পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : ইক্টিষাগ ও পশুষাগ \צס তাহার অতিরিক্ত আরও ছয় জন দেবতা পশুযাগে প্রযাজ আহুতি পাইয়া থাকেন। এই এগার জন দেবতার নাম যথাক্রমে ১) সমিং, (২) তনুনপাৎ অথবা নরাশংস, (৩) ইড়া, (৪) বহিঃ, (৫) দুরঃ, (৬) উষাসীনত্তেী, (৭) দৈবেী হোতারেী, (৮) ত্রিস্র: দেব্য (ইড়, সরস্বতী এবং ভারতী, এই তিন দেবী। ইহারা তিনে এক এবং একেই তিন ; এই তিন দেবতার কথা আপনারা মনে রাখিবেন ; ইহাদের সম্বন্ধে অনেক কথা বলিবার আছে ), (৯) ত্বষ্টা, (১০) বনস্পতি, (১১) স্বাহাকার । প্রত্যেক প্রযাজ ঘাগের পূৰ্ব্বে মৈত্রাবরুণের আদেশ পাইয়া হোতা যাজ্যামন্ত্র পাঠ করেন। পশুষজ্ঞে প্রযfজ যাগের যাজ্যামস্ত্রের একটু বিশিষ্টতা আছে। এই যাজ্যামস্ত্রের নাম আগ্ৰীমন্ত্র । দেবতাকে প্রীত করিবার জন্য ব্যবহৃত হয় বলিয়া মস্ত্রের নাম আগ্ৰীমন্ত্র । ঋগ্বেদসংহিতামন্ত্রে অনেকগুলি আগ্রীস্থত্ত আছে। প্রত্যেক স্থক্তে ঐ এগার দেবতার উদ্দেশে এগারটি আ প্রীমন্ত্র পাওয়া যায়। এক একটি সূক্ত এক এক ঋষির প্রচারিত। কোনও স্বত্ত বশিষ্ঠের, কোনটি বিশ্বামিত্রের, কোনটি জমদগ্নির ইত্যাদি। যজমান যে ঋষির গোত্রে উৎপন্ন, সেই ঋষির মন্ত্র তাহার অপ্রীমন্ত্ররূপে ব্যবহার করিতে হয়। কাজেই ভিন্ন ভিন্ন যজমানের পক্ষে প্রষাজ যাগে যাজ্যামন্ত্র বা আগ্ৰীমন্ত্র ভিন্ন ভিন্ন হইয়া থাকে। এগার প্রযাজের মধ্যে প্রথম দশটিতে আহুতির দ্রব্য আজ্য । শেষ প্রযাজে আজ্যাহুতি হয় না। সেখানে পশুর বপা আহুতি দিতে হয়। পেটের উপরে নাভির পাশে মেদের নাম বপা । এই বপার দ্বারা অন্তিম প্রযাজের দেবতা স্বাহাকৃতির উদ্দেশে যাগ হয়। কাজেই প্রথম দশ প্রযাজ সম্পন্ন করিয়া, শেষ প্রযাজের পূর্বেই পশুবধের আয়োজন করিতে হইবে । যে ব্যক্তি পশু বধ করে, তাহার নাম শমিত । পাশুক বেদির উত্তরে চাতালের কাছে পশুবধের স্থান । সেই স্থানের নাম শামিত্র দেশ । সেইখানে পশুর অঙ্গ পাকের জন্য আগুন জালিতে হয় । সেই অগ্নির নাম শামিত্র অগ্নি । একজন ঋত্বিকের নাম অশ্লীং, ইহাকে ইষ্টষাগেও পাওয়া গিয়াছে। ইনি উন্মুখ অর্থাৎ আগুনের উল্কা জালিয়া পশুর চারিদিকে ঘুরাইয়া দেন। উদ্দেশু এই যে, রাক্ষসেরা পশুকে আক্রমণ করিতে পারিবে না। রাক্ষসেরা আগুনকে ভয় করে । এই অগ্নিভামণ কৰ্ম্মের নাম পৰ্য্যগ্নিকরণ। এই সময়ে হোতা পশুবধের জন্য শমিতাকে নিযুক্ত করেন। যে মন্ত্র দ্বারা নিয়োগ করা হয়, তাহার ব্যাখ্যা যিনি জানিতে চাহেন, তিনি আমার ঐতরের ব্রাহ্মণের বাঙ্গালা অনুবাদ দেখিবেন । মন্ত্রমধ্যে দুই একটা কথা আপনাদের কৌতুক জন্মাহঁতে পারে। মন্ত্রমধ্যে বলা হয়,—এই পশুর বধকৰ্ম্মে ইহার মাতা অনুমতি দিক, পিতা অনুমতি দিক, সহোদর ভ্রাতা অতুমতি দিক, ইহার সখী এবং দলস্থিত অদ্যান্য পশু ও অনুমতি দিক। আবার বলা হয়,—ইহার পা উত্তর দিকৃ আশ্রয় করুক ; চক্ষু স্থৰ্য্যকে আশ্রয় করুক, প্রাণ বায়ুকে, জীবন অন্তরিক্ষকে, শ্রোত্র দিকৃসকলকে, এবং শরীর পৃথিবীকে আশ্রয় করুক। শেষে বলা হয়,--আহে বধকৰ্ত্তা, এই পশুকে হনন কর—হনন কর—হনন কর ; অপাপ-অপাপ-অপাপ । এই কৰ্ম্মে যে স্বকৃত হইল, তাহা আমাদের উপুরে অপিত হউক। যে দুষ্কৃত হইল, তাহা অন্তের উপর অপিত হউক। মন্ত্র পাঠের পর অগ্নীৎ উন্ম কহস্তে আগে আগে চলেন। •