পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা ; মাতৃমন্দির 88\5 আমরা সকলে মিলিয়া একটা উচ্চ লক্ষ্য, একটা মহৎ আদর্শ সম্মুখে রাখিয়া স্ব স্ব নির্দিষ্ট পথে অগ্রসর হইতে পারি। বর্তমান কালে দেশে যে হাওয়া বহিতেছে, তাহাতে দেশের লোককে দল বাধিয়া সমবেত শক্তি প্রয়োগে কোন লক্ষ্যের দিকে অগ্রসব হইতে বলিতেছে, তাহাই যথাসাধ্য বিবৃত করিবার জন্য আমি চেষ্টা করিয়াছি। যে মায়ের পূজা করিব বলিয়। বাঙ্গালী আজ ব্যগ্র হইয়া উঠিয়াছে, আমরা সাহিত্যসেবী, আমরাও সামর্থ্য অনুসাবে সেই মায়ের পূজা করিতে প্রবৃত্ত হইব । আজ যিনি সভাপতির আসন গ্রহণ করিয়াছেন, তিনি আমার অপেক্ষা স্পষ্টতর ভাষায় পুনঃ পুনঃ আপনাদিগকে সেই কৰ্ম্মের জন্য আহবান করিয়াছেন । “একবার তোরা “মা বলিয়৷ ডাক” এই উদ্দীপনাময় কাতর আহবান, তাহার কণ্ঠ হইতে ইতঃপূর্বে মুহুমুহুঃ নিঃস্থত হইয়াছে । “আমিবা এসেছি আজি মাযেব ডাকে” বলিয়। তিনি যখন বীণার তাবে আঘাত কবিয়াছেন, তখন আমাদের শিরায় শিরায় রক্তধার বেগে বহিযাছে । “আগে চল, আগে চল ভাই" বলিয়া তিনি যখন আমাদিগকে পুরোগমনে উৎসাহিত করিয়াছেন, তখন অনেকেবই পদু চরণ লম্ফ প্রদানের উদ্যোগ করিয়াছে , মর। গাঙ্গে বান দেখিয়া যখন তিনি জয় ম। ব’লে তরী ভাসাইতে বলিয়াছেন, তখন তকী ভাসাইব কি, গঙ্গাগর্ভে ঝাপিয়৷ পডিতে অনেকের প্রবৃত্তি হইয়াছে। তাহার নেতৃত্বে এই সাহিত্য-সম্মিলন যদি আপনাব লক্ষ্য স্থির করিয়া লইতে পারে, তাহ হইলে সাহিত্য-সম্মিলন যদি আপনার লক্ষ্য স্থির করিয়া লইতে পাবে, তাহা হইলে সাহিত্য সম্মিলনেব এই দুই দিনের পরিশ্রম নিতান্ত বিফল হইবে না। কিন্তু আমরা সাহিত্যসেবী, আমরা কিরূপে সেই মায়ের অর্চনা করিব ? আমর। যে মায়ের কোলে অবস্থান করিয়া তাহার স্তন্যপানে বদ্ধিত হইয়াছি, সেই মাকে আমরা ভাল করিয়া চিনিয়াছি, তাহা বলিতে পাবি না। ধে দিন আমরা মাকে চিনিতে পারিব, সে দিন আমাদের সাধনা পূর্ণ হইবে । কিন্তু এখনও আমাদের সাধনা আরম্ভ হয় নাই ; আমর। মাকে চিনিতে এ পর্য্যন্ত সম্যকৃ চেষ্টাই করি নাই । চিনিবার চেষ্টাই আমাদের বর্তমান কালের অর্চনা । এবং আমর। সাহিত্য-সম্মিলনে উপস্থিত হইয়া যদি সেই চিনিবার উপায় বিধান কবিয়া যাইতে পারি, তাহ হইলেক্ট সাহিত্য-সম্মিলন সফল মনে করিব । আহলাদের বিষয়, এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে মতভেদের বড় সম্ভাবন নাই । এই সাহিত্য-সম্মিলনে বঙ্গের ভিন্ন ভিন্ন স্থানের সাহিত্যসেবক কর্তৃক যে সকল প্রস্তাব উত্থাপিত হইবে, জননীর পরিচয় লাভই সে সকলের মুখ্য উদ্দেশ্য। প্রস্তাবগুলি আপনাদের সম্মুখে স্থাপিত হইলেই আপনারা তাহ বুঝিতে পারিবেন। একটি কথা আপনাদিগকে নিবেদন করিয়া রাখিতে চাহি যে, আজিকার সভায় যে সকল প্রস্তাব উপস্থিত হইবে, সেই সকল প্রস্তাবের অনুযায়ী কাজ ইহার মধ্যেই কিছু কিছু আরব্ধ হইয়াছে। আপনার বোধ হয় জানেন, বঙ্গীয়-সাহিত্য-. পরিষদ নামে একটি ক্ষুদ্র সাহিত্য-সভা আজ চতুর্দশ বৎসর ধরিয়া বাঙ্গলার প্রাচীন সাহিত্য, বাঙ্গলার পুরাতত্ত্ব প্রভৃতির উদ্ধারের জন্য নিযুক্ত আছেন। অল্প অর্থবল এবং অল্পতর লোকবল লইয়া সাহিত্য-পরিষদ যতটুকু সফলতা লাভ করিয়াছেন.