পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা ; মাতৃমন্দির 886: থাকিবে । বিদ্যাসাগরের পাদুকার নিকটে বঙ্কিমচন্দ্রের লেখনী শোভা পাইবে । আর এক স্থানে বাঙ্গলার পুরাতত্ত্বের উপাদান সংগৃহীত হইবে। বাঙ্গলার যেখানে যে তাম্রশাসন বাহির হয়, যেখানে যে মুদ্রা পাওয়া যায়, তাহ সেই স্থানে সজ্জিত হইবে। পাষাণের উপর বা ইষ্টকের উপর উৎকীর্ণ লিপিসমূহের প্রতিলিপি স্বরক্ষিত হইবে। বঙ্গের পরিত্যক্ত রাজধানীসমূহের ভগ্নাবশেষের ছায়াচিত্র উহাদের পূৰ্ব্বগৌরব স্মরণ করাইবে। বাঙ্গলার যে যে স্থান বিরাট রাজার নামের সহিত জডিত আছে, চাদ সদাগরের বা বেহুলা ঠাকুরাণীর স্মৃতির সহিত মিশিয়া আছে, সেই সকল স্থানের চিত্র আমরা সেখানে বসিয়া দেখিতে পাইব । প্রাচীন দুর্গ, দেবমন্দির ও অট্টালিকাদি দর্শনীয় সেখানে যে কিছু আছে, তাহার চিত্রও আমব সেইখানে দেখিব। প্রতাপাদিত্যের বাড়ীর ভাঙ্গ কলসী হইতে পলাশীর লড়াইয়ের গোল পর্য্যন্ত সংগৃহীত দেখিব । আর এক স্থানে বাঙ্গলার কৰ্ম্মবীরদের স্মৃতিচিহ্নের সংগ্রহ থাকিবে। প্রতাপাদিত্য ও সীতাবাম হইতে রামগোপাল ঘোষ ও কৃষ্ণদাস পাল পর্য্যন্ত সকলেরই কোন না কোন নিদর্শন দেখিয় আমরা পুলকিত হইব। কর্মীদের পাশ্বে পণ্ডিতদের স্থান থাকিবে। স্মাৰ্ত্ত ভট্টাচার্য্য ও তাকিকশিরোমণি হইতে জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন ও তারানাথ তর্কপঞ্চানন ও তারানাথ তর্কবাচস্পতি পর্য্যন্ত পণ্ডিতগণের বংশলতা ও জীবনচরিত সংগৃহীত হইবে। র্তাহাদের বচিত গ্রন্থাবলী সংগৃহীত হইয়া তাহাদের পাণ্ডিত্যের পরিচয় দিবে। বঙ্গলার বিখ্যাত জমিদাববংশের ইতিবৃত্ত আমরা সেখানে জানিতে পারিব। বাঙ্গলার ফুল-ফল, লতা-পাত, গাছ-পালা, জীবজন্তু, শিল্পসম্ভারের নমুনা দেখিয়া আমর বঙ্গভূমিকে চিনিয়া লইব । দৃষ্টান্তবাহুল্যের আর প্রয়োজন নাই। এই মন্দিরকেই আমি মাতৃমন্দির নাম দিতে পারি ও এই মন্দিবমধ্যে সংগৃহীত দ্রব্যসস্তারকে আমি মাতৃপ্রতিমা নাম দিতে পারি। সাহিত্য-পরিষদের এই আশার কথা ও আকাঙ্ক্ষার কথা আমি বহু আশা বুকে বাধিয়া সাহিত্য-সম্মিলনের সম্মুখে স্থাপন করিতে সাহসী হইয়াছি। আশা করি, আপনারা ইহার অমুমোদন করিবেন। আমাদের প্রত্যেকের শক্তি সঙ্কীর্ণ ও সীমাবদ্ধ ; কিন্তু “অল্পানামপি বস্তুনাং সংহতিঃ” যখন কাৰ্য্যসাধিক হয়, তখন আপনাদের শক্তিসমষ্টির পক্ষে এই প্রতিমা প্রতিষ্ঠ অসাধ্য না হইতেও পারে। এই মন্দির গঠনে প্রভূত লোকবল ও প্রভূত ধনবল আবশ্বক। বাঙ্গলার সাহিত্যসেবীরা লোকবল যোগাইতে পারেন ; কিন্তু ধনবল তাহাদের নাই। ধনবলের জন্য আমাদিগকে বাঙ্গলার ধনীদিগের দ্বারস্থ হইতে হইবে । আজিকার দিনে যখন বাঙ্গলার ধনী দরিদ্র সকলেই মায়ের ডাকে সাড়া দিতেছেন, তখন মায়ের কাজের জন্য ভিক্ষাভীও হাতে লইয়া ধনীর দ্বারস্থ হইলে আমাদিগকে বিমুখ হইতে হইবে না, এই আশা করি। বঙ্গের ধনিগণ ধনের কিয়দংশ এইরূপে মাতৃপূজায় নিয়োগ করিয়া তাহাদের ধনবত্ত সার্থক করুন, এক্ট প্রার্থনা । র্যাহাব উদযোগে ও আহানে আজ আমরা এই ইতিহাসপ্রসিদ্ধ কাশীমবাজার নগরে উপস্থিত হইয়াছি, বল বাহুল্য, এই কার্য্যের সফলতার জন্ত মুখ্যতঃ