্ণমাস-যজ্ঞের প্রধান অনুষ্ঠানগুলি এক রকম সম্পন্ন হইয়া গেল। এখন সমাপ্তিতে পৌছিতে হইবে। প্রস্তর নামক দর্তমুষ্টির কথা আপনাদের মনে থাকিবে । এক মুষ্টি কুশ বাধিয়া বেদির উপর রাখা হইয়াছিল, উহারই নাম প্রস্তর। কিন্তু এই প্রস্তর কেবল কুশের গোছা নহে। ইহাতে যজমানের শরীর কল্পনা করা হয়। অনুযাজ যাগের পর প্রস্তর আহবনীয়ের আগুনে ফেলিয়া দেওয়া হয়। প্রস্তর যখন আগুনে পুড়িতে থাকে, ষজমান তখন স্বর্গে যাইতেছেন বুঝিতে হইবে। প্রস্তর পুড়িয়া গেলে বুঝিতে হইবে, যজমান স্বর্গে গিয়া দেবতাদের সহিত মিশিয়াছেন। প্রস্তর পুড়িবার সময় অধ্বযু্যর অনুজ্ঞা লইয়া হোতা কতকগুলি মন্ত্র পাঠ করেন। উহার নাম স্থত্তবাকৃ। প্রস্তর পুড়িয়া গেলে আশীৰ্ব্বাদস্থচক আর কতকগুলি মন্ত্র পাঠ করেন। উহার নাম শংযুবাকৃ। আপনাদের মনে থাকিবে, যজ্ঞের আরম্ভে তিনখানি সমিৎকাষ্ঠ দিয়া আহবনীয় অগ্নিকে ঘিরিয়া ফেলা হইয়াছিল। এই সমিৎ কয়থানির নাম পরিধি । মানুষ হোতা দেব-হোত অগ্নিকে আহবনীয় স্থানে ডাকিয়া আনিয়াছিলেন, আপনাদের মনে আছে। এই পরিধি তিনখানি সেই দেব-হোতার শরীর। এখন এই পরিধি কয়থানি অগ্নিতে ফেলিয়া দেওয়া হয় ; দেবহোতা ষজ্ঞস্থল হইলে চলিয়া যান। এই সময়ে অধবযু বিশ্বদেবগণের উদ্দেশে একটু আজ্য দিয়া হোম করেন ; ইহার নাম সংস্রব হোম । ইহা যাগ নহে—হোম । এই হোমের সহিতই যজমানের পক্ষে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয় । এতক্ষণে আপনাদের ধৈর্য্যচ্যুতি হইয়াছে। আমিও এখানে সমাপ্তি দিয়া আপনাদিগকে অব্যাহতি দিতে পারিতাম, কিন্তু যাজ্ঞিকেরা অব্যাহতি দিবেন না । যজমানের পক্ষে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হইল। কিন্তু যজমানের পত্নীর পক্ষে এখনও সমাপ্ত হয় নাই । আগেই বলিয়াছি, গার্হপত্য অগ্নির সহিত যজমানের পত্নীর বিশেষ সম্পর্ক । গার্হপত্যের পাশে তিনি এতক্ষণ বসিয়া আছেন । এ পর্য্যন্ত ষত ষাগ হইয়াছে, সমস্তই আহবনীয় অগ্নিতে হইয়াছে ; গাহঁপত্যে কোনও যাগ হয় নাই। এখন ব্রহ্মা ছাড়া আর তিন জন ঋত্বিকৃ যজমানপত্নীর নিকটে আসিয়া কয়েকটি আহুতি দেন, গার্হপত্য অগ্নিতে আহুতি দেন। আহুতির দ্রব্য আজ্য। দেবতা যথাক্রমে সোম, তুষ্ট, দেবপত্নীগণ এবং অগ্নি গৃহপতি । অগ্নি গৃহপতি ত গাহঁপত্য অগ্নির দেবতা। অগ্নি গৃহপতি যজ্ঞভাগে বঞ্চিত হইলে, গৃহিণী তাহা সহিবেন কেন ? আর দেবপত্নীগণকেও বঞ্চিত হইতে তিনি দিবেন কেন ? প্রধান যাগের পর যেমন হবিঃশেষ ভক্ষণ হইয়াছিল, গৃহপত্নীর পক্ষে এই যাগের পরও হবিঃশেষ ভক্ষণ করিতে হয়। ভক্ষণের পর স্থত্তবাকু পঠিত হয় ন বটে, তবে শংযুবাক্ পাঠ করিতে হয়, এবং সংস্রব হোমও করিতে হয় ৷ যজমানপত্নীর পক্ষে এই যাগের নাম পত্নী-সংযাজ । দক্ষিণাগ্নি এ পর্য্যস্ত কোন আহুতিই পান নাই। অধ্বযু দক্ষিণাগ্নিতে এখন একটু