পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাশীরাম দাসের বংশপরিচয় ও কালনির্ণয় a載W* সবে মাত্র ভরসা আছয়ে এক আর । গদাধর করিয়াছে ভরসা যাহার ॥ পতিত পাবন দীনবন্ধু নাম যার ॥ তার মন * * কঙ্গেতে বিস্তার। সেই নাম বিনে নাঞি আমার নিস্তার। জগৎমঙ্গল কহে গদাধর দাস ॥ জগন্নাথমঙ্গল রচনার তারিখ জন ১০৫০ সাল। ঐ সনে শকাব ১৫৬৫ হয়। কিন্তু একখানি পুথিতে ১৫৬৪, অন্যথানিতে ১৫৬৭ দেখা যাইতেছে ; সম্ভবতঃ ইহা লিপিকরের প্রমাদ। আর এক কথা উৎকলের রাজা নরসিংহদেবের রাজত্বের পঞ্চদশ বৎসরে গ্রন্থ লিখিত হইয়াiছল। এই নরসিংহ দেবের সম্বন্ধে হাঁটার সাহেবের উড়িষ্যা সম্বন্ধীয় গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডের পরিশিষ্টে উদ্ধত উডিয়ার রাজগণের তালিকায় কিঞ্চিং বিবরণ আছে। হণ্টার সাহেবের তালিকানুসারে নরসিংহদেবের রাজত্ব ১৬২৮ খ্ৰীঃ অব্দে আরম্ভ ধরিলে তাহার পঞ্চদশ বর্ষ ১৬৪৩ হয়। ইংরাজী ১৬৪৩ খ্ৰীঃ অব্দ বাঙ্গাল ১০৫০ সাল। ঐ সময়েই জগন্নাথমঙ্গল রচিত হয় । বিশ্বকোষ কাৰ্য্যালয়ের পুথি অনুসারে ইহার পূর্বেই শ্ৰীকৃষ্ণদাস “কৃষ্ণের গুণ” রচনা করেন ও শ্ৰীকাশীদাস "ভারত পুৰাণ” রচনা করেন। জেমের পুথিতে এই উল্লেখটা নাই। রাইপুবের রাজবাড়ীর পুথি প্রকৃত হইলে তাহাই সমধিত হয়। মহাভারত রচনার সময় যাহাই হউক, কাশীদাসের কাল সম্বন্ধে আর সংশয় রহিল না । কাশীদাশ মহাভারত রচনা অসম্পূর্ণ করিয়া পরলোকে যান, এইরূপ একটা প্রবাদ আছে । জগন্নাথমঙ্গলে গ্রন্থকার ও র্তাহার ভ্রাতৃদ্বয়ের নামের পূর্বে "শ্ৰী যোগ থাকায় তিন ভ্রাতাই ১০৫০ সালে বর্তমান ছিলেন, এরূপ বুঝায় কি না পাঠকগণের বিবেচ্য। তাহা হইলে ঐ প্রবাদ অমূলক। কাশীদাসের তিন ভ্রাতাই বৈষ্ণব ও কাব্যামোদী ছিলেন। কৃষ্ণদাসের রচিত গ্রন্থের নাম কি, তাহ জানা গেল না। গদাধরের নাম বঙ্গসাহিত্যে ইহার পূর্ব হইতেই পরিচিত ছিল ; তাহার গ্রন্থের কথা এত দিনে প্রকাশিত হইল। গ্রন্থখানির একট পরিচয় দিব । গ্রন্থকার সম্ভবতঃ উৎকলে বাস করিতেন। দুর্গাদাস চক্ৰবৰ্ত্তীর নিকট স্কন্দপুরাণান্তর্গত উংকলের কথা শুনিয়া তদবলম্বনে এই গ্রন্থ রচনা করেন। গ্রন্থে মহৰ্ষি জৈমিনি ( জয়মুনি ) বক্তা, নৈমিষারণ্যে ঋষিগণ শ্রোত। আরম্ভে নারায়ণ, জগন্নাথ, চৈতন্যদেব, দশাবতার, গুরু ও বৈষ্ণব ইহাদের বন্দনার পর গ্রন্থকারের পূৰ্ব্বোন্ধত পরিচয় ও তৎপরে জৈমিনি মুথে কথারম্ভ। গ্রন্থোক্ত বিষয়ের নির্ঘণ্ট কতকটা এইরূপ,-নীলাদ্রিমাহাত্ম্য, ইন্দ্ৰদ্যুম্নের উপাখ্যান, ইন্দ্ৰন্ধ্যমের পুণ্যক্ষেত্র অন্বেষণ, সমুদ্রতীরে শবর বিশ্বাবস্থ কর্তৃক অচিত নীলমাধবের আবিষ্কার, ইন্দ্ৰদ্যুমের উৎকল গমন ও নীলমাধবের অন্তৰ্দ্ধান, ইন্দ্ৰদ্যুমের অশ্বমেধ যজ্ঞ, শ্বেত দ্বীপ হইতে আগত সমুদ্র জলে ভাসমান দারু প্রাপ্তি, দারু হইতে জগন্নাথ, বলরাম, স্বভদ্র ও সুদৰ্শন চক্রের নিৰ্ম্মাণ, ইন্দ্ৰদ্যুম্নের ব্রহ্মলোক যাত্রা, ব্ৰহ্মা স্বয়ং আসিয়া জগন্নাথাদির প্রতিষ্ঠা করেন, রথযাত্রার উৎপত্তি ও বিবরণ, বিবিধ ধাত্রার বর্ণমা, ক্ষেত্রমাহাত্ম্য, মহাপ্রসাদমাহাত্ম্য, কলির বর্ণনা, গ্র শেষে গ্রন্থের উৎপত্তি বর্ণনা । গ্রন্থের কবিত্ব প্রাঞ্চল ও সরস। রচনার গুণে তীর্থমাহাত্ম্য বর্ণনাও নীরস হয়