পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : রাষ্ট্র ও নেশন \రిశ్రీ\9, তথাপি জাৰ্মান নেশন জমাট বাধে মাই। ইহার অর্থ আলোচনার যোগ্য। প্রথমেই দেখা যায়, জাৰ্ম্মানির স্বনির্দিষ্ট সীমা নাই। উত্তরে ডেনমার্কের ও হলণ্ডের লো জার্মান। পশ্চিমে ফরাসী, দক্ষিণে হাঙ্গেরীয়ান ও তুর্কি, পূর্বে গ্লাব জাতি, এই বিভিন্ন ভাষী বিভিন্ন জাতির মধ্যে জাৰ্ম্মানের বাস। কোন উন্নত পৰ্ব্বতপ্রাচীর বা কোন সাগরশাখা ব্যবধান স্বরূপ হইয়া জাৰ্ম্মানের ভৌগোলিক সীমারেখার নির্দেশ করে নাই। জাৰ্ম্মান ঠিক জানে না, উত্তরে ও পশ্চিমে ও দক্ষিণে ও পূৰ্ব্বে কোথায় উহার বাসভূমির শেষ , কোন বেখা পার হইয়। সে পদার্পণ করিবে না। তাহার প্রতিবেশীবাও জানে না, কোন রেখা পার হইলে জাৰ্ম্মানের স্বদেশে অনধিকার প্রবেশ ঘটিবে। ফলে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জাতি জাৰ্ম্মানিকে পুনঃ পুনঃ আক্রমণ করিয়া ঐ দেশকে ইউরোপের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করিয়াছে। এই অবিরাম সংগ্রামের তুমুল কোলাহলে ইউরোপের মধ্য যুগের ইতিহাস মুখরিত হইয়া রহিয়াছে। নৈসৰ্গিক সীমাস্তরেখার অভাবে জাৰ্ম্মানও পুনঃ পুনঃ পররাষ্ট্র ও পরজাতিকে আক্রমণ করিয়াছে। শাস্তির অভাবে জাৰ্ম্মান জাতি জমাট বাধিতে অবসর পায় নাই । এই নৈসৰ্গিক কারণ ছাড়া আর একটা ঐতিহাসিক কারণ দেখা যায়। সেই কারণ অনুসন্ধানে রোম সাম্রাজ্যের পতনকালে যাইতে হয় ৷ রোম সাম্রাজ্যের পতনের সময় জাৰ্ম্মান জাতি বিবিধ কূলে বিভক্ত ছিল। এক একটা কুল রোম সাম্রাজ্যের এক একট প্রদেশ অধিকার করিয়া বসে। ফ্র্যাঙ্ক, গথ, লম্বার্ড প্রভৃতি কুলের নাম ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। এই সকল বিভিন্ন কুলের পবষ্পর সম্প্রীতি ছিল না। উহাদের পরস্পর বিরোধ জাৰ্ম্মান জাতির সংহতির পক্ষে এক কালে প্রধান অন্তরায় ছিল । কুলপতিগণের পরস্পর বিরোধ জাৰ্ম্মান জাতিকে বহুদিন সংহত হইতে দেয় নাই । কালক্রমে এই কুলগত বিরোধ লোপ পাইয়াছিল , কিন্তু আর একটা বিরোধ আসিয়া পড়ে। বোম সাম্রাজ্য ধ্বংস করিয়া কুলপতিগণ আপনাদের অনুগত অল্পচরগণকে ভূমি বণ্টন করিয়া দেন । এই অনুচরগণেব এক এক জন এক এক বিস্তীর্ণ প্রদেশের ভূস্বামী ও সৰ্ব্বময় কৰ্ত্ত হইয় উঠেন। রেমি সাম্রাজ্য পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হইলে সম্রাট পদবা একটা কুলবিশেষে ও বংশবিশেষে আবদ্ধ হইয় পড়ে। কিন্তু সম্রাট স্বয়ং প্রাদেশিক পরাক্রান্ত ভূস্বামীগণের একান্ত অধীন হইয়া পড়েন। এইরূপে ইউরোপের ফিউড়াল তন্ত্রের উৎপত্তি হয়। জাৰ্ম্মানরাজ রোমক সম্রাট, নামে সমগ্র খ্ৰীষ্টীয় জগতের অধিপতি ছিলেন। কিন্তু কাজে এই সকল খণ্ড রাষ্ট্রের অধিপতি পরাক্রান্ত সামন্তবর্গের অধ্যক্ষ ছিলেন মাত্র। খণ্ড রাষ্ট্রগুলি চিরদিন ধরিয়া পরস্পর বিবীAকরিত , সম্রাট, সেই বিবাদ নিবারণে একান্ত অসমর্থ ছিলেন। কালক্রমে ধৰ্ম্মগত বিবাদ এই রাষ্ট্রগত বিবাদের সহিত যুক্ত হইয়া আগুন আরও জালাইয়া তুলে । প্রোটেষ্টান্ট ও ক্যাথলিক জাৰ্ম্মান রাষ্ট্রপতিগণ বিকট ধৰ্ম্মযুদ্ধে প্রবৃত্ত হন। সেই অগ্নিকাণ্ডে জার্মান রাষ্ট্রতন্ত্র এক কালে ভস্মভূপে পরিণত হইবার উপক্রম হইয়াছিল। রোমক সম্রাটের পদবী কালক্রমে হাক্সবর্গ বংশে আবদ্ধ হইল ; হাকূলবর্গ বংশধরগণ বহুদিন ধরিয়া সমগ্র গ্রীষ্টীয় জগৎকে রোম সম্রাটের শাসনাধীন রাখিবার