পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : গ্ৰীষ্টযজ্ঞ | จร আরোপিত হইল। Philoর ভাষায় এই শব্দ ঈশ্বর হইতে জাত, সকলের অগ্রে জাত ; তিনি আদি জীব, ইতর জীব তাহার প্রতিবিম্বরূপী ; তিনি ঈশ্বরের সহিত অবস্থান করিয়া জগদ্বিধান নিয়মিত করেন ; প্রজ্ঞা তাহার জননী ; কোথাও বা তিনি স্বয়ং প্রজ্ঞাত্মা। মুসমাচার-প্রচারক জোহেন যে আলেকৃজান্দ্রিয়া হইতে র্তাহার শব্দব্ৰহ্মকে পাইয়াছিলেন, তাহাতে কেহ সংশয় করেন না | Philo গ্রীষ্টান ছিলেন না। জোহন খ্ৰীষ্টের স্বসমাচার প্রচার করিতে বসিয়াছেন, তিনি খ্ৰীষ্টকেই শব্দব্ৰহ্মরূপে প্রচার করিলেন, এবং শব্দব্রহ্মের সমুদয় বিশেষণই খ্ৰীষ্টে আরোপ করিলেন। ঈশ্বর যে নরদেহ ধারণ করিতে পারেন, কোন জীব যে ঈশ্বর হইতে পারেন, ইহুদীর পক্ষে ইহা কল্পনাতীত। জোহন কিন্তু খ্ৰীষ্টের সেই দিকৃটাতেই জোর দিলেন। তিনি অগ্রে শব্দরূপে বিদ্যমান ছিলেন ; তিনি নরদেহ গ্রহণ করিয়া আপনাকে ক্ষুদ্র করিলেন ; জীবের মঙ্গলের জন্য আপনি জীবলীলার অভিনয় করিলেন ; খ্ৰীষ্টের ক্রসে আরোহণটাই যজ্ঞ বা আত্মোৎসর্গ, সে বিষয়ে ত সন্দেহ নাই । খ্ৰীষ্টের সমস্ত জীবনটাই যজ্ঞ ; কেন না, ঈশ্বরের জীবত্ব গ্রহণই আত্মোৎসর্গের ব্যাপার। যে বড়, সে ছোট হইলেই তাহার আত্মোৎসর্গ হইল। খ্ৰীষ্টের সমস্ত জীবনটাই যজ্ঞ । ইহা কোন আকস্মিক ঘটনা নহে ; স্থষ্টির আদি হইতেই ইহার ব্যবস্থা হইয়া আছে। খ্ৰীষ্টানের SRTB, the Incarnation and the Passion, as the Sacrament of the divine Self-sacrifice. were parts of the counsels of God from all eternity. The Logos before Incarnation was man. ঈশ্বর যে জীব হইবেন, যিনি নিত্যযুক্ত, তিনি যে বদ্ধ সাজিবেন, ইহা জগৎ স্বষ্টিরই নিগৃঢ় তাৎপৰ্য্য ; ইহাই তাহার জগতে আত্মপ্রকাশের নিগূঢ় রহস্য। আমি তুলনামূলক আলোচনায় বসিয়াছি—পুথি ঘাটিয়া খ্ৰীষ্টীয় তত্ত্বের যে তাৎপৰ্য্যটুকু বুঝিয়াছি, তাহাই আপনাদের নিকট উপস্থাপিত করিলাম। খ্ৰীষ্টানের মতে খ্ৰীষ্ট শব্দস্বরূপ, বাক্যস্বরূপ;—বেদপন্থীর ভাষায় তিনি শবব্রহ্ম, এবং বাগ দেবতা । তিনি স্বয়ং ঈশ্বর, আবার তিনি স্বয়ং জীব। তিনি একাধারে ঈশ্বর এবং জীব । মুক্ত জীবে এবং ঈশ্বরে কোন ভিন্ন ভেদ নাই। তিনি চিরমুক্ত হইয়া বদ্ধ হইয়াছিলেন–র্তাহার স্বষ্টি জগতে আত্মপ্রকাশার্থ বদ্ধ জীবরূপে আপনাকে প্রকাশ করিয়াছিলেন-ইহাতে র্তাহাকে খাট হইতে হইয়াছিল—যিনি মহৎ, তাহাকে ক্ষুদ্র হইতে হইয়াছিল, জগতের সম্মুখে আপন ঐশ্বৰ্য্য প্রদর্শনের জন্যই তিনি এইরূপে ক্ষুত্রত্ব স্বীকার করিয়াছিলেন। আমাদের ভাষায় ইহা লীলাকৈবল্য । ইহা জাগতিক বিধান–জগৎস্বষ্টিই এই আত্মবিসর্জন। যে সকল ইতর ক্ষুদ্র জীব বর্তমান,—ঈশ্বরের প্রতিবিম্বরূপ ধরিয়া যে সকল ক্ষুদ্র জীব বর্তমান—যাহারা স্বকৃত পাপের ভরে ঈশ্বর হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া দূরে রহিয়াছে, যাহারা সেই পাপের ভরে মৃত্যুর বশ হইয়াছে, অমরতা হইতে বঞ্চিত হইয়াছে—সেই অগ্রজন্ম আদি জীব এই আত্মবিসর্জন দ্বারা তাহাজের পাপ নাশ করিয়া দিলেন। তাহাদিগকে দেখাইলেন যে, পাপ চিরস্থায়ী নহে ; খ্ৰীষ্টকে জানিলেই খ্ৰীষ্টের স্বরূপ জানিলেই জীবেশ্বরের প্রকৃত সম্বন্ধ জানিলেই এই পাপ থাকিবে না, তখন সে অমরতার অধিকার পাইবে—তাহার স্বেচ্ছাকৃত বন্ধন খুলিয়া