পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У о রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র হইয়া যাত্রার দল করে ও গাজা খায়। অধিকাংশ ছেলের প্রাইমারি ইস্কুলে অজিত বিদ্যার এই পরিণাম । ফলে, শিক্ষার সহিত আমার বিরোধ নাই, শিক্ষাপ্রণালীর সহিত আমার বিরোধ ; শিক্ষা বিডম্বনার সহিত আমার বিরোধ। অন্য দেশের কথা উপস্থিত করিবার দরকার নাই ; আমাদের দেশে বর্তমান কালে যে শিক্ষাবিড়ম্বন বৰ্ত্তমান আছে, তৎসম্বন্ধেই আমি এই প্রসঙ্গ উপস্থিত করিতেছি। যত দিন এই শিক্ষাপ্রণালীর আমূল সংস্করণ ন হইতেছে, তত দিন আমি এই শিক্ষাবিস্তারের প্রস্তাবে কিছু আতঙ্ক অতুভব করিব। কিছুদিন পূর্বে এ দেশের খাটি স্বদেশী.পাঠশালায় নিম্নশিক্ষার যে প্রণালী ছিল, শিশুবোধকের চাণক্যশ্লোকেও দাতা কর্ণের উপাখ্যানেই যাহার সমাপ্তি ঘটিত, শিশুজনভয়াকব গুরুমহাশয় যে শিক্ষাপ্রণালীর পরিচালনে সৰ্ব্বতোমুখ প্রভুত্ব নিয়োগ করিতেন, সেই প্রণালীতে নান| দোষ বর্তমান ছিল, সন্দেহ নাই । কয়েক বৎসর মধ্যে এ দেশেব লোকশিক্ষা একবারে গবর্মেণ্টের অধীন হইয়াছে , বড় বড় মনীষী পণ্ডিতের ধীশক্তি এই বিষয়ে নিযুক্ত রহিয়াছে। কিন্তু এই আধুনিক শিক্ষাপ্রণালীতে যে সকল দোষ প্রবেশ কবিয়াছে, তাহ পূৰ্ব্বেব তুলনায় গুরুতর কি না, তাহ বিচারের সময় আসিয়াছে। এই শিক্ষাপ্রণালী দোষযুক্ত, তাহ গবর্মেন্ট মানিয়া লইয়াছেন , সংস্কারেব ও প্রচুব চেষ্ট৷ হইয়াছে। কিন্তু যে কারণেই হউক, সংস্কারচেষ্টা এখনও কোন ফল লাভ করে নাই। ইনস্পেক্টরের সংখ্য। অতিমাত্রায় বাডিলেও কোন ফলই পাওয়া যায় নাই , বহু স্থলে সংস্কারচেষ্ট হাস্যরসের স্বষ্টি কবিয়াছে মাত্র। যত দিন বর্তমান শিক্ষাপ্রণালী প্রচলিত থাকিবে, তত দিন কোন বালককে এই শিক্ষাগ্রহণে বাধ্য করা উচিত কি না, তাহারই বিচাবের জন্য আমি এই প্রসঙ্গ উপস্থিত করিয়াছি। লোকশিক্ষার বিচার আবশ্যক, ইহা স্বতঃসিদ্ধ সত্য, এ সম্বন্ধে আমার কোনও বক্তব্যই নাই। কিন্তু শিক্ষার নামে অপশিক্ষার প্রশ্রয় দেওয়া উচিত কি না, তাহাই বিচাৰ্য্য। পাঠাগারের নামে কারাগারে বালকগণকে প্রেবণ করিয়া তাহাদের জীবনশক্তির ধ্বংসসাধনে উদ্যোগ উচিত কি না, তাহারই আমি মীমাংসা চাহিতেছি । ( 'প্রবাসী, বৈশাখ ১৩১৭) যন্ত্রবদ্ধ শিক্ষাপ্রণালী আমি নিজে শোণপুরেব মেলা দেখি নাই, কিন্তু আমার কোন মান্য বন্ধুর নিকট মেলার গল্প শুনিয়াছি। মেলার দিন নির্দিষ্ট আছে, কিন্তু কে কবে ঐ দিন নিদিষ্ট করিয়াছে, তৎসম্বন্ধে কোন জনশ্রুতি নাই। মেলার জন্য কেহ কোন বিজ্ঞাপন বাহির করে না, পূৰ্ব্ব হইতে কোন আয়োজন করে না। যথাসময়ে মেলার ক্ষেত্রে লোকজন জিনিষপত্র আসিতে আরম্ভ হয়। বহু কাল হইতে যে জিনিষের ষে স্থান নিদিষ্ট আছে, সেই জিনিষ আসিয়া স্তুপীকৃত হইতে থাকে। স্থানের জন্য কোনরূপ বিবাদ বিসম্বাদ হয় না। হাতীর স্থানে হাতী, ঘোড়ার স্থানে ঘোড়া, গরুর স্থানে গরু—গণ্ডায় গণ্ডায়, দশে দশে বা শতে শতে আসিয়া উপস্থিত হয়। দিগ দিগন্ত হইতে ব্যবসায়ী ক্রেতার আসে, হাজার হাজার টাকার দ্রব্য দিন দিন বিক্রয় হয়, কোনরূপ শান্তিভঙ্গ হয় না, কোনরূপ গণ্ডগোল