পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : সোমযাগ 8 ሣ সহিত যজমান একটি ছোট বৎসতরী লইয়া সোমবিক্রেতার কাছে উপস্থিত হন। ঐ সোমবিক্রেত গন্ধৰ্ব্বস্থানীয় এবং বাছুরটি বাগ দেবতা। কিছুক্ষণ দর-দস্তুর করিয়া বাছুরটিকে মূল্যস্বরূপ দিয়া সোম খরিদ করা হয়। সোম হস্তগত হইলে হঠাৎ লাঠি বাহির করিয়া সোমবিক্রেতাকে খেদাইয়া দেওয়া হয় এবং বাছুরটি কাড়িয়া লওয়া হয় । গন্ধৰ্ব্বটার সবই গেল ; সোমও গেল, বাগ দেবীকেও সে পাইল না। যজমান সোমলতা কাপড়ে জড়াইয়া মাথায় লইয়া গাড়ীতে তুলিয়া দেন। যজমান এবং অধ্বযু গাড়ীর উপর বসিয়া থাকেন ; হোতা ঋকুমন্ত্র আওড়াইতে থাকেন এবং স্বব্রহ্মণ্য নামক ঋত্বিক গাড়ী চালাইয়া প্রাগ বংশশালা ঘুরিয়া ভিতরে উপস্থিত হন । সেখানে গাড়ী হইতে সোমকে নামাইয়া ঐষ্টিক বেদির পূর্ব দিকে আহবনীয়ের পাশ্বে কাষ্ঠাসনে রাখিয়া দেওয়া হয় । সোম দেবতাগণের এক জন রাজা। রাজা অতিথিরূপে বাড়ী আসিলে তাহার সমাদর করিতে হয় । রাজা সোম অতিথিরূপে যজমানের যজ্ঞশালায় আসিয়াছেন ; এখন তাহার অভ্যর্থনার জন্য একটি ইষ্টিযাগ করিতে হইবে। ইহার নাম আতিথ্য ইষ্ট । এই যাগের দেবতা বিষ্ণু ; হব্য দ্রব্য পুরোডাশ। ইহাতে একটু বিশেষ বিধি আছে যে, যাগের পূৰ্ব্বে মন্থন দ্বারা অগ্নি উৎপাদন করিয়া আহবনীয় অগ্নিতে মিশাইতে হয়। পূর্ণমাসাদি ইষ্ট্যাগে অগ্নিমন্থনের দরকার হয় না। আতিথ্য ইষ্টির পর প্রবর্গ যজ্ঞ আর উপসৎ ইষ্ট । এই সময়ে যজমান এবং সমস্ত ঋত্বিক একযোগে ঘৃত স্পর্শ করিযী শপথ করেন যে, এই যজ্ঞে আমরা সকলে একমত হইয়া কৰ্ম্ম করিব, পরস্পর বিরোধ করিব না। এই অনুষ্ঠানের নাম তানূনপত্র । অস্থরদের সহিত যুদ্ধকালে দেবতারা এইরূপে স্থত স্পর্শ করিয়া পরস্পর সন্ধিবন্ধন করিয়াছিলেন। এখন যেমন ইউরোপের মিত্র-রাষ্ট্রগুলি জৰ্ম্মনির বিরুদ্ধে সন্ধিবন্ধন করিয়াছেন, কতকটা তদ্রুপ। উপসৎ ইষ্টির সমকালে সোমলতাকে টাটক রাখিবার জন্য সোমে জলের ছিটা দেওয়া হয়। ইহার নাম সোমের আপ্যায়নকৰ্ম্ম। আপ্যায়নের পর সোমের নিহব বা পূজা। প্রস্তরের নাম আপনাদের মনে থাকিতে পারে। ইষ্টিযাগে বেদির উপরে এক অঁাটি কুশ থাকে ; ইহাই প্রস্তর। যজমান কয় জন ঋত্বিকের সহিত প্রস্তরের উপর হাত রাখিয়া নিহ্নবমন্ত্র বলেন । দ্যাবাপৃথিবীকে ঐ মন্ত্রে প্রণাম করা হয়। রাজা সোম দ্যাবাপৃথিবীর অপত্যস্বরূপ ; তাহাকে প্রণাম করিলে সোমেরই পূজা হয়। আতিথ্যেষ্টির পরে প্রবর্গ্য, আর উপসৎ ইষ্টি। তন্মধ্যে প্রবর্গের কথা খুলিয়া বলা আবখ্যক । ইহা যজ্ঞের মধ্যে কতকটা থাক-ছাড়া। এই কৰ্ম্মে আহুতির দ্রব্যের নাম ঘৰ্ম্ম । তপ্ত ঘৃতে ছাগলের ও গরুর দুধ মিশাইয়া গরম করিলে ঘৰ্ম্ম প্রস্তুত হয়। দেবতার নামও ঘৰ্ম্মদেবতা । সংস্কৃত ঘৰ্ম্ম শব হইতেই আমাদের বাঙ্গালা গরম শব্দ আসিয়াছে। দুধ গরম গরম দিতে হয় বলিয়া উহার নাম ঘৰ্ম্ম । মাটির ভাড়ে ঘৰ্ম্ম পাক হয় ; সেই ভাড়ের নাম মহাবীর । পুরোডাশও দিতে হয়, এই পুরোডাশের নাম রোহিণ পুরোড়াশ। ঘৰ্ম্ম পাকের জন্য পৃথক অগ্নিস্থান থাকে। গাহঁপত্যের আগুন আনিয়া সেই আগুন জালা হয়। অধ্বযু আর দুই জন