পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ф о রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র তিন বার সোমের অভিষব এবং সোমের আহুতি হয়। সোমাভিষব এবং সোমাহুতি ও তাহার আনুষঙ্গিক যাবতীয় অনুষ্ঠান, একযোগে সমুদায় কৰ্ম্মের নাম সবন । পূৰ্ব্বাহ্লে প্রাতঃসবন, মধ্যাহ্নে মাধ্যদিন সবন, অপরাহ্লে তৃতীয় সবন। সোমযাগের সঙ্গে সঙ্গে একটি পশুযাগও বিহিত। ইহার পূর্বদিন একটি পশুযাগ হইয়া গিয়াছে,—অগ্নিষোমীয় পশুযাগ ;—এ দিন আর একটি পশুযাগ হয় । এই পশুযাগের নাম সবনীয় পশুযাগ। তিন সবনে তিনটি পশুযাগ হয় না । সারা দিনে একটি। একই পশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভাগ করিয়া তিন সবনে আহুতি দেওয়া হয়। আগে বলিয়াছি, পশুযাগের সঙ্গে পুরোডাশ-যাগও থাকে। সবনীয় পশুযাগে পুরোডাশ ত থাকেই, তা ছাড়া আরও কয়েকটি দ্রব্যেৱ আহুতি হয়। যথা—ধানা, করস্ত, পরিবাপ এবং পয়স্যা । ধানা অর্থে দ্বিয়ে-ভাজা যব ; করম্ভ ঘৃতপক্ক যবের ছাতু , পরিবাপ ঘৃতপক্ক চালভাজা । দুধে দই মিশাইয়া পয়স্তা প্রস্তুত হয়। সোমরস, পশুমাংস, এবং যবভাজা প্রভৃতির নাম শুনিয়া ভৈরবীচক্রের পঞ্চ মকারের অন্তর্গত মদ্য, মাংস ও মুদ্রা আপনাদের মনে আসিবে । আপনার দেবতাদের রুচির প্রশংসা করিবেন। পূৰ্ব্বদিন সন্ধ্যায় বসতীবরী জল আনিয়া রাখা হইয়াছে, এবং যজমান পাহারা দিয়৷ জাগিয়া আছেন। অতি প্রত্যুষে তিনি ঋত্বিকৃদিগকে ঘুম ভাঙ্গাইয়া তোলেন। হোতা প্রাতরঙ্কুবাক নামক ঋকৃমন্ত্ৰ পড়িতে আরম্ভ করেন। অগ্নি, উষা এবং অশ্বিদ্বয় এই সকল মন্ত্রের দেবতা । বহু ঋক্ পাঠ করিতে হয়। পার্থী ডাকিলে মন্ত্র পাঠ সমাপ্ত হয় । কাছেই আবশ্বকমত শতাধিক বা সহস্রাধিক মন্ত্র পড়িতে হয়। বহু মন্ত্র পাঠে যজ্ঞেশ্বর প্রজাপতি সন্তুষ্ট হন । মন্ত্রপাঠ শেষ হইলে যজমান ও র্তাহার পত্নী কয়েকজন ঋত্বিক এবং পরিচারক সঙ্গে জলাশয় হইতে জল আনিতে যান। কলসীতে করিয়া জল আনেন। এই জলের নাম একধনা ৷ পূৰ্ব্বদিন সন্ধ্যায় বসতীবরী আনা হইয়াছিল ; অন্য প্রত্যুষে একধন আনা হইল। এই দুই জল খানিকটা মিশাইয়া তৃতীয় জল হয়, তাহার নাম নিগ্রাভ্য । বসতীবরী, একধনা এবং নিগ্রাভ্য, এই তিন জলই সোমরস প্রস্তুত করিবার জন্য আবশ্যক । এইবার সোমাভিযবের অর্থাৎ সোম ছেচিয়া রস নিষ্কাশনের আয়োজন। পূৰ্ব্বদিনে হবিৰ্দ্ধান গাড়ীর নীচে চারিটি গৰ্ব করিয়া রাখা হইয়াছে। এই গৰ্ত্তের নাম উপরব। গৰ্ত্তের উপর কাঠফলক চাপাইয়৷ তদুপরি গোচৰ্ম্ম বিছাইয় তাহার উপর সোমলতার টুকরা রাখিতে হয় ; পাষাণের আঘাতে থে”তলাইয়া রস বাহির করিতে হয়। পাষাণের আঘাত হয়, আর উপরবের গৰ্ত্ত হইতে গম-গম শব্দ হইতে থাকে। অধ্বযু্য, আর তিন জন ঋত্বিক পাষাণ হাতে করিয়া রস বাহির করেন। সোমের টুকরাগুলি মাঝে মাঝে নিগ্রাভ্য জলে ডুবাইয়া সরস করিয়া লইতে হয় ৷ মত ক্ষণ ছিবড়া বাহির না হয়, তত ক্ষণ রস বাহির করিতে হয়। তিন সবনেই এইরূপ করিতে হয়। প্রাতঃসবনে এবং মাধ্যদিন সবনে প্রচুর রস আবশ্বক ৷ সেই জন্য প্রাতঃসবনে সোমের প্রায় অৰ্দ্ধাংশ ছেচিতে হয়। মাধ্যদিনেও প্রায় বাকী অৰ্দ্ধেক ছেচিতে হয়। একখানা বড় টুকরা তৃতীয়