পাতা:রামের রাজ্যাভিষেক.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ፃ8 রামের রাজ্যাভিষেক । প্রকাশ করিবে। হা সতি সীতে ! তোমার অদৃষ্টে কি এই ছিল । বৎস ! যদি একান্তই মহারাজের আজ্ঞা অবহেলন না কর ; যদি একান্তই তোমার চিরদুঃখিনী জননীকে শোক-সাগরে পরিক্ষিপ্ত কর ; তবে একবার ঐ চাদমুখে মা বলিয়া ডাক, শুনিয়া আমার কর্ণকুহুর পরিতৃপ্ত হউক। অনেক দিন আর তোমার ঐ চাদমুখের মধুমাখা কথা শুনিতে পাইব না। এই বলিতে বলতে অন্তৰ্ব্বাস্পভরে র্তাহার কণ্ঠরোধ হইয়া আসিল । তখন আর কিছু বলিতে না পারিয়া, শিরে করাঘাতপুৰ্ব্বক রোদন করিতে লাগিলেন । তদনন্তর, রাম অতিকষ্টে মাতার নিকট হইতে বিদায় গ্রহণ করিয়া, সুমিত্রাজননীকে অভিবাদনপুৰ্ব্বক, জনকভবনে গমন করিলেন, এবং দারুণশোকবিহ্বল পিতার পাদপদ্ম বন্দনা করিয়া, সীতা ও লক্ষ্মণ সমভিব্যাহারে পুরদ্বারে আসিয়া উপস্থিত হইলেন । আহা ! তৎকালে তাহদের সে ভাব দর্শন করিলে,পাষাণও দ্রবীভূত হয়, বজেরও হৃদয় বিদীর্ণ হয়। যিনি আজি, রাজসিংহাসনে অধিরোহণ করিয়া রাজশব্দে আহূত হইবেন, তিনি কি না এখন অম্বুজের সহিত অনাথের ন্যায় বনগমন করিতেছেন । যিনি রাজর্ষি জনকের কন্যা, রাজাধিরাজ দশরথের পুত্রবধূ, এবং রঘুকুলতিলক রামচন্দ্রের ভাৰ্য্য, যিনি ভূতলে কখন পাদবিক্ষেপ করেন নাই, খেচর বিহঙ্গমগণও যাহাকে কখন দেখিতে পায় নাই, সেই অস্থৰ্য্যম্পশ্যরূপ। কামিনী, এক্ষণে রাজভোগবাসনা বিসর্জন দিয়া, বনেচরবধুর ন্যায় বনে বনে বিচুরণ করিবার নিমিত্ত,পতির সহ চারিণী হইতেছেন। ইহা দেখিয়া পুরবাসিগণ শোকে অধীর হইয়া, হাছাকার শব্দে রোদন করিতে লাগিল । কেহ যে কাহাকে সান্তন করিবে, এমন লোক প্রায়ই রহিল না।