পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

షి a R রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র হইবার সম্ভাবনা থাকিত না । বঙ্কিমচন্দ্রকেই আমরা এদেশে মাসিকপত্রের প্রবক্তক বলিয়। নির্দেশ করিতে পারি } 'বঙ্গদর্শনের পূর্বেও অনেক মাসিকপত্রিক বাহির হইয়াছিল, কিন্তু তাহাতেও কিযেন-কি একটার অভাব ছিল, তাই তাহার। সাহিত্য-সমাজে প্রভুত্ব বিস্তার করিতে পারে নাই । বঙ্গদর্শন'ই প্রথমে ভবিষ্যতের মাসিকপত্রের রচনারীতি ও সঙ্কলনরীতি নিদিষ্ট করিয়া দিল ; তদবধি সেই রীতি মাসিকপত্রের সম্পাদকগণ কর্তৃক অন্তস্তত হইয়াছে। ইহার পূৰ্ব্বে মাসিকপত্র দাড়াইয় ছিল। বঙ্কিমচন্দ্রের হুস্তের প্রেরণ। পাইয়াই মাসিকপত্র বঙ্গসাহিত্যে চলিতে লাগিল । নবেলের মত এই মাসিক সাহিত্যও বিদেশ হইতে এদেশে আমদানি । এক দেশের গাছের বীজ আনিয়া অন্য দেশে উহার চাষের চেষ্টা বহু দিন হইতে প্রচলিত আছে। তাঞ্জ ক্ষুব্ধ ভারতবর্ষ বিদেশেব দ্রব্য গ্রহণ করিব না বলিয়া আস্ফালন করিতেছে, কিন্তু বিদেশী জিনিষকে স্বদেশে স্থান দিতে ভারতবর্ষের কোন কালে আপত্তি ছিল না। আলুব বাজ ও পেপের বীজ বিদেশ হইতেই এদেশে আসিয়াছিল , এল' আফিমেব জন্য ও তামাকের জন্য ভারতবাসী বিদেশের নিকট চিরঋণে আবদ্ধ আছেন। অজ্ঞাতকুলশীল অতিথিকে আপন ঘরে স্থান দিতে ভারতবাসী কস্মিন কালে কুষ্ঠাবোধ করে নাই। বিদেশের সামগ্রী গ্রহণ করিতে আমাদের কোন কালেই ঔদার্য্যের অভাব ছিল না । বিদেশের সকল বীজ এদেশের ক্ষেতে ধরে না, কিন্তু কোন কোনটা বেশ ধরিয়া যায়। কোন কোন বীজ ফলাইবার জন্য চাষের প্রণালীকে ক্ষেতের অনুযায়ী করিয়া লইতে হয়। নবেলের বীজ ও মাসিক পত্রিকার বীজ বঙ্কিমচন্দ্রের পূর্বেই আসিয়াছিল ;–যাহাব উহার আমদানি করিয়াছিলেন, তাহারা উহ। ফলাইতে পারেন নাই । বঙ্কিমচন্দ্র যে দিন চাষের ভার গ্রহণ করিলেন, সেই দিন উহা জমিতে লাগিয়া গেল ; এখন উহার শস্ত্য সম্পত্তিতে সুজল| সুফল বঙ্গধরিত্রী ভারাক্রাস্ত হইয়া পডিয়াছেন বলিলেও অতু্যক্তি হইবে না। আফিম এব" তামাক, এই দুই উপাদেয় ফসল এদেশের জমিতে যেমন লাগিয়া গিয়ছে, নবেলের এবং মাসিক পত্রিকার শস্যসম্পং কিছুতেই তাহার নিকট নূ্যনত স্বীকাব কবিবে না ! বাঙ্গালায় নবেল-সাহিত্যের ও মাসিক-সাহিত্যের স্বষ্টি করিয়া বঙ্কিমচন্দ্ৰ যশস্বী হইয়া গিয়াছেন, কিন্তু তিনি তার অপেক্ষাও বড় কাজ করিয়া গিয়াছেন । বাঙ্গলা-সাহিত্যে তাহার কোন, কাজ সৰ্ব্বাপেক্ষা বৃহৎ, তাহ জিজ্ঞাস করিলে আমি বলিব, তিনি সাহিত্য উপলক্ষ্য করিয়া আমাদিগকে আপন ঘরে ফিরিতে বলিয়াছেন এবং সে বিষয়ে তিনি যেমন কতকাৰ্য্য হইয়াছেন, অন্য কেহই সেরূপ হন নাই। বিদেশের ভাষা অবলম্বন করিয়৷ আমরা যে বড় হইতে পারিব ম, বিদেশের ভাষার সাহায্যে সাহিত্য স্বষ্টি করিয়া বড় হইবার চেষ্টা ষে অস্বাভাবিক ও উপহাস্য, তাহ বঙ্কিমচন্দ্রই আমাদিগকে বুঝাইয়া গিয়াছেন। বঙ্কিমচন্দ্রের বহু পূর্বে মহাত্মা রামমোহন রায় দেশের লোকের সঙ্গে কথা কহিবার জন্য দেশের ভাষারই আশ্রয় লইয়াছিলেন ; তিনি বাঙ্গলায় সাময়িক-পত্র