পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

«ՉԱ) রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র আঘাতের সংখ্যা যত বাড়ে, ধ্বনি ততই উচুতে-কড়িতে উঠে, আর সংখ্যা ৰত কমে, ততই কোমল হয়। বঁাশীর ভিতর যে ঢেউগুলি জন্মে, উহারা কোথাও কোন বাধা না পাইয়া বাহিরে আসে ও বাহিরের বায়ুবtশতে সংক্রান্ত হয়। যত ক্ষণ ব্যাপিয়া এই ঢেউগুলি আটক না পাইয়া বাহিরে আসিতে থাকে, তত ক্ষণ ব্যাপিয়া আমরা বংশীধ্বনি শুনিতে পাই । তানপুরার তারে ঘা দিলেও ঐরূপ হয়। তারটা যত ক্ষণ কাপে, চারিদিকের বায়ুরাশিতে তত ক্ষণ ধাক্কার পর ধাক্কা লাগয়া ঢেউ জন্মে ও তত ক্ষণ ধরিয়া আমরা ধ্বনি শুনিতে পাই। লম্বা তারে সেকেণ্ডে যতগুলি ঢেউ জন্মায়, খাট তারে তার চেয়ে অধিক জন্মায় । তস্থা যত লম্বা হয়, ধ্বনি ততই নাচে নামে বা কোমল হয়। এই সকল ধ্বনি মধুর ধ্বনি ; মধুর বলিয়াই বাণী আর তন্ত্রী সঙ্গীতের যন্ত্রগঠনে ব্যবহৃত হয় । ধ্বনির সঙ্গে ধ্বনি মিশয় স্বরমাধুর্য্যের উৎকর্ষ সাধন করে। লম্বা তারে ঘা দলে গোট তারটাই কাপে , আবার গোট। তারটা আপনাকে দুই, তিন, চারি বা ততোধিক সমান ভাগে ভাগ করিয়া লইয়া এক এক ভাগ পৃথকৃ ভাবে কাপে । এক এক ভাগের কম্পে এক এক রকম ধ্বনি বাহির হয়। দুই হাত লম্ব ভাগে যে ধ্বনি বাহির হয়, এক হাত লম্বা ভাগ হইতে তার চেয়ে উচু, আধ হাত লম্বা ভাগ হইতে আরও উচু ধ্বনি বাহর হয়। এই ধ্বনি সকল একত্র মিশিয়া ধ্বনির মাধুৰ্য্যের চতরবিশেষ জন্মায় । বাশীর ভিতরে আবদ্ধ বাতাসেও ঐরূপ ঘটে । সমস্ত বাতাসটা কাপে , আবার ঐ বাতাস আপনাকে দুই তিন চারি সমান স্তরে ভাগ কবিয়া লইয়া এক এক ভাগ আপন আপন ধ্বনি জন্মাইয়া কাপে । ইহার মধ্যে কোন ধ্বনি কোমল, অন্যটা তার চেয়ে তীব্র , কোমলে ত ত্রে মিশ্রিত হইয়া ধ্বনির মাধুর্য্য বাড়াইয়া দেয়, অথবা ধ্বনির প্রকৃতি বদলাইয়া দেয়। টেবলের উপর কাঠে ঠকৃ কবিয়া ঠোকর দিলে কাঠখানা র্কাপয় উঠে , কাঠফলকটা আপনাকে নানা ভাবে ভাগ করিয়। লয় ও প্রত্যেক ভাগ আপন আপন ধ্বনি উৎপাদন করিয়৷ কাপিতে থাকে । কিন্তু বঁাশীর ভিতরের বাতাস বা তন্ত্রীযন্ত্রের তার যেমন আপনাকে সমান সমান ভাগ করিয়া লয়, কাষ্টফলক তেমন করিয়| বিভক্ত হয় না। উহার ভাগগুলি এলোমেলো অনিয়ত হইয়া পড়ে এবং ঐ সকল ভাগ হইতে যে সকল ধৰন জন্মে, তাহারা একযোগে এমন একটা কর্কশ ধ্বনি উৎপাদন করে, যাহা কৰ্ণপীড়া জন্মায়। কাঠের ঠকৃঠকান কাহারও মিষ্ট লাগে না । স্বখের বিষয় যে, উহার গ্লিভিকাল অল্প। ঠক্‌ করিয়া ঠোকর দিবা মাত্র কাঠখানা এখানে ওখানে সেখানে কঁপিয়া উঠে এবং ক্ষণেকের মধ্যে থামিয়া যায় । তাই কর্ণপীড়াটাও অধিকক্ষণ স্থায়ী হয় না। পিতলের ঘডিতে হাতুডির আঘাত দিলে ঢং করিয়া শব্দ হয়। ঐ চং" শবের চ'টুকুতে কোন মাধুর্য্য নাই। কঠিন ধাতুফলকে কাঠের হাতুড়ির আঘাতে যে এলোমেলো কাপুনি ক্ষণেকের মত জন্মে, এই কর্ণজালাকর চ'-টা তাহারই ফল। তবে এই এলোমেলে। জঞ্জমিত কম্প থাময় গেলে ধাতুফলকটা আরও কিছুক্ষণ ধরিয়া বেশ নিয়মিত ভাবে কঁাপিতে থাকে ; তখন ঢং-এর 'ট'-টুকু চলিয়া গিয়াছে, উহার