পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত-কথা : অধ্যাপক মক্ষমূলর ২১৭ দ্রব্য দৈর্ঘ্যে তৃতীয় প্রব্যের সমান হইলে তাহাবাও পরস্পর সমান, কে বলিল, ইহা অখণ্ডনীয় স্বতঃসিদ্ধ ? মনুষ্যজাতি আবহমান কাল হক্টতে কতকগুলি বাক্যকে অভ্রাস্ত সত্য বলিয়া গ্রহণ করিয়া আসিতেছে। মানুষের মতে ইহারা সত্য, ইহারা স্বতঃসিদ্ধ। মানুষের সংস্কার যে, ইঙ্গাদিগকে স্বতঃসিদ্ধ বলিয়া না ধরিলে জীবনযাত্রা যেন চলিবে না, যেন জগৎপ্রণালী উন্টাইয়া যাইবে, যেন জগদ্যস্থ বিপৰ্য্যস্ত হইবে। বিখ্যাত দার্শনিক ইমামুয়েল কাণ্ট এইরূপ অধিকাংশ সত্যের স্বতঃসিদ্ধতার মলে কুঠারাসাত করিয়াছিলেন। তিনি দেখাইয়াছিলেন যে, যাহা প্রকৃতিনিদিষ্ট প্রকৃতিগত সত্য বলিয়া মানিতেছ, তাহ প্রকৃতপক্ষে মানুষেরই সুবিধার জন্য মহুষ্যকত্বক স্পষ্ট বা কল্পিত , মানুষেরই হাতগড পৰ্ব্বলী । কিন্তু জ্যামিতি-বিদ্যার মল সত্যগুলির স্বতঃসিদ্ধতায় সন্দেহ করিতে ঠমাতৃয়েল কাণ্ট ও সাহসী হয়েন নাই। হেলমহোলৎজ জ্যামিতি-পাকত স্বতঃসিদ্ধের স্বরূপ উদঘাটিত করেন। তিনি প্রথমে দেখান, মন্তয্যের মনের বাহিরে সূত্যও কিছুই নাই, স্বতঃসিদ্ধও কিছুই নাই। বিষয়টি বড় গুরুতর, এই ক্ষুদ্র প্রবন্ধে উল্লেখ মাত্র কবিয়াত নিবন্স থাকিতে হইল । অধ্যাপক মক্ষমূলর ভারতবাসীর নিকট অধ্যাপক মক্ষমূলেপ নাম যতটা পবিচিত ছিল, বোধ করি আর কোন বৈদেশিক পণ্ডিতের নাম ততটা পরিচিত ছিল না। তাহার অপেক্ষাও কৃতকৰ্ম্ম প্রতিভাশালী ব্যক্তি বিদেশে জন্মিয়াছেন এবং এখনও হয়ত বর্তমান আছেন । কিন্তু ভারতবাসীর সহিত র্তাহাদের তেমন পরিচয় নাই ; শিক্ষিতগণেব মধ্যে অনেকে তাহদের নাম শুনিয়াছেন, অনেকে র্তাহাদের পাণ্ডিত্যে ও প্রতিভায় মুগ্ধ থাকিতে পাবেন, কিন্তু আমাদের দেশে অশিক্ষিত সম্প্রদায়েল মধ্যেও মক্ষমূলরের নাম শুনিয়াছেন, এমন উদাহরণ বিরল নহে । মক্ষমূলরের জীবনচরিত আমাদের সাময়িক পত্রাদিতে পুনঃ পুন: কীৰ্ত্তিত হইয়াছে ; সেই জীবনচরিত পুনবায় কীৰ্ত্তনের সম্প্রতি আবশ্বকতা দেখি না। কিন্তু মক্ষমূলরের পণ্ডিত্যে এমন কোন বৈশিষ্ট্য ছিল এবং আমাদের সহিত র্তাহাব এমন একটা বিশিষ্ট সম্বন্ধ ছিল, যে স্বত্রে তিনি আমাদের মধ্যে এতটা থ্যাতি লাভ করিয়াছিলেন। 曾 মক্ষমূলর সংস্কৃত শাস্ত্রে অভিজ্ঞতার জন্যই আমাদের দেশে বিখ্যাত ; প্রকৃতপক্ষে কিন্তু তিনি বিবিধ ভাষায় অভিজ্ঞ ছিলেন । বৰ্ত্তমান কালের ভাষাবিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বলিয়। র্তাহাকে গণ্য করিলে ভুল হইবে না। স্ববিখ্যাত সার উইলিয়ম জোন্স যে দিন সংস্কৃত সাহিত্য নামে একট। অতি প্রাচীন সাহিত্য আছে, এই তথ্য আবিষ্কার করিয়া ফেললেন, সেই দিনই বর্তমান কালে ভাষাবিজ্ঞানের জন্মদিন বলিয়। গণ্য করিতে হয়। তৎপূৰ্ব্বে ইউরোপের পণ্ডিতেরা যেমন যাবতীয় মানবকে ইহুদী জাতি-বণিত আদি মানব আদমের সন্তান বলিয়া স্থির করিতেন, সেইরূপ সভ্যজাতির কথিত ভাষাসমূহকে ইহুদী জাতির ভাষা হইতে উৎপন্ন বলিয়া প্রতিপন্ন করিতে প্রয়াস পাইতেন। সংস্কৃত ভাষা ও সংস্কৃত সাহিত্য পাশ্চাত্য দেশে আবিষ্কৃত