পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*8や রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র বলিয়া নাম দীক্ষণীয়। যাগের পর যজমান কৃষ্ণাজিন পাতিয়া তদুপরি বসিবেন। তৃণ ও শণে নিৰ্ম্মিত মেখলা পরিবেন ; মাথায় উষ্ণীষ বাধিবেন ; কাপড়ের খুটায় একটা হরিণের শিঙ বাধিয়া হাতে ডুমুরশাখার দণ্ড গ্রহণ করিবেন। ইহাই যজমানের পরিচ্ছদ যজমানপত্নীর বেশভূষা প্রায়ই তদ্রুপ ; উষ্ণীষের বদলে তিনি মাথায় জাল পরেন। এই সকল বেশভূষার একটা তাৎপৰ্য্য আছে । দীক্ষাকৰ্ম্মে যজমান নূতন জন্ম গ্রহণ করেন। যজ্ঞশালাটাই তাহার পক্ষে মাতৃগর্ভস্বরূপ। সেইখানে ভ্ৰণস্বরূপে তাহাকে যজ্ঞকাল ব্যাপিয়া অবস্থান করিতে হয় ৷ যজ্ঞান্তে তিনি সেই গর্ত হইতে নূতন মানুষ হইয়া বা নব জীবন পাইয়া নিষ্ক্রান্ত হন। তাহার বেশভূষার কোনটার কি তাৎপৰ্য্য, তাহা ঐতরেয় ব্রাহ্মণ বুঝাইয়াছেন। যথা, গর্ভমধ্যে ভ্রণ মুষ্টিবদ্ধ করিয়া থাকে, এই জন্য যজমানও যুষ্টিবদ্ধ করেন, ইত্যাদি। দীক্ষা উপলক্ষে যে ইঠিযাগ হয়, তাহার দেবতা অগ্নি এবং বিষ্ণু । অগ্নি সকল দেবতার নিয়ে এবং বিষ্ণু সকলের উদ্ধে ; অতএব উহাদের দুই জনের যাগ করিলেই সকল দেবতার উদ্দেশে যাগ হয়। এই দুই দেবতার উদ্দেশে পুরোডাশ দেওয়া হয় । অনুষ্ঠানটি প্রায়ই পূর্ণমাসযাগের মতই। দীক্ষিত যজমানকে কতকগুলি নিয়ম পালন করিতে হয় । তিনি সত্য কহিবেন, ক্রোধ করিবেন না, মৃদু বাক্য বলিবেন, সূর্য্যের উদয় বা অস্তগমন দেখিবেন না ; জলে প্রবেশ করিবেন না ; বৃষ্টিতে ভিজিবেন ন। ভোজন সম্বন্ধেও কয়েকটি নিয়ম আছে। দীক্ষার পূর্বে পেট ভরিয়া ইচ্ছামত খাইয়া লইতে পারেন । কিন্তু তার পর হইতে নিয়মের বাধাবাধি । তদবধি দুই বেলা কেবল দুধ খাইতে হইবে । এই দুগ্ধের নাম ব্রত এবং সেই দুগ্ধপানের নাম ব্রতপান। এক বার শেষ রাত্রিতে, এক বার মধ্যাহ্নে দুগ্ধপান চলে । দুধের মাত্রা ক্রমশঃ কমাইতে হয়। পঞ্চম দিনে অর্থাৎ আসল সোমযাগের দিনে সেই দুগ্ধপানও নিষিদ্ধ। সেই দিন যজ্ঞের হবিঃশেযই এক মাত্র ভক্ষ্য । দ্বিতীয় দিন –এই দিন প্রাতে যজ্ঞের আরম্ভস্থচক একটি ইষ্টিযাগ ; ইহার নাম প্রায়ণীয় ইষ্ট । প্রায়ণ শব্দের অর্থ আরম্ভ। এই ইষ্টির দেবতা পথ্যা, অগ্নি, সোম, সবিতা এবং সর্বশেষে অদিতি । দেবতারা অদিতিকে এক সময়ে বর দিয়াছিলেন, তোমাকে লইয়াই যজ্ঞ আরম্ভ হইবে । তদবধি সোমষজ্ঞের আরম্ভে অদিতির উদ্দেশে যাগ । অদিতিকে চরু দিতে হয় ; আর চারি জনকে আজ্য দিতে হয় । এই যাগের পর সোমক্রয় যজ্ঞশালার বাহিরে সোমবিক্রেতা সোম লুইয়া বসিয়া থাকে ; তাহার নিকট মূল্য দিয়া সোম ক্রয় করিতে হয়। আগে বলিয়াছি, সোমলতা দুপ্রাপ্য ; পৰ্ব্বত হইতে উহা সংগ্ৰহ করিয়া আনিয়া যজ্ঞের জন্য বিক্রয় একদল লোকের ব্যবসায় দাড়াইয়াছিল। সোমবিক্রেতা যজ্ঞশালার বহিরে বসিয়া সোমলতা বেচিত। এই সোমক্রয় ব্যাপারে একটু কৌতুক আছে। সোম এক কালে গন্ধৰ্ব্বদের নিকট ছিলেন ; দেবতারা কৌশল করিয়া সেই সোম আনিয়াছিলেন । গন্ধৰ্ব্বের স্ত্রীপ্রিয়। দেবগণ কুমারী বাগেৰীকে গন্ধৰ্ব্বদের নিকট পাঠাইয়া দেন। তিনি গন্ধৰ্ব্বদিগকে ভুলাইয়৷ ম্রোম লইয়া আসেন এবং নিজেও পলাইয় আসেন। সোমক্রয় অনুষ্ঠানে সেই ঘটনার অভিনয় হয়। ঋত্বিকদের