পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ჯ) রামেঞ্জস্বন্দর রচনাসমগ্র করিয়াছিলেন, পুনরুত্থাপনের প্রয়োজন নাই। শিক্ষা যখন মানুষের গায়ে বল দেয়, অশিক্ষিত যখন দুৰ্ব্বল এবং জীবসমাজে যখন দুৰ্ব্বলের স্থান নাই, তখন শিক্ষাবিস্তারের আবশ্যকতা স্বতঃসিদ্ধ সত্য ; ইহাতে কোনরূপ বাকৃচাতুরীর অবসর নাই। বড় বড় দেশে সকলেই এই স্বতঃসিদ্ধ সত্য মানিয়া লইয়। আপামর সাধারণকে শিক্ষিত করিয়া জীবনযুদ্ধে বলীয়ান করিয়া লইবার চেষ্টা করিয়াছে ও করিতেছে ; রাষ্ট্রভাণ্ডারে অর্থাভাব বা অন্য কোন অভাব এই চেষ্টার প্রতিকূলতা করিতে পারে না। কিন্তু আমাদের দেশে অবস্থাভেদে ব্যবস্থা স্বতন্ত্র হইয়া থাকে। কাজেই গোখলে মহাশয়ের প্রস্তাবের সদগতি দেখিয়া বিস্মিত হইবার সম্যক হেতু নাই। প্রস্তাব পরিত্যক্ত হওয়াতে বিস্ময় নাই বটে, কিন্তু কি জানি, যদি নূতন ব্যবস্থাপক সভা প্রস্তাবটা গ্রহণ করিয়াই বসেন এবং ভারত গবর্মেন্টও তদনুসারে দেশের ছেলেগুলাকে দশটা হইতে পাচটা পৰ্য্যস্ত পাঠশালায় পুরিবার ব্যবস্থা করিয়া ফেলেন, এই আশঙ্কা একটু না ছিল, এমন বলিতে পারি না। বিশেষতঃ দেশের সমুদয় খবরের কাগজ যখন সমস্বরে বলিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন, ভারত জুড়িয়া শিশু-কারাগার স্থাপন ভারতউদ্ধারের পক্ষে নিতান্ত আবখ্যক হইয়া পড়িয়াছে। আমার কৰ্ত্তব্য এই যে, লোকশিক্ষার আবশ্বকতা স্বতঃসিদ্ধ স্বীকার করিয়া লইলে ও পাঠাগারের নামে কারাগার স্থাপনকে অত্যাবশ্বক বলিয়া গ্রহণ করিতে কিঞ্চিৎ সংকোচ হইতে পারে এবং দেশে বৰ্ত্তমান কালে যে নিম্নশিক্ষার প্রণালী বর্তমান আছে, তাহাতে পাঠশালার সহিত কারাগারের ভেদকল্পনায় কিছু অতিরিক্ত বুদ্ধি খরচ করিতে হয়। শিক্ষার উদ্দেশ্রোর মহত্ত্ব সম্বন্ধে প্রকাগু একখানি বহি লেখা যাইতে পারে, অথবা বহি লিখিয়া একট লাইব্রেরি করা যাইতে পারে ; কিন্তু লোকশিক্ষার উদ্দেশু কি, তৎসম্বন্ধে সকলেরই একটা মোটামুটি ধারণ আছে। সে বিষয়ে বাগ বাহুল্য অনাবশ্বক। মচুন্যজন্মলাভ মনুষের পক্ষে দুর্ভাগ্য, কি সৌভাগ্য, সে বিষয়ে মতভেদ থাকিলেও, যখন নিতান্তই বাধ্য হইয়া জন্মগ্রহণ করিতে হইয়াছে, তখন যতদূর পারা যায়, জন্মকে সার্থক করিয়া যাওয়া কৰ্ত্তব্য, এ বিষয়ে বড় মতভেদ নাই। কিরূপে উহা সার্থক হইবে, এ বিষয়ে মতভেদ আছে বটে। সৎপথে থাকিয়া জীবনের কৰ্ত্তব্যগুলা যথাজান ও যথাশক্তি সম্পন্ন করিয়া যাইতে পারিলেই হাজারের মধ্যে ন শ নিরানব্বই জনের পক্ষে যথেষ্ট। যথেষ্ট—কেন না, এই কৰ্ত্তব্য সাধনের পথেও নানা বিঘ্ন, নানা অস্তরায়। তাকিক এইখানে তর্ক তুলিতে পারেন, জীবনের কৰ্ত্তব্য কি, তাহা স্পষ্টভাবে বলিয়৷ দাও ; কেন না তাহাতেও পণ্ডিতে পণ্ডিতে মতভেদ রহিয়াছে। তর্কের মধ্যে এই কৰ্ত্তব্য যেরূপই নিৰ্দ্ধারিত হউক না, সেই কৰ্ত্তব্য যথাঞ্জান ও ਬਖ਼ੀ সাধিত হইলেই জীবন সফল হইল, স্কুল কথা । ইহাতে কেহ তর্ক তুলিবেন না। যথাঞ্জান ও যথাশক্তি' এই দুইটা কথাতেই শিক্ষার সমস্ত নিহিত আছে। শিক্ষার উদ্বেগু হইতেছে জ্ঞানের বর্দ্ধন ও শক্তির বদ্ধন। জ্ঞান ও শক্তি যাহার যতট, তাহার কর্তব্যসাধনে সফলতাও ততটা। বিধাতা সকলকে সমান পরিমাণে জ্ঞান ও শক্তি দিয়া জগতে প্রেরণ করেন নাই। তবে তাহার অনুগ্রহ এই যে, অধিকাংশকে একেবারে বঞ্চিত করেন নাই। তিনি কিছু