চরিত-কথা ঃ রজনীকান্ত গুপ্ত ר 9\ב কিরূপ হওয়া উচিত, পরিষৎ পত্রিকার আলোচনার বিষয় কিরূপ হওয়া উচিত, এই সকল বিষয় লইয়া তিনি সৰ্ব্বদাই আলোচনা করিতেন । সাহিত্য-পরিষৎ যে যে প্রধান কার্য্যে এ পর্য্যন্ত হস্তক্ষেপ করিয়াছেন, রজনীকান্ত সেই সকল কার্য্যেই প্রধান উদূযোগী ছিলেন। র্তাহারই প্রস্তাবে পরিষদের পরিভাষা সমতি ও ব্যাকরণ-সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনিই উৎরষ্ট গ্রন্থ প্রকাশ দ্বারা বঙ্গসাহিত্যকে পরিপূর্ণ করিবার উদ্দেশ্যে পরিষদে গ্রন্থরচনা-সমিতি স্থাপনার প্রস্তাব করেন। প্রস্টাবে সাহিত্য-পরিষৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙ্গালাভাষার ও বাঙ্গালা-সাহিত্যের আলোচনা প্রবেশ করাইবার জন্য চেষ্টা কবৈন। পরিষদেব প্রস্তার তখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সর্বাংশে গৃহীত হয় নাই ; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাষ্ট আর্টস ও বি. এ. পরীক্ষায় বাঙ্গালা রচনার পরীক্ষা প্রচলিত লইয়াiছল । ইহার পর হইতেই রজনীকান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কত্ত্বক বাঙ্গালা রচনা বিষয়ে অন্যতম পরীক্ষক নিযুক্ত হইয়া আসিতেছিলেন। কবিবর হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে অর্থ সাহায্য করিবার জন্য পরিষং কর্তৃক ও পরিষদের বাহিরে যে চেষ্টা হয়, রজনীবাবু তাহাতে আন্তরিক উৎসাহের সাহত যোগ দিয়া।ছলেন । এই চেষ্টার আংশিক সফলতা তাহার নিরতিশয় আনন্দের কারণ হইয়াছিল। রজনীকান্ত কোনরূপ সঙ্কীর্ণ ভাব বা গোডাiমর প্রশ্ৰয় দিতেন না। তিনি ভিন্নমতাবলম্বাদিগকেও শ্রদ্ধা করতে পারিতেন। রাজনীতি বিষয়ে তিনি উদাবমতাবলম্বা ছিলেন । কটন সাহেবের নিউ ইণ্ডিয়া প্রচারিত হইবা মাত্র তিনি ঐ গ্রন্থের অনুবাদ ব-সমাজে প্রচার করেন। বাঙ্গালা-সাহিত্যের ইতিহাসে রজনীকাস্তের স্থান কোথায়, তাহা নির্ণয়ের এ সময় নহে। স্বাধীনভাবে ভারতবর্ষের আধুনিক ইতিহাস আলোচনায় তনিই পথপ্রদর্শক। তৎপূর্বে ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল মিত্র, ডাক্তার রঞ্চমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, বাৰু রামদাস সেন প্রভৃতি ভারতবর্যের পুরাতত্ত্বের স্বাধীন আলোচনা আরম্ভ করিয়া ছলেন। রজনীকান্তের প্রথম গ্রন্থ ‘জয়দেব-চরিত’ ও ‘পাণিনি দেখিলে মনে হয়, তাহার ও বোধ করি সেই পুরাতত্ত্ব আলোচনার দিকেই প্রথমতঃ প্রবৃত্তি ছিল। কিন্তু শীঘ্রই তিনি উহ ত্যাগ করিয়া ভারতবর্ষের আধুনিক ইতিহাসের আলোচনায় প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। বাঙ্গালা সাহিত্যের জন্য রজনীকান্ত যে কাৰ্য্য করিয়াছেন, তাহার মূলে একটা কথা পাওয়া যায় ; – স্বজাতীর প্রতি র্তাহর আন্তরিক অঙ্গরাগ। এই অনুরাগই প্রথমত র্তাহাকে পুরাতত্ত্ব আলোচনায় প্রবৃত্ত করিয়াiছল ; এই অনুরাগই তাহাকে পরে ভারতবর্ষের আধুনিক ইতিহাসের স্বাধন সমালোচনায় প্রবৃত্ত করে। বাঙ্গালীর পক্ষে স্বাধীন ভাবে ইতিহাস আলোচনার পথ নিতান্ত সরল নহে। প্রথমতঃ ইতিহাসের উপাদান সংগ্রহের জন্য বৈদেশিক লেখকের আশ্রয় গ্রহণ করিতে হয়। আপন দেশের ঐতিহাসিক ঘটনাবলী লিপিবদ্ধ করিয়া রাখা বা স্মরণে রাখা আমাদের স্বভাব নহে। সিপাহী-যুদ্ধের মত নিতান্ত আধুনিক ঘটনা সম্বন্ধেও এ দেশের লোক কোন কথা লিপিবদ্ধ করিয়া রাখা কৰ্ত্তবা বোধ করে নাই । তৎকালবৰ্ত্তী প্রাচীন লোক যাহারা বৰ্ত্তমান আছেন, তাহাদের স্মৃতিশক্তির উপর কোন ঐতিহাসিক সম্পূর্ণ নিভর কারতে পারেন না। ইংরাজীতে এই একটা ঘটন। লইয়া এত গ্রন্থ রচিত হইয়াছে যে, তাহাতে
পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৪১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikisource/bn/thumb/2/24/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%B0_%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1.djvu/page241-1024px-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%B0_%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1.djvu.jpg)