পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চট্টগ্রাম সাহিত্য সম্মিলনে নিবেদন Հb է স্বরূপ হইয়াছে। আজিকার এই শুভ যোগ উপলক্ষ্যে র্যাহারা চট্টগ্রামে তীর্থযাত্রী; র্তাহাদের সাহচৰ্য্য লাভে বঞ্চিত হইয়া আমি ক্ষুব্ধ ও পরিতপ্ত। আমার ক্ষোভের আর একটা প্রবল হেতু আছে। গত বৎসর হুগলী নগরে বঙ্গীয়-সাহিত্য-সম্মিলনের অধিবেশনে যিনি হুগলীর পক্ষ হইতে বঙ্গের সাহিত্যসেবকগণের অভ্যর্থনা করিয়াছিলেন, তিনিই আজ আমাদের সৌভাগ্যক্রমে চট্টগ্রামের এই ষষ্ঠ অধিবেশনে সভাপতির আসন গ্রহণ করিয়া সম্মিলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করিয়াছেন। গত বৎসর তিনি আমাকে তাহার সাহিত্যশিষ্ণু বলিয়া পরিচিত করিয়া সভাস্থলে গৌরবান্বিত করিয়াছিলেন । র্ত হার মনে আছে কি না- জানি না, কিন্তু এই স্থলে একটি ক্ষুদ্র পুবাতন ইতিহাস তাহাকে স্মরণ করাইয়া দিবার প্রলোভন আমি সংবরণ করিতে পারিতেছি না। আটাইশ বংসর পূর্বে র্তাহারই প্রকাশিত ‘নবজীবন পত্রিকায় বাঙ্গালী সাহিত্যে আমার হাতে খড়ি হইয়াছিল। আমার তখন পঠদ্দশ। ছাপার হরপে নিজেব রচনা প্রকাশিত দেখিবার প্রবল চাপল্য আমি দমন করিতে পার নাই , কিন্তু বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয়েব হস্ত মাসে মাসে যে পত্রিকার জন্য অলঙ্কার রচনা করিত, সেই পত্রিকায় নিজের মসী অঙ্কিত নাম জাহির করিতে চপল বালক যার পর নাই শঙ্ক। বোধ করিয়াছিল। ‘নবজীবনে । আমার প্রথম রচনা ও পরবর্তী আরও কয়টি রচনা আমি বেনামীতে পাঠাইয়। ছিলাম। আমার প্রথম রচনা ‘নবজীবনে’ বাহির হইয়াছিল বটে, কিন্তু প্রকাশের পর দেখিতে পাইলাম যে, ‘নবজীবনে’র সম্পাদক প্রবন্ধটিকে নিৰ্দ্দয়ভাবে কাটিয়া ছাটিয়া ক্ষতবিক্ষত করিয়া উহার স্ফীত কলেবর শীর্ণ করিয়া দিয়াছেন । মনে বুঝিলাম যে, সম্মুখে উপস্থিত থাকিলে আমার পৃষ্ঠদেশ নিশ্চিতই আমাৰ সাহিত্যগুরুর নিকট বেত্ৰাঘাতের যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইত। যাহা হউক, সেই হাতে খডির দিনে গুরু মহাশয় কত্ত্বক পরোক্ষপ্রেরিত বেত্ৰাঘাত আমার পরবর্তী সাহিত্যিক জীবনে সংযম সাধনায় সাহায্য করিয়াছে। সে দিনের সেই সংযমশিক্ষা না ঘটিলে, আমার পরবর্তী সাহিত্যিক জীবন উচ্ছৃঙ্খল হইতে পারিত, ইহা আমি প্রতিনিয়ত স্মরণ করিয়া থাকি। বঙ্গীয়-সাহিত্য-সম্মিলনের প্রথম অধিবেশনে তাহাকে উপস্থিত না দেখিয়া আমার হৃদয়ের বেদন মৎপঠিত প্ৰবন্ধমধ্যে ব্যক্ত করিতে আমি বাধ্য হইয়াছিলাম। আজি তিনি চট্টগ্রাম সম্মিলনে বঙ্গসাহিত্যের গুরুর আসনে সমাসীন হইয়া এক হস্তে বেত্রসঞ্চালন ও অন্য হস্তে অভয়মুদ্র প্রদর্শন করিবেন। আমি চিরানুগত শিষ্যরূপে তাহার অমুগমনের অবকাশ পাইলাম না। বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের ধ্বজবাহক কিঙ্কররূপে আমি এ পর্য্যন্ত বঙ্গীয়-সাহিত্য-সম্মিলনের পরিচর্য্যায় নিযুক্ত ছিলাম, বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের ধুরবহনকাৰ্য্য আমার অপেক্ষা সহস্রশ: যোগ্যতর ব্যক্তির বৃষস্কন্ধে আরোপন করিয়া আমি নিশ্চিন্ত আছি। সাহিত্য-পরিষদের অকৃত্রিম বন্ধু শ্ৰীযুক্ত হেমচন্দ্র দাসগুপ্ত মহাশয় পরিষদের পক্ষ হইতে সম্মিলনে উপস্থিত হইয়া পরিষদের প্রতি-সম্ভাষণ বিজ্ঞাপন করিবেন। সাহিত্য-সম্মিলনের সহিত সাহিত্য-পরিষদের প্রীতি-সম্পর্ক যাহাতে চিরস্থায়ী ও অক্ষুণ্ণ হয় এইরূপ আশ্বাস ও সাহস পাইয়াছি। আমি এবার সন্মিলনের পরিচর্য্যাকৰ্ম্মে অংশভাগী হইতে পারিলাম না ; তজ্জন্ত বিনীতভাবে