পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨૨ রামেন্দ্রস্থনর রচনাসমগ্র স্পাদিত হইত, ইহা তিনি বুঝিতেন ; এবং বাক্যের দ্বারা এবং কার্য্যের দ্বারা তাহার সেই মনোভাবের পরিচয় দিতেন। সুতরাং আমরা সেই স্বর্গগত আচার্য্যের নিকট চিরঋণী ও চিরকৃতজ্ঞতাস্থত্রে আবদ্ধ । বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের জন্মাবধি র্যাহার। ইহার সহিত সংস্পষ্ট আছেন, তাহাদের স্মরণ থাকিতে পারে, সাহিত্য-পরিষৎ স্থাপনের সময় উপদেশ যাজ্ঞা করিয়া মক্ষমূলরকে পত্র লেখা হইয়াছিল। মক্ষমূলর সেই পত্রের উত্তরে নবীন পরিষৎকে কয়েকটি ছোটখাট উপদেশ দিয়াছিলেন। একটা উপদেশ এইরূপ । বাঙ্গলা দেশের প্রত্যেক, গ্রামের ও প্রত্যেক নদ নদী, বিল খাল প্রভৃতির নাম সংগ্ৰহ করিয়া, সেই সেই নামের উৎপত্তি নির্ণয়ের চেষ্টা পরিষদের একটা কৰ্ত্তব্য হওয়া উচিত। বলা বাহুল্য যে, কাজট অতি ছোট , এবং আমাদের পরিষৎ এ পৰ্য্যন্ত এত ছোট কাজে হ , পিণ করিয়া আপনার মহত্ত্বকে সঙ্কুচিত করিতে সাহস করেন নাই । কিন্তু পরিষদের জানা উচিত ছিল যে, ছোট বীজ হইতে বড় গাছ হয় ; এবং ছোট কাজের মাহাত্ম্য যাহার উপলব্ধি করিতে পারিয়াছেন, তাহারাই বড় কাজের সম্পাদনে সমর্থ হয়েন। রোম-সাম্রাজ্যের ইতিহাসলেখক যদি কেহ না থাকিত, তাহা হইলেও বৰ্ত্তমান ইংলণ্ডের গ্রামগুলির ও নগরগুলির নামতত্ত্বের আলোচন কারয়| সেই দেশে রোমেব প্রভুত্বের কথ। আবিষ্কৃত হইতে পারিত। সেইরূপ এই ছোট কাজে লাঙ্গাল দেশের বিস্মৃত অতীত ইতিহাসের কোন অ’শ উদঘাটিত হষ্টতে পারে ন৷ পারে, তাহা আমরা কিরূপে বলিব ? মক্ষমূলর স্বয়ং ছোট কাজকে অবজ্ঞা করিতেন না। কোথায দেখিয়ছিলাম মনে হইতেছে না, মক্ষমূলর বিভিন্ন ভাষায় বিডালের নামেব ইতিবৃত্ত অতি গম্ভীরভাবে আলোচনা করিতেছেন। প্রাচীন গ্রীসের ও প্রাচীন ইউরোপের প্রাচীনতম সাহিত্যে না কি বিডালের কোন উল্লেখ নাই। আমাদের সংস্কৃত প্রাচীনতম সাহিত্যেও অনেক জন্তুর নাম আছে, বিড়ালেব না কি নাম নাই। বৈদূৰ্য্য নামক রত্ন, ইংরাজীতে যাহাকে cat's eye বলে, উহাকে বিড়াল শব হইতে ব্যুৎপন্ন করা যাইতে পারে ; কিন্তু এই বৈদূৰ্য্য রত্বেরও না কি অতি প্রাচীন সাহিত্যে নাম নাই। কাজেই অনুমান হইতে পারে যে, প্রাচীন আর্য্য জাতির মধ্যে এবং আর্য্য জাতির বিভিন্ন শাখা যে সকল দেশে উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছিল, সেই সকল দেশে বিড়াল ছিল না। তার বহু দিন পরে কোন সময়ে আলুর মত ও তামাকের মত কোন অনাৰ্য্য বিদেশ হইতে বিড়াল আসিয়া আৰ্য্যদেশমধ্যে ও আর্য্যগৃহমধ্যে ও আর্য্য-সাহিত্যমধ্যে চিরস্থায়ী স্থান লাভ করিয়াছে। সেই বিদেশী বিড়াল জাতির স্বর্গাদপি গরীয়লী আদি মাতৃভূমি কোন দেশ ? সম্ভবতঃ উহা মিশরদেশ ; মিশরদেশে অতি প্রাচীনকালে বিড়ালদেবতা পূজা পাইতেন ; এবং সম্ভবতঃ প্রাচীন মিশবদেশে, ব্যাঘ্রজাতীয় কোন আরণ্য জন্তু গ্ৰাম্যতাপাদিত হইয়া বিড়ালরূপ ধারণ করিয়াছিলেন । পবে কালক্রমে মিশর হইতে বিড়ালের আধিপত্য অন্যান্য স্থলে বিস্তৃত হয়। এই অনুমান যদি সত্য হয়, তাহা হইলে জীবতত্ত্ববিদেরা ভাষাতত্ত্বের নিকট আর একটা ঋণ গ্রহণ করিবেন । মক্ষমূলরের অনুমাম সঙ্গত, কি অসঙ্গত, তাহ বিচাব করিবার